সৌদি ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগান-পাকিস্তান সংঘর্ষ স্থগিত: আফগান মুখপাত্র
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৮:১১ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে অবশেষে বিরতি এসেছে। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতার ও সৌদি আরবের উদ্যোগে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান কর্তৃপক্ষ।
রবিবার, ১২ অক্টোবর, কাবুলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, “কাতার এবং সৌদি আরব উভয়ই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত যুদ্ধ বন্ধ করে সেটি মেনে নিয়েছে।” তবে তিনি সতর্ক করেন, আফগান ভূখণ্ডে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যদি আগ্রাসন অব্যাহত থাকে, তাহলে তার জবাব দেওয়ার অধিকার আফগানিস্তান সংরক্ষণ করে।
মুজাহিদ আরও বলেন, “আজ সকালে আমরা খবর পেয়েছি, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আক্রমণ চালানো হয়েছে। যদি এই আক্রমণ অব্যাহত থাকে, তাহলে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষা করার অধিকার সংরক্ষণ করে।”
সংঘর্ষ বন্ধের পেছনে শুধু কাতার ও সৌদি আরব নয়, ইরানসহ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক উদ্যোগও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই দেশগুলো কাবুল ও ইসলামাবাদকে সংযম দেখানোর পাশাপাশি আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “মন্ত্রণালয় উভয় পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য উত্তেজনা কমাতে এবং উত্তেজনা এড়াতে সাহায্য করে - এমনভাবে পার্থক্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে।”
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার আশেপাশের পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দুই প্রতিবেশী ও মুসলিম দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে যে কোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”
পরিস্থিতি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত। তার মতে, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধ অব্যাহত রাখা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমাধানটি পাকিস্তানে আফগান দূতাবাস এবং আফগানিস্তানে পাকিস্তানি দূতাবাসের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের মধ্যে নিহিত।”
এই অস্থির সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান মুসলিম শক্তিগুলোর এই সংযত ও কূটনৈতিক ভূমিকা দুই প্রতিবেশী দেশের জন্য একটি সম্ভাব্য শান্তির পথ উন্মোচন করেছে, যদিও পরিস্থিতি এখনো নাজুক এবং নজরদারির প্রয়োজন রয়ে গেছে।