তুরস্কের প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র 'তাইফুন ব্লক-৪' উন্মোচিত


তুরস্কের প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র 'তাইফুন ব্লক-৪' উন্মোচিত

তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতে নতুন চমক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে 'তাইফুন ব্লক-৪' নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। বুধবার ইস্তানবুলে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনী আইডিইএফ ২০২৫-এ এই ক্ষেপণাস্ত্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সূত্র অনুযায়ী, এটি দেশটির তৈরি প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। খবর দিয়েছে সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।

তুরস্কের প্রতিরক্ষা খাতে অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান রোকেটসান এক বিবৃতিতে জানায়, ‘তাইফুন ব্লক-৪’ হচ্ছে মূল ‘তাইফুন’ ক্ষেপণাস্ত্রের হাইপারসনিক সংস্করণ, এবং এটি একটি দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।

রোকেটসান আরও জানিয়েছে, সাত টনেরও বেশি ওজনের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি বিভিন্ন ধরনের ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এটি শত্রুপক্ষের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, সামরিক হ্যাঙ্গার এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসে ব্যবহার করা যাবে।

প্রদর্শনীতে আরও তুলে ধরা হয় সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য 'আকাটা' সংস্করণ, যা বর্তমানে আতমাকা নৌবাহিনীর ব্যবহৃত জাহাজ-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্রের একটি রূপ। এই সংস্করণের সর্বোচ্চ পাল্লা ২৫০ কিলোমিটার বা প্রায় ১৫৫ মাইল।

রোকেটসান জানায়, ‘আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত আকাটা ২৫০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লাসম্পন্ন এবং এতে রয়েছে একটি উচ্চ-বিস্ফোরক ফ্র্যাগমেন্টেশন ওয়ারহেড, যা ব্লু হোমল্যান্ডের প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করবে।’

প্রদর্শনীতে আরও জায়গা করে নেয় গোকবোরা নামের একটি ভিজ্যুয়াল রেঞ্জের বাইরের এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা ১০০ নটিক্যাল মাইলের (প্রায় ১১৫ মাইল) বেশি। এটি মানবচালিত ও ড্রোনভিত্তিক যুদ্ধ প্ল্যাটফর্ম থেকে শত্রু লক্ষ্যবস্তুর ওপর প্রয়োগ করা যাবে।

এছাড়া প্রদর্শিত হয় ‘এরেন’ নামের একটি উচ্চ-গতিসম্পন্ন লোটারিং যুদ্ধাস্ত্র, যা সশস্ত্র ড্রোন, হেলিকপ্টার, স্থলযান, স্থল-নির্ভর অস্ত্র ব্যবস্থা এবং নৌ বাহিনীর প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণ করা সম্ভব। এটি ধীরগতির আকাশযান, সাঁজোয়া যান, নিরস্ত্র স্থল লক্ষ্যবস্তু ও শত্রু সৈন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের উপযোগী।

এটি তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য আরেকটি রেকর্ড স্থাপন করেছে। ৭ টনেরও বেশি ওজনের তাইফুনের এই নতুন সংস্করণের বহুমুখী ওয়ারহেডসহ কিলোমিটার দূর থেকে অসংখ্য কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু। যেমন : বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, সামরিক হ্যাঙ্গার এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম। আকাতা ক্যাপসুলসহ আটমাকা ক্ষেপণাস্ত্রটি বর্তমানে তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনীর তালিকাভুক্ত আটমাকা জাহাজ-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্রের সাবমেরিন-লঞ্চ করা সংস্করণ, যার পাল্লা ২৫০ কিলোমিটার (১৫৫ মাইল)।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত, আকাটা ২৫০ কিলোমিটারেরও বেশি পাল্লা এবং একটি উচ্চ-বিস্ফোরক ফ্র্যাগমেন্টেশন ওয়ারহেড দিয়ে ব্লু হোমল্যান্ডের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে। গোকবোরা ভিজ্যুয়াল রেঞ্জের বাইরে এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১০০ নটিক্যাল মাইল (১১৫ মাইল) এর বেশি এবং এটি মানবজাত এবং মনুষ্যবিহীন যুদ্ধ বিমান প্ল্যাটফর্মে শত্রু লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। উচ্চগতির বহুমুখী লোটারিং যুদ্ধাস্ত্র, এরেন, সশস্ত্র ইউএভি, হেলিকপ্টার, স্থল যানবাহন, স্থলভিত্তিক সিস্টেম এবং নৌ প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণ করে কম গতির বায়ুবাহিত ইউনিট, সাঁজোয়া এবং নিরস্ত্র স্থল লক্ষ্যবস্তু এবং কর্মী-বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×