ভারতে বাংলাভাষী মুসলিমদের আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:০৩ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৫

দিল্লির নিকটবর্তী হরিয়ানার গুরুগ্রাম শহরে পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ছয় মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, পুলিশ তাদের বাংলাদেশি ভেবে ধরে নিয়ে গেছে।
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ছয়জন মুসলমান শ্রমিককে সন্দেহজনকভাবে আটক করে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। এই শ্রমিকদের সবাই মালদা জেলার বাসিন্দা এবং দীর্ঘ প্রায় সাত-আট বছর ধরে তারা গুরুগ্রামে ভাসমান শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠন।
শ্রমিক সংগঠন ‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক জানিয়েছেন, “পুলিশ আমার কাছে মেনে নিয়েছে যে ওই ছয়জনকে তারা আটক করেছে। আমি রোববার বাদশাহপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনারকে ফোন করেছিলাম। তিনি অবশ্য এটাও বলেছেন যে ওদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
এ বিষয়ে মালদা জেলার যুগ্ম শ্রম কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনাটি সামনে আসে এমন এক সময়ে, যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষদের হয়রানির বিরুদ্ধে সরব হন। সোমবার কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের এক রাজনৈতিক সভায় তিনি অভিযোগ করেন, শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে অনেককেই বাংলাদেশি ভেবে হয়রানি করা হচ্ছে।
মমতা বলেন, “বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস চলছে কেন? বাংলার মানুষকে যদি বাংলা বলার জন্য বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়, এই লড়াই কিন্তু দিল্লিতে হবে। আমি কিন্তু ছাড়ার লোক নই। মনে আছে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কথা? দরকারে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের অনেক নাগরিককে অন্য রাজ্যে আটক করে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
গত কয়েক মাসে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িশার মতো রাজ্যগুলোতে বহু বাংলাভাষীকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করা হয়েছে, যদিও তারা প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করছে।
এছাড়া এমন কিছু ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে ভারতে আটক কিছু ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয় এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের আবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।
তবে এর পাশাপাশি এমন লোকজনও ধরা পড়েছে, যারা বাস্তবেই বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে বসবাস করছিলেন, এবং তাদেরকে আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা