ট্রান্সজেন্ডার ছদ্মবেশে ২৮ বছর ভারতে ‘বাংলাদেশি যুবক’, দাবি পুলিশের
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:৩০ পিএম, ২০ জুলাই ২০২৫

ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক ব্যক্তি প্রায় তিন দশক ধরে ট্রান্সজেন্ডার ছদ্মবেশে বসবাস করছিলেন বলে দাবি করেছে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক, যদিও এই পরিচয় নিশ্চিত করার মতো কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি এবং বাংলাদেশের কোনো সরকারি মন্তব্যও এতে উল্লেখ করা হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের প্রকৃত নাম আবুল কালাম। তিনি বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে ‘নেহা’ নামে পরিচিত এবং সেখানে গত আট বছর ধরে বসবাস করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারতে 'অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের' বিরুদ্ধে চালানো বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ভোপাল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবুল কালাম মাত্র ১০ বছর বয়সে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। প্রথমে প্রায় দুই দশক মুম্বাইয়ে কাটানোর পর তিনি ভোপালে চলে যান। সন্দেহ এড়াতে সেখানে ‘নেহা’ নাম ধারণ করে ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন।
পুলিশ জানায়, আবুল কালাম ভারতীয় নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে আধার কার্ড, ভোটার আইডি, এমনকি পাসপোর্টসহ একাধিক সরকারি নথি তৈরি করেছিলেন। এসব নথি ব্যবহার করে তিনি আন্তর্জাতিক ভ্রমণও করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ভোপালের তালাইয়া থানায় ৩০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, তিনি ‘নেহা কিন্নর’ নামে বুধওয়ারা এলাকায় পরিচিত ছিলেন এবং বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
পুলিশ জানায়, তার কাছ থেকে বেশ কিছু জাল নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব নথি কোথা থেকে তৈরি করা হয়েছিল, এর পেছনে কোনও সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র সক্রিয় কিনা, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিট তার মোবাইল ফোনের কল হিস্ট্রি, বার্তা ও অন্যান্য ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণ করছে।
ভোপালের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা শালিনী দীক্ষি বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর ওই যুবকের পরিচয় যাচাই করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর, সে কারণে অভিযান চলাকালীন সমস্ত তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।”
তদন্তকারীরা বর্তমানে খতিয়ে দেখছেন, ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে তার পরিচয় আসল না কি সেটিও ছিল প্রতারণার অংশ। এ জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি, জি নিউজ, ইন্ডিয়া টুডে, হিন্দুস্তান টাইমস