বিশ্বের শীর্ষ ৫০ নারী নেত্রীর তালিকায় জবি শিক্ষার্থী শিফা
- শিক্ষা ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৪৮ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী সাবিতা বিনতে আজাদ শিফা বিশ্বের শীর্ষ ৫০ নারী নেত্রীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পারমাণবিক শক্তি প্রতিষ্ঠান ‘রোসাটম’-এর অধীন ‘অবনিন্সক টেক একাডেমি’ তাকে ‘ভিজিবল পাওয়ার ফিমেল লিডারশিপ’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত করেছে।
সারা বিশ্বের প্রার্থীদের মধ্যে কয়েক ধাপের কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিফাকে নির্বাচিত করা হয়। তার পেশাগত অভিজ্ঞতা, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, অর্জিত পুরস্কার ও গবেষণাকর্মকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হয়েছে।
নির্বাচিত ৫০ নারী নেত্রী রাশিয়ার ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাটমিক উইক’ ও আন্তর্জাতিক নারী নেতৃত্ব কর্মশালা ‘ফিমেল লিডারশিপ ক্যাম্প’-এ অংশ নেবেন। এই ক্যাম্পে পারমাণবিক শিল্পের ৮০ বছরের সাফল্য উদযাপন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন।
শিফার আগেও রাশিয়ায় একাধিক সম্মেলন ও সামিটে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতের মেঘালয়ের নর্থ-ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটিতে গবেষণামূলক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া তিনি ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (UITS)-এ প্রভাষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিফা ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে গ্রান্ট অ্যাকুইজিশন ম্যানেজমেন্ট লিড প্রগ্রাম অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি তরুণদের সফট স্কিল ও যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছেন এবং ‘ভিলেজ ইমপাওয়ারমেন্ট’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে তিনি নিজেই সিইও।
সাবিতা বিনতে আজাদ শিফার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে। তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, যিনি দুইবার জাতিসংঘের স্কলারশিপ পেয়ে মস্কোর পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন, এবং মা সোহরাত বেগম গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন।
শিফা আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও ফোরামে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সোচিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভালে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ তরুণ-তরুণীর সঙ্গে যোগ দেন। ২০২৪ সালের মে মাসে মস্কোতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস কমিটিতে বাংলাদেশের হেড হিসেবে নেতৃত্ব দেন। একই বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার ওরেনবুর্গে অনুষ্ঠিত ইউরেশিয়া গ্লোবালে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৯-২০ সালে তিনি টোস্টমাস্টার্স ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব পাবলিক স্পিকিংয়ে বাংলাদেশ থেকে ইন্টারন্যাশনাল স্পিচ কনটেস্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এ ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ এবং প্রথম অ্যাডভান্সড টোস্টমাস্টার্স ক্লাবের নারী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে দুটি ক্লাবের কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন এবং ভারত ও নেপালে আন্তর্জাতিক বক্তা হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন।
বর্তমানে শিফা রাশিয়ার ‘ডাইরেক্টোরেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভাল’-এর প্রতিনিধি হিসেবে ‘ন্যাশনাল প্রিপারেটরি কমিটি অব বাংলাদেশ’-এর শিশু কমিটির প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ২০২৭ সালের মধ্যে ‘ভিলেজ ইমপাওয়ারমেন্ট’ কর্মসূচির মাধ্যমে এক লাখ শিশুকে কমিউনিকেশন, প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিংয়ে পারদর্শী করে গড়ে তোলা তার লক্ষ্য।