ব্র্যাক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীদের মানববন্ধন

ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত ২ হাজার ৬৬৮ জন কর্মকর্তার চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় রাজধানীর বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা দাবি করেন, ব্যাংকের স্বেচ্ছাচারী নীতির কারণে তাদের অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০২১-২০২৩ সালের মধ্যে ২ হাজার ৫৫৩ জন কর্মী পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ বলে উল্লেখ করেছে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছাচারীভাবে এসব কর্মীকে চাকরি থেকে বাদ দিয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পুনর্বহালের নির্দেশ দিলেও গত ১৬ মাসেও তা কার্যকর হয়নি।’ ব্র্যাক ব্যাংকের বনানী শাখার সাবেক কর্মকর্তা ফয়সাল বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংকের স্লোগান হলো ‘আস্থা অবিচল’। কিন্তু বাস্তবে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখছি। পুনর্বহালের ফাইল বাংলাদেশ ব্যাংকে আটকে আছে, আমরা পাঁচ বার চিঠি দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এখন আমরা পাঠাও চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি।’ ভুক্তভোগীদের দাবিগুলো হল চাকরিচ্যুত কর্মীদের অবিলম্বে পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ প্রদান; ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; ভবিষ্যতে এ ধরনের অন্যায় প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া প্রবর্তন ইত্যাদি। মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যকর ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন।

লকার খুলতে দুদকের আট সদস্যের টিম ঢুকল বাংলাদেশ ব্যাংকে

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় সুরক্ষিত লকার বা সেফ ডিপোজিটর খুলতে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লকার খুলতে দুদকের আট সদস্যের টিম বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করেছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্ব ওই টিম কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করে। এসব লকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ৩০০ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অর্থসম্পদ ও অন্য মূল্যবান নথিপত্র সেফ ডিপোজিট আকারে রেখেছেন বলে তথ্য পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার নামেও লকার রয়েছে। ওই সব লকারেই দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদ বা সেগুলোর নথিপত্র রক্ষিত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লকার খোলা হবে। একই সঙ্গে রক্ষিত অর্থসম্পদ বা নথিপত্রের তালিকা করা হবে। জ্ঞাতআয়বহির্ভূত বা আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো সম্পদ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে পরবর্তী তদন্ত করা হবে। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের লকারে তল্লাশি করে প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে। যেগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। ওই অভিযানের সময় দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নামে আরও কিছু লকার দেখতে পায়। এর মধ্যে যাদের নামে বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে তাদের নামেও লকার থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে দুদক ওই সব লকারেও তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আলোকে গেল ২ ফেব্রুয়ারি দুদক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়ে কেউ যাতে ওই সব লকার খুলতে না পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল শাখার লকার আর কাউকে খুলতে দেওয়া হচ্ছে না।

চলতি বছরে উৎপাদনে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল

সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে যমুনা নদীর তীরে গড়ে উঠছে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল। বেসরকারি পর্যায়ে দেশের বৃহত্তম এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রটি চলতি বছরের শুরুতেই পণ্য উৎপাদনে যাবে বলে আশা করছেন উদ্যেক্তারা। ইতোমধ্যে ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ফ্যাক্টরি তৈরির জন্য প্রায় ১১০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে মোট ১,০৪১ একর জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে অঞ্চলটি উত্তরের প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চলতি বছরেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল। উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বারে এই অঞ্চল চালুর মাধ্যমে শুধু জেলার কর্মসংস্থান নয়, আশপাশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে। সম্পূর্ণ পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন সংযোগের ফলে অল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফাও পাবেন উদ্যোক্তারা। ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি নামি-দামী বেশ কিছু উদ্যোক্তা প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। আরও আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিদেশীরা। অঞ্চলটি চালু হলে পাল্টে যাবে সিরাজগঞ্জসহ আশেপাশের জেলার অর্থনৈতিক অবস্থা। জানা গেছে, বাংলাদেশের বর্তমানে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বিভিন্ন জেলার মানুষ। নদীমাতৃক ও চিরসবুজ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা তাদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যে এগিয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিশাল জনসংখ্যাকে বিকেন্দ্রীকরণ করার লক্ষ্যে দেশের মানচিত্রকে চার প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। সেই বিবেচনায় অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। এরই অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদীর কুল ঘেঁষে গড়ে উঠছে সু-বিশাল অর্থনৈতিক পয়েন্ট। সেখানে একটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পাশাপাশি বিসিক শিল্পপার্ক ও একটি ইপিজেড তৈরির প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই তিন অর্থনৈতিক এলাকায় কাজ পুরোদমে শুরু হলে সিরাজগঞ্জ জেলাসহ উত্তরবঙ্গে নতুন করে প্রায় ১০ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে এবং অর্থনীতিতে আনবে বড় পরিবর্তন। চলতি বছরেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সরেজমিন ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।উত্তরবঙ্গে প্রবেশে যমুনা সেতু পার হয়েই দক্ষিণে সদর উপজেলার খাসবড়শিমুল, পঞ্চসোনা, চকবয়রা এবং বেলকুচি উপজেলার বেলছুটি ও বড়বেরা খারুয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। ১০৪২ একর জায়গায় গড়ে উঠছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। উদ্যোক্তাদের দাবি, এটি বেসরকারি খাতে দেশের বৃহৎ ও গ্রিন ইকোনমিক জোন। ঐ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৪ শতাধিক কোম্পানি গড়ে তোলা সম্ভব। এখানে বড় জায়গাগুলো রাখা হয়েছে বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্যও। সব কলকারখানা চালু হলে এখানে পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) ঘুরে দেখা যায়, রাস্তাঘাট নির্মাণ চলছে ও প্রকল্প এলাকার প্লট চিহ্নিতের কাজ শেষে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান ভূমি বুঝে নিতে শুরু করেছে। কয়েকটি কারখানার ভবনের অবকাঠামো নির্মাণের কাজের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। চলতি বছরেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেডের (এসইজেডএল) পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন ঢাকাওয়াচকে বলেন, ‘আমাদের ইকোনমিক জোনের প্রজেক্ট অফিস চালুর পাশাপাশি কারখানা ব্লক ও রাস্তা চিহ্নিত করে মাটি ভরাটের কাজ প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ। ফেইজ-১ ও ফেইজ-২ এরিয়ার মাঝে একটি সেতু তৈরিও শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে কারখানার ব্লক চিহ্নিত করে উদ্যোক্তাদের প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া। মোট জমির ৬০ শতাংশ জায়গায় কারখানা তৈরির জন্য ৪০০ মতো প্লট করা হচ্ছে। বাকি জমিতে পার্ক, বনায়ন, পর্যটন সুবিধা, হাসপাতাল, আইসিটি জোন, হাটবাজার, পুকুর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি গড়ে তোলা হবে। শ্রমিকদের জন্য থাকবে অত্যাধুনিক ডরমেটরি। আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালেই এখানে প্রথম শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সাল নাগাদ এখানে সব মিলিয়ে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা। ব্যক্তি মালিকানাধীন ১১টি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠা এই ইকোনোমিক জোনে প্রায় ৪০০টির মতো প্লট তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পের মাস্টার প্লান ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) এবং ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যান করছে জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (জেডিআই)। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত সুবিধার পাশাপাশি জল, স্থল এবং রেলপথে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের সুবিধা থাকবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে। মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘ইকোনোমিক জোনকে ঘিরে নদীবন্দর হচ্ছে, রেলওয়ের ইনল্যন্ড কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) কাজ প্রায় শেষ। ট্রেনলাইন আছে, যমুনার ওপর আলাদা রেল সেতু হয়েছে (উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে), ফোর লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো ফ্লাইওভার হয়েছে। এ ছাড়া এখানে যমুনা নদীর মিষ্টিপানি আছে। যমুনা নদীর পানি ওয়াটার ট্রিপমেন্টপ্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখান থেকে ফ্যাক্টরিতে সাপ্লাই দেওয়া হবে। কারখানায় গ্যাস সরবরাহ নিয়েও প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে ’ সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অনেক বড় নামিদামি কোম্পানি জমি বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ডায়নামিক ড্রেজিং, নিট এশিয়া, এমকে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রাতুল ফ্যাব্রিক, অ্যাকটিভ কম্পোজিট মিলস, রাইজিং হোল্ডিংস, রাইজিং স্পিনিং মিলস, মেরিনা প্রপার্টিজ, টেক্সট টাউন, স্কয়ার এক্সেসরিজ এবং স্কয়ার ইলেকট্রনিক্স। শেখ মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন রপ্তানিমুখী উদ্যোক্তাদের সবধরণের সুবিধা নিয়েই তৈরি হয়েছে। ১০ বছরের আয়কর রেয়াত সুবিধা, শুল্কমুক্ত সুবিধা, কাষ্টমস বন্ডেড এলাকা হিসেবে ঘোষিত। এ ছাড়া সামনের দিনগুলোতে শিল্পকারখানার জন্য যেখানে সেখানে জমি পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে বিধায় ইকোনোমিক জোনে পরিবেশগত ও অবকাঠামো সুবিধার কারণে উদ্যোক্তারা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শুরুর দিকে চ্যালেঞ্জিং কাজ জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করার পাশাপাশি নানা প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে ইকোনোমিক জোনের বর্তমান অগ্রগতি এখন সন্তোষজনক ’

ইসলামী ব্যাংকের রাজশাহী জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির রাজশাহী জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন এবং মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রাজশাহীর ভিক্টোরিয়া কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর শামসুল আরেফীন। ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল লাইস মোহাঃ খালেদ এবং এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ নুরুল করিম। এ ছাড়া বিভিন্ন সেশনে বক্তব্য দেন সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ সাইফুল ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ রুস্তম আলী, ও ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম কাউছার। সম্মেলনে জোনের অধীন শাখাপ্রধান ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের স্বত্বাধিকারীগণ অংশগ্রহণ করেন।

সয়াবিন তেলের সংকট আরও বাড়ছে, পাইকারিতে সামান্য কমছে চাল

বাজারে অন্য অনেক পণ্য স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে থাকলেও চাল ও তেল নিয়ে অস্থিরতা গত কয়েক মাস ধরেই চলছে। এরমধ্যে চালের দাম কেজিপ্রতি ৪-৬ টাকা বেড়েছিল, যা এখন পাইকারি পর্যায়ে ১-২ টাকা করে কমতে শুরু করেছে। তবে বাজারে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল, সেটা এখনো কাটেনি, বরং আরও বাড়ছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সয়াবিন তেলের দাম ও সরবরাহ সংকট। দেড় মাস আগেও এ ধরনের সরবরাহ সংকট তৈরি করেছিল কোম্পানিগুলো। এরপর সরকার কেজিপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা করে বাড়িয়ে দেয়। এরপর দু-এক সপ্তাহ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে আবারও সংকট তৈরি হয়েছে। সয়াবিন তেলের সংকট আরও বাড়ছে, পাইকারিতে সামান্য কমছে চালের দাম খিলগাঁও তালতলা বাজারে প্রায় ১০টি দোকান ঘুরে তিনটি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। সেখানে ইউনুস হোসেন নামে এক বিক্রেতা জানান, কোম্পানি সরাসরি তেলের অর্ডার নিচ্ছে না। তাদের কিছু ডিলার এখন তেল বিক্রি করছে ব্ল্যাক মার্কেটের মতো নিজের দোকান থেকে। সেটাও আমাদের কাছে-ই গায়ের রেটে বিক্রি করছে, সে তেল নিজে পরিবহন খরচ দিয়ে দোকানে এনে বিক্রি করলে প্রতি লিটার তেলে দু-তিন টাকা বেশি দাম পড়বে। ‘কিন্তু আমরা ক্রেতার কাছে বেশি দাম নিতে পারবো না। তাই তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছি’- বলেন এ বিক্রেতা। এদিকে, কিছু কোম্পানি তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য কেনার শর্ত বেঁধে দিচ্ছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন। অর্থাৎ কোম্পানির কাছ থেকে তেল নিতে গেলে বাধ্যতামূলকভাবে চাপাতা, আটা বা অন্য কোনো পণ্য অর্ডার দিতে হচ্ছে। এসএম ট্রেডার্সের মালিক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ডিলাররা পাইকারি পর্যায়ে তেলের দাম লিটারে প্রায় ৪ টাকা বেশি নিচ্ছেন। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছ থেকে বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি নিতে পারছেন না। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, রমজান সামনে রেখে কোম্পানি এবং বড় বড় ডিলার-মজুতদাররা বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী তেল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। আবু হেনা নামের একজন ক্রেতা বলেন, দেশে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলো, কিন্তু এই বাজার সিন্ডিকেটের কবল থেকে আমরা রক্ষা পেলাম না। পত্র-পত্রিকায় দেখছি, সরকারও বলছে বাজারে পণ্যের কোনো সরবরাহ সংকট নেই। কিন্তু বাজারে এলে চিত্রটা ভিন্ন। কেন এসব কোম্পানি বা মজুতদারদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হতে পারিনি? এটি আমাদের দুর্বলতা। অন্যদিকে, দেশের চালের মোকামগুলোতে চালের দাম সামান্য কমেছে। যার প্রভাবে রাজধানীর কিছু পাইকারি চালের দোকানে চালের দাম কমতে দেখা গেছে। তবে খুচরায় সেভাবে দাম কমা শুরু হয়নি এখনো। বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই খুচরা পর্যায়েও চালের দাম কমবে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি বাড়ার কারণে মোকামগুলোতে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে গত চার-পাঁচ মাসে প্রতি কেজি চালের দাম ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। যা এখন এক-দুই টাকা করে কমছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি চাল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা ও সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে সবজির বাজার এখনো নাগালের মধ্যে রয়েছে। বাজারে এখনো শীতকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামও অনেকটাই কম। ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে মিলছে নতুন আলু। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার মধ্যে। সয়াবিন তেলের সংকট আরও বাড়ছে, পাইকারিতে সামান্য কমছে চালের দাম এ ছাড়া বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজির মধ্যে। এছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং লম্বা লাউ (শীতকালীন লাউ) প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। এদিকে, বাজারে মুরগির দাম এখনো চড়া। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং সোনালী মুরগির কেজি মানভেদে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরায় ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজান সামনে রেখে ডাল ও ছোলার দামে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

‘এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি, দাম বাড়তে পারে প্রক্রিয়াজাত পণ্যের’

বিস্কুট, কেক, জুস, ড্রিংকস প্রভৃতি পণ্যের ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) কমানোর জন্য কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে তাদের। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি কোনো বৈঠক। নতুন করে বর্ধিত শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করা না হলে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) শুল্ক-কর কমানোর দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তারা। এ সময় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের উদ্যোক্তারা বলেন, এনবিআরের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ায় সবাই হতাশ। বর্ধিত শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের সুখবর পাওয়া যায়নি। তারপরও কয়েক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ভালো সংবাদ পাবেন বলে প্রত্যাশা তাদের। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয় দফায় আজ এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) নেতারা। বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, সদস্য ড. মো. আবদুর রউফ (মূসক নীতি) ও দ্বিতীয় সচিব (মূসক) মো. বদরুজ্জামান মুন্সী উপস্থিত ছিলেন। একই দাবিতে গত ২৩ জানুয়ারি বৈঠকে করেছেন তারা। তবে আজ দ্বিতীয় বৈঠকের পর ব্যবসায়ীরা শোনান হতাশার কথা। শুল্ক ও ভ্যাট না কমালে শিগগির প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন তারা। বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান, এনবিআর সদস্য ড. মো. আবদুর রউফ (মূসক নীতি) ও দ্বিতীয় সচিব (মূসক) মো. বদরুজ্জামান মুন্সী উপস্থিত ছিলেন। বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, শুল্ক-কর বাড়ানোর ফলে পণ্যের দাম বাড়বে। এতে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে যাবে। সরকারেরও রাজস্ব কমবে। অনেকেই বাধ্য হবেন শ্রমিক ছাঁটাই করতে। কয়েকদিনের মধ্যে এর সমাধান না হলে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হবো। বৈঠক শেষে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যানকে বিনয়ের সঙ্গে বলা হয়েছে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের ওপর শুল্ক-কর বাড়ানো অযৌক্তিক। ব্যবসায়ীরা এখনও লোকসান দিয়ে আগের দামে পণ্য বিক্রি করছে। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুল্ক-কর বাড়ানোর ফলে প্রক্রিয়াজাত পণ্যের চাহিদাও কমে যাবে। ফলে উদ্যোক্তারা এ ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, বিস্কুটের প্যাকেট আর কত ছোট করবো। ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করতে চাই না। বর্ধিত কর সমন্বয় না হলে বাধ্য হয়ে প্যাকেট ছোট করতে হয়। তিনি বলেন, করনেট বাড়াতে বাপা সদস্যদের সচেতন করা হবে। যারা ভ্যাট দিচ্ছে না তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে কোনো কিছু একটা করে। অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তাদের করনেটে আনা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভের মুখে নৌ উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃৃপক্ষের (চবক) কার শেড পরিদর্শনে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে বন্দরের কার শেডে প্রবেশের সময় বন্দর শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বন্দরের সিসিটি ও এনসিটি ইয়ার্ডকে বেসরকারিকরণ না করার বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বসতে চেয়েছিলেন তারা। চবকের অসহযোগিতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন শ্রমিক নেতারা। চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক ইব্রাহিম খোকন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি ও এনসিটি ইয়ার্ড দুইটি তৈরি করা ইয়ার্ড। এই দুইটি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে পারে। পাশাপাশি বন্দরের নিজস্ব পরিচালনায় এ দুটি ইয়ার্ড থাকলে প্রায় ৪ হাজার মত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই, আমরা এই দুটি ইয়ার্ডকে প্রাইভেটাইজড না করার জন্য উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম। চবকের চেয়ারম্যান বরাবরে ৪ ফেব্রুয়ারি চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু চবকের কিছু কর্মকর্তার অসহযোগিতার কারণে আমরা আজকে বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ করছি।’ পরবর্তী শুধুমাত্র শ্রমিকদের কথা শোনার জন্যই চট্টগ্রাম আসার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ থামে। নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যেহেতু নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শ্রম মন্ত্রণালয়ও দেখি, সেহেতু তাদের কথাগুলো আমি শুনেছি। আমি তাদের সঙ্গে আরও গুরুত্ব দিয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি পরিচালনা পর্ষদের এক সভা বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, কোম্পনি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তান থেকে এলো ৫ হাজার টন চিটাগুড়

ভারত ৫০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বৃদ্ধি করায় বিকল্প ও সহজলভ্য হিসেবে এবার পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করেছে বাংলাদেশ। যার প্রথম চালান বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। চিটাগুড় নিয়ে ৮ নম্বর জেটিতে ভিড়ে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯। জাহাজটি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পাঁচ হাজার ৫৫০ টন চিটাগুড় নিয়ে বাংলাদেশে আসে। দুপুরে জাহাজ থেকে খালাস শুরু হয় গুড়। খালাস হওয়া এ গুড় মোংলা থেকে রেলে করে নেওয়া হবে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে। সেখান থেকে তা দেশের বিভিন্ন ফিড কোম্পানিতে সরবরাহ করা হবে। এদিকে পাকিস্তান থেকে প্রথমবারের মতো চিটাগুড় আমদানি হওয়ায় জাহাজের ক্যাপ্টেন, নাবিক, আমদানিকারক ও শিপিং এজেন্ট প্রতিনিধিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এসময় বন্দর জেটিতে উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর শফিকুল ইসলাম সরকারসহ অন্যান্যরা।

ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা: পাঁচ দিনের ব্যবধানে ২ বার বাড়ল দাম

চলতি বছরের গত ১ ফেব্রুয়ারি বাড়ানো হয়েছিল সোনার দাম। এর চার দিন না পেরোতেই ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যা কাল বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খানকে নতুন মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি মুখপাত্র হুসনে আরা শিখার স্থলাভিষিক্ত হলেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ (এইচআরডি) বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খানকে (আইডি-১৭০০০৮৩৩) বাংলাদেশব্যাংকের মুখপাত্র হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।’এ ছাড়া আরিফ হোসেন খানকে সহযোগিতা করার জন্য ইতোপূর্বে মনোনীত ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী ও ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের পরিচালক (এক্স-ক্যাডার-পাবলিকেশন্স) সাঈদা খানমকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, আরিফ হোসেন খান ১৯৯৬ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। তিনি মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। আরিফ হোসেন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে অনার্স ও থিসিস গ্রুপ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম মাস্টার্সে সম্পন্ন করেন। তিনি নিউপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা ক্যাম্পাস থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থায়নে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। কর্মজীবনে আরিফ হোসেন খান জার্মানি, বেলারুশ, পোল্যান্ড, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশ ভ্রমণ করেন।

পৌনে চার কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন: শিবলী রুবাইয়াতসহ আসামি ছয়জন

তিন কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্য আসামিরা হলেন মোনার্ক হোল্ডিং ইনকর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ. মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের মালিক আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এফএভিপি ইসরাত জাহান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখার অপারেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন ও ব্যাংকটির এসইভিপি, অডিট এন্ড ইনপেকশন ডিপার্টমেন্ট ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ। এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুস গ্রহণ করে এবং ভুয়া পণ্য বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানির কৌশলে ১ কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকাসহ ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। এর আগে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৩ লাখ ৬১ হাজার ডলার বা ৩ কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার ২৪০ টাকা অবৈধ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনার সুযোগ করে দেওয়ায় মানিলন্ডারিং ধারায় অভিযোগা আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৫-এ, ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতকে ২০২০ সালে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত সাধারণ বীমা করপোরেশনেরও (এসবিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি বিভিন্ন আর্থিক ও অনিয়মের অভিযোগে তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত ৯ অক্টোবর দুদকের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। এছাড়া শিবলী রুবাইয়াত ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামি ব্যাংক থাকা হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ করা হয়েছে তাদের সব বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব। অভিযোগ রয়েছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন পুঁজিবাজারের কারসাজির সঙ্গে জড়িয়ে পরেন। মিলিয়ন ডলার জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংক হিসাব থেকে শিবলী রুবাইয়াতের কাছে অর্থ এসেছে বলে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ লাইভ অ্যান্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের প্রশাসক নিয়োগ

বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২ সালের ১৭ ধারা মোতাবেক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শেখ মতিয়ার রহমানকে বাংলাদেশ লাইভ অ্যান্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন ) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে নিয়োগকৃত প্রশাসক ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্য একটি সুস্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে।

এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ও তার পরিবারের ৫২ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ

এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার পরিবারের সদস্যদের ৫২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদন আমলে নিয়ে আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নজরুল, তার স্ত্রী নাসরিন ইসলাম, মেয়ে আনিকা ইসলাম, ছেলে ওয়ালিদ ইবনে ইসলাম এবং তাদের কোম্পানির ৫২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেছিল । দুদক তদন্ত দলের প্রধান উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিনের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম আবেদন দাখিল করেন। আবেদনে বলা হয়, নজরুল ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্তের সময় তার নিজের নামে, তার স্ত্রী, মেয়ে এবং ছেলে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হয়েছে যা অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে। আবেদনে আরও বলা হয়, 'জানা গেছে অভিযুক্তরা তাদের ৫২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রক্ষিত অর্থ উত্তোলন করে অন্যত্র স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। তাই, ৫২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ জারি করা প্রয়োজন।' গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। এতে ব্যাংকটির প্রভাবশালী চেয়ারম্যান মজুমদারের যুগের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ নজরুল মজুমদার ২০০৯ সাল থেকে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের ফোরাম বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকসের (বিএবি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

নগদের সাবেক চেয়ারম্যান-এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা

আইন স্বীকৃত মুদ্রা সংরক্ষণ ছাড়া অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি টাকা ইস্যু করার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুকসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘটনায় সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আমীর খসরু বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২১-২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের কার্যক্রমের ওপর বিশদ পরিদর্শন করে। পরিদর্শনে নগদ লিমিটেডের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে রক্ষিত ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্টগুলোতে ইস্যুকৃত ই-মানির বিপরীতে রিয়েল মানির ১০১ কোটি টাকার অধিক ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জনস্বার্থে গত বছরের ২১ আগস্ট ডাক বিভাগের সম্মতিতে ডাক বিভাগের এমএফএস ‘নগদ’-এ প্রশাসক দল নিয়োগ করে। বর্তমানে প্রশাসক দল নগদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে। নগদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি ঘাটতিসহ আরও কিছু গুরুতর আর্থিক অনিয়মের তথ্য প্রশাসক দলের নজরে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার সন্ধ্যায় মামলাটি দায়ের করে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরও দুই-তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও দুই থেকে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মূল্যস্ফীতির দিকে মূল মনোযোগ আছে। যতটুক সম্ভব যত তাড়াতাড়ি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি। এখন আমরা যে উদ্যোগ নেবো সেটার প্রভাব বাজারে দেখতে পাবেন। আশা করছি জুন মাসের দিকে মূল্যস্ফীতিতে একটা আইডল ৬-৭ শতাংশে যেতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য বেটার হয়।’ মূল্যস্ফীতি একটা সহনীয় পর্যায়ে আসতে আরও কত দিন লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপাতত আমাদের মূল্যস্ফীতির দিকে মূল মনোযোগ আছে। এ জন্য আরও দুই থেকে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে। যে কোন ইনডেক্স যখন উঠতে থাকে তখন অপ্রয়োজনীয় কোনো দুর্যোগ- যেমন শেয়ারবাজার উঠেছে, কিন্তু চুরিদারির পর আবার নিচে নেমে গেছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির বিষয়টা একটু অন্যরকম। এখানে কতোগুলো কারণ আছে। যেমন টাকার সরবরাহ বেশি ছিল, সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। কোনো জিনিস উঠে গেছে, জোর করে তো নামানো যায় না। এটা তো শুধু অর্থনৈতিক বিষয় না, সাপ্লাই চেইন, মনিটরি পলিসি, আর সরবরাহ ছাড়াও কতোগুলো কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।’ মূল্যস্ফীতি নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও রোজার এই সময় একটা ক্রাইসিস থাকে। আর এ সময়ের জন্য বড় ধরনের একটা উদ্যোগ নেই। সেটার ফলটা এপ্রিল মের দিকে গিয়ে পড়ে। এজন্য এপ্রিল মে পর্যন্ত কোনো নিত্য পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি হতে দেব না। সেজন্য আজকে চাল, ডাল, সারসহ অত্যাবশ্যকীয় কতোগুলো পণ্যের আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও মুদ্রানীতি দেবে।’ ভ্যাট ট্যাক্স নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয়ে ভ্যাট ইস্যুর জন্য দাম বেড়েছে। যেমন বিস্কুটের দাম বেড়েছে। যাই হোক এসব বিষয় নিয়ে আমরা পরশুদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসব। মার্চের দিকে বাজেট পুনঃমূল্যায়ন করব। সেখানে নিদিষ্ট কিছু অ্যাকশন দেখবেন। বিশেষ করে অর্থনৈতিক খাতে। মেইন উদ্দেশ্য হচ্ছে ভ্যাটের। দিনের পর দিন ছাড় দেওয়া হয়েছে। এগুলো আর আমি উৎসাহ দেব না। এরমধ্যে হয়তো দুই একটা পণ্যে প্রভাব পড়েছে। এতে লোকজনের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, সেটা লাঘব করার জন্য আমি চেষ্টা করবো। আয়করের বিষয় আছে সেটা দেখবো, যাতে অন্য ট্যাক্স তাদের যেন কম হয়।’ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে আমরা ক্রয় কমিটিতে চাল, মসুর ডাল ক্রয়ে অনুমোদন অনবরত দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কিন্তু ফরেন এক্সচেঞ্জে বিরাট চাপ রয়েছে, তারপরও দিচ্ছি। গতকাল গভর্নর ও ব্যাংকারদের সঙ্গে বসেছি। সেখানে তাদের বলেছি, যেভাবেই হোক আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জে সাশ্রয় করতে হবে। তবে অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ আমরা কোন দিনই কমতে দেব না। এর মধ্যে চাল, মসুর ডাল, ভোজ্যতেল সয়াবিন, এলএনজি এবং সারের সরবরাহ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের যে পরিমাণ অর্থের ব্যয় হচ্ছে, এতে আমাদের কতোটা যে চাপ পড়ছে সেটা বাইরে থেকে জানার কথা না। সেটা ব্যাংকার ও আমি জানি তবে সেটা কোনো খারাপ অবস্থা না। যদি আমরা কাউন্টার ইস্যুগুলো না নিই তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা একটা অকল্পনীয় অবস্থায় চলে যেত। কারণ কোথাও কোনো অর্থ নেই। সব ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে গেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন হয়েছে বলে আমার জনা নেই। ব্যাংকের ডিপোজিটের টাকাসহ চলে গেছে। টাকা তো নেই ব্যাংকের কাছে। সেই টাকাগুলো আমরা দিচ্ছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে কথা বলেছি যে কীভাবে বিশেষ ফান্ড করে দেওয়া যায়।’ সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গতকাল আমি সারা দিন ব্যাংকারদের সাথে বৈঠক করেছি। কীভাবে ট্রেড ফ্লো বাড়ানো যায় বেসরকারি খাতে, কীভাবে আরও সাশ্রয়ী করা যায় ব্যবসায়। আমরা চেষ্টা করছি, ব্যবসায় রান করার জন্য।’

বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদকে লিগ্যাল নোটিশ

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে আইনি নোটিশ (লিগ্যাল নোটিশ) পাঠিয়েছেন তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) কিছু শেয়ারহোল্ডার। কোম্পানিটিতে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ না করেও একজন পরিচালক পদে থাকায় এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি আইনি নোটিশটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), অর্থ মন্ত্রণালয়ে সচিব, এনটিসির এমডি ও ১০ পরিচালককে এবং জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের রেজিস্ট্রারকে দেওয়া হয়েছে। নোটিশটি পাঠিয়েছেন ন্যাশনাল টি কোম্পানির নেসার উদ্দিন, কোহিনুর আহমেদ, কাজী মুরসালিন উল্লাহসহ ১২ জন শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে ব্যারিস্টার ফারাবি সালাউদ্দিন তুসহিব। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ন্যাশনাল টি কোম্পানি পরিচালকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এ কোম্পানিটিতে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ১ জন পরিচালক আছেন যিনি ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেন না। তারপরও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় কোম্পানি পরিচালনায় পর্ষদের সিদ্ধান্তকে ক্ষতিকর মনে করা হচ্ছে।’ এদিকে কোম্পানির পর্ষদের রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে। যে অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি বলে দাবি করা হয়েছে। কোম্পানিটিতে পরিচালকদের কোরাম পূরণ ছাড়াই অবৈধভাবে পর্ষদ সভা করে বিশেষ এজেন্ডা পাস করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। যা সম্ভব হয়েছে পর্ষদের স্বেচ্ছাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে। লিগ্যাল নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘বিএসইসির রেগুলেশনস ও নোটিফিকেশন ভঙ্গের মাধ্যমে কোম্পানি ও শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগকে বিপদে ফেলা হয়েছে। অথচ বিএসইসি কোম্পানিটিকে আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন (কর্পোরেট গভর্নেন্স) অনুযায়ী পরিচালনা করাতে বাধ্য।’ বিএসইসিকে কোম্পানিটির পুরো পর্ষদের কার্যক্রম তদন্তের পদক্ষেপ নিতে আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে, বিএসইসিকে একজন পরিচালক নিয়োগ দিতে বা অন্য কোনো পদক্ষেপ নিতে এবং পর্ষদের সব সভা বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে।

ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন রোডম্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন রোডম্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের দক্ষতা ও প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি করতে হবে।’ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশন মাল্টিপারপাস হলে ন্যাশনাল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন কমিটির (এনটিএফসি) ৮ম সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সভার আয়োজন করে। প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সভায় অতিথি ছিলেন। আমরা ২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি গ্র্যাজুয়েট হতে যাচ্ছি। এই গ্র্যাজুয়েশনের কারণে সামনে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের ওপর বিভিন্ন নিয়ম আসবে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এতে আমাদের অর্থনীতিতে যে ধাক্কাটা আসবে তা থেকে পরিত্রাণের নিয়ামক হচ্ছে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।’ এ কারণে আমাদের প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে দক্ষতার মাধ্যমে। এ ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে সভায় শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের সময় আছে। আমি মনে করি, এটা দীর্ঘ সময়। যদি ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে আমরা গ্রাজুয়েট করি, আমি মনে করি আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপগুলো একসাথে কাজ করলে একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ সম্ভব।’ সভায় লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট সময় সীমা নির্ধারণ করে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পাশাপাশি ব্যবসায় সহজীকরণ করতে হবে। আমরা সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে চাই।’ সভায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব সেতু বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়েল প্রশাসক, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ (এফটিএ) কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্টের মূল উদ্দেশ্য বাণিজ্য উদারীকরণের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত বিধি-বিধান ও কর্মপদ্ধতি পর্যালোচনা করে আমদানী ও রপ্তানি পণ্যের প্রসার ও চলাচল ত্বরান্বিত করা।ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্টের আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে ৩টি (এ, বি, সি) ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এ ক্যাটাগরির ২১টি কার্যক্রমের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত নোটিফিকেশন ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ডব্লিউটিওতে পাঠানো হয়। বি ক্যাটাগরির ১৮টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ভিন্ন ভিন্ন সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। বি ক্যাটাগরি কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাস্তবায়ন সংক্রান্ত নোটিফিকেশন ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ডব্লিউটিওতে পাঠানো হয়। সি ক্যাটাগরির ১৫টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের সর্বশেষ সময়সীমা আগামী ২০৩০ সালের ৩০ জুন।ইতোমধ্যে সি ক্যাটাগরির ৫টি কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন ডব্লিউটিওতে পাঠানো হয়েছে। অবশিষ্ট ১০টি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা

২০২৫ সালের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জনের লক্ষ্যে ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সোনালী ব্যাংক পিএলসি। সব সূচকে অগ্রগতি ও লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিতকরণে নির্ধারিত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ১০০ দিনে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার অন্তত ৪০ শতাংশ অর্জনের নির্দেশনা দেন ব্যাংকের এমডি অ্যান্ড সিইও মো. শওকতআলী খান। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন এবং তা বাস্তবায়নে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মো. শওকত আলী খান এই কর্মসূচির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরণ, আমানতের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানিবাণিজ্য, গ্রিন ব্যাংকিং, খেলাপি ঋণ আদায়, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নসহ সব সূচকে অগ্রগতি, লক্ষ্য অর্জন ও সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের নির্দেশনা দেন এবং এ জন্য অর্জনের বিপরীতে পুরস্কার চালুর ঘোষণা দেন। ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুভাষ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সব ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্রধান কার্যালয়ের সব জেনারেল ম্যানেজার ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, মাঠ পর্যায়ের সব জিএম অফিস, প্রিন্সিপাল অফিস ও কর্পোরেট শাখা প্রধান এবং সব শাখা ম্যানেজার অংশ নেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মকর্তাদের সব লকার স্থগিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের মহানিরাপত্তা এলাকার কয়েন ভল্টে অর্থসম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার ফ্রিজ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহ করছে, এসব লকারে গোপনে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থসম্পদ মজুত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংকের লকার বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না। দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোন লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয় সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেফ ডিপোজিট (লকার) হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাদের সম্পদ রাখতে পারেন। যেসব সম্পদ বাসায় রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ডাকাতির ভয় আছে মূলত সেইসব সম্পদই সেফ ডিপোজিট হিসেবে সিলগালা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখা হয়। এই সংখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক শতাংশেরও কম। কিন্তু একজন এসকে সুরের কারণে আমাদের এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।’ দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে লকার ফ্রিজের অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘৩০ জানুয়ারি দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা এসব লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দেন।’ দুদক সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলা ও তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আদালতের আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দুদক লকার খোলার ব্যবস্থা নেবে। এর আগে, দুদকের অনুসন্ধান দল সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এসকে সুর) বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। পরে তার লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায়। তল্লাশির সময় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেশকিছু লকার সিলগালা অবস্থায় রয়েছে। দুদক মনে করছে, এসব লকারে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে। দুদক বলেছে, ‘লকার খুলে রক্ষিত সম্পদ যাতে কেউ সরিয়ে নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

সূচকের উত্থানে পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে। লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করে।ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১ হাজার ১৪৪ ও ১ হাজার ৯১৪ পয়েন্টে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। মঙ্গলবার এ সময়ে লেনদেন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৭৩টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হলো জিপিএইচ ইস্পাত, গ্রামীণফোন, এনার্জিপ্যাক, খুলনা প্রিন্টিং, টেকনো ড্রাগস, সেন্ট্রাল ফার্মা, খান ব্রাদার্স, রূপালী লাইফ, ইফাদ অটোস ও ডেল্টা স্পিনিং। লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স বাড়ে ৬ পয়েন্ট। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে আরও ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর অর্থাৎ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে, লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ সময়ের মধ্যে ১৪টি কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি কোম্পানি শেয়ারের দাম।

বেস্ট ব্যাংকিং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পেল ইসলামী ব্যাংক

২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দৃষ্টিনন্দন স্টলের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য বেস্ট ব্যাংকিং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নিকট থেকে ব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট উইং প্রধান ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ.কে.এম মাহবুব মোরশেদ এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ সময় ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ মজনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মতিঝিলের রাস্তায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা

মতিঝিলের রাস্তায় বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) ব্যানারে সমাবেশ করছেন শেয়ারবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ১১টি দাবি নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরোনো ভবনের সামনে এই সমাবেশ শুরু হয়। বিনিয়োগকারীদের দাবিগুলো হলো ১. বিএসইসি’র চেয়ারম্যান ও আইসিবি’র চেয়ারম্যানকে দ্রুত অপসারণ করে নতুন যোগ্য চেয়ারম্যান নিয়োগ করে পুঁজিবাজার বাঁচাতে হবে। ২. বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতির কারণে গেইন-ট্যাক্স সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। ৩. বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতির কারণে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে (তদন্ত ও অসময়ে জেড গ্রুপে প্রেরণ ইত্যাদি)। ৪. পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর বিধান সংস্কার করা প্রয়োজন। কারণ কোম্পানির জেড ক্যাটাগরিতে গেলে সর্বোপরি বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন। আরও পড়ুন : অবৈধভাবে বসবাস করা বিদেশিদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে টাস্কফোর্স গঠন ৫. কোম্পানিগুলোকে আয়ের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। ৬. ব্যাংক, ফাইন্যান্স, ইন্স্যুরেন্স, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আইসিবিসহ পুঁজিবাজারে তাদের যতটুকু বিনিয়োগ করার কথা তা শতভাগ কার্যকর করতে হবে। ৭. টাস্ক ফোর্সের সংস্কারগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দ্রুত জানাতে হবে। সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে। ৮. কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ ৩০ শতাংশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। ৯. বিএসইসি’র দায়িত্ব অন্তত ১০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজার বিনিয়োগ নিয়ে আসা। ১০. পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হলে তাহার বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। ১১. ফোর্স সেল বন্ধ করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন এবং মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা রবিবার (২ ফেব্রয়ারি) সিলেট শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম খান এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট জোনপ্রধান মো. জাকির হোসেন, ডেভেলপমেন্ট উইংপ্রধান এ কে এম মাহবুব মোরশেদ ও এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশন প্রধান আবুল লাইছ মোহাম্মদ খালেদ। সম্মেলনে জোনের অধীন শাখাপ্রধান ও এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের স্বত্বাধিকারীগণ অংশগ্রহণ করেন।