প্রায় দুই দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক


প্রায় দুই দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক

দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের নবম বৈঠক। বৈঠকে দুই দেশ তাদের প্রাথমিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণের দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করবে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা। পাকিস্তানের পক্ষে বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন পেট্রোলিয়াম বিষয়ক মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক, যিনি ইতোমধ্যেই ঢাকায় পৌঁছেছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে ‘মুক্ত বাণিজ্য’ চুক্তির সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে, যা পাকিস্তানের উদীয়মান মধ্যবিত্ত ভোক্তা শ্রেণির চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে, দীর্ঘদিন ধরে চলা কূটনৈতিক শীতলতা কাটিয়ে সম্পর্ককে উষ্ণ করার দিকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী কূটনৈতিক নীতিতেও বাংলাদেশে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পাকিস্তানের কেবল একজন প্রতিমন্ত্রীই বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। কিন্তু গত ১৪ মাসে ঢাকায় এসেছেন দেশটির অন্তত চারজন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। প্রায় দুই দশকের বিরতির পর জে ই সি বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় আশা করা হচ্ছে, দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় শক্তিশালী হতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মুহা রুহুল আমীন বলেন, "একটি দেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো দেশের স্বার্থ, অর্থনীতির স্বার্থ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থ... এটি সব অবস্থাতেই ঠিক থাকবে।"

বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বড় ঘাটতির মুখোমুখি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের আমদানি ৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার হলেও বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ৮ কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে এই ঘাটতি কমানো সম্ভব।

অর্থনীতি বিশ্লেষক মাহফুজ কবির বলেন, "বাংলাদেশের যে সমস্ত পণ্য রয়েছে সেগুলোর জন্য পাকিস্তানের একটি উঠতি মধ্যবিত্ত স্টেট রয়েছে। বাংলাদেশের সস্তা পণ্য সেখানে বড় বাজার পেতে পারে। একই সঙ্গে দুটি দেশের মধ্যে একটি মুক্তবাণিজ্য চুক্তিও সম্পাদন করা যায়।"

জে ই সি-র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো রয়েছে। এই বৈঠকে পাট, চা রপ্তানি এবং জ্বালানি সহায়তার মতো বিষয়গুলোও গুরুত্ব পেতে পারে।

যাতে বোঝা যায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন দিশা পাচ্ছে, তার ইঙ্গিত হিসেবে বৈঠকের পরদিন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ বশিরউদ্দিন ইসলামাবাদ সফরে যাচ্ছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×