গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক: সুদহার এক অঙ্কে নামানোর দাবি
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:৪৫ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো ঋণের উচ্চ সুদের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, বিদ্যমান হার ব্যবসা-বান্ধব নয় এবং এটি বিনিয়োগ ও প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তারা আগামী মুদ্রানীতিতে সুদের হার কমিয়ে এক অঙ্কে নামানোর জোর দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি তুলে ধরে ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠনের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব আলমগীর হোসেন বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে সুদের হার ১৪ শতাংশের ওপরে। পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতের ব্যবসায়ীরা মুনাফাই করেন ১০ থেকে ১১ শতাংশ। ব্যাংকঋণের বর্তমান সুদহার কোনো অবস্থাতেই ব্যবসাবান্ধব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “উচ্চ সুদের হারে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা, বিনিয়োগের স্বার্থে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিটে আনার অনুরোধ জানিয়েছি।”
গভর্নর আশ্বাস দিয়ে জানান, সুদের হার এক অঙ্কে আনার বিষয়টি আসন্ন মুদ্রানীতিতেই প্রতিফলন পাবে।
আলমগীর হোসেন আরও জানান, “কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির মেয়াদ গত সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে। সেটি আরও ছয় মাস বাড়াতে অনুরোধ করেছি।”
এ ছাড়া, ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পর্যালোচনার জন্য একটি আলাদা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। গভর্নর এতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে বলেন, বিষয়টি অব্যাহত থাকবে এবং এতে কোনো জটিলতা হবে না।
ব্যবসায়ীরা রপ্তানিমুখী শিল্প খাতে ব্যাংকিং সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের বিশেষ কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দেন। এ প্রসঙ্গে আলমগীর হোসেন বলেন, “রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সময় সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সমস্যার সম্মুখীন হয়, যার তাৎক্ষণিক সমাধান প্রয়োজন। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা যেতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এ বিষয়ে গভর্নর সম্মতি জানিয়ে একজন ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এখন থেকে এসব বিষয়ে আমরা তাঁর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে পারব।”