এসআইবিএলের রেজাউল হকের পদত্যাগ, নতুন বিতর্ক
- ফরিদ শ্রাবণ
- প্রকাশঃ ০১:৪০ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫

একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি (এসআইবিএল) আবারও নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছে। ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তা পরিচালক ডা. মো. রেজাউল হক রোববার (১১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পদত্যাগ করেছেন।
রেজাউল হক জানিয়েছেন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদে কমপক্ষে পাঁচজন পরিচালক থাকা আবশ্যক। তিনি মনে করেন, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ এ শর্ত পূরণ করছে না, তাই তা কার্যকর নয়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে, মেমোরেন্ডামের চেয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনই সর্বোচ্চ কার্যকর হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, “ব্যাংক কোম্পানি আইনে ন্যূনতম কতজন পরিচালক থাকতে হবে, তা বলা নেই। তাই পর্ষদ বাতিল হওয়ার সুযোগ নেই।”
পদত্যাগপত্রে রেজাউল হক অভিযোগ করেছেন, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ও স্বতন্ত্র পরিচালকরা আইন অমান্য করে বেতন ও ভাতা ভোগ করছেন, অথচ প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না।
রেজাউল হক, যিনি ২০০২ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন, জানিয়েছেন, তিনি ব্যাংকটির দায়িত্ব সততা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে পালন করলেও ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর কিছু পরিচালক ভুল বোঝানোর মাধ্যমে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করান।
তার দাবি, এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয় এবং ২০১৩ সালে নতুন আটজন শেয়ারহোল্ডার যুক্ত হন। ২০১৭ সালে ফাউন্ডার সার্টিফিকেট প্রাপ্তির পর, এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদের নেতৃত্বে পাঁচজন নতুন শেয়ারহোল্ডার যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে ওই গ্রুপের হাতে চলে আসে।
রেজাউল হক অভিযোগ করেন, “এরপর থেকে প্রকৃত উদ্যোক্তা ও পুরনো শেয়ারহোল্ডারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের নীতিনির্ধারণ ও পরিচালনা এখন এমন এক গোষ্ঠীর হাতে, যারা আইন ও নৈতিকতা অমান্য করে ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালনা করছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, স্বতন্ত্র পরিচালকরা গত এক বছরে আইন অমান্য করে বেতন–ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করেছেন, অথচ প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডাররা কোনো সুবিধা পাননি।
রেজাউল হক লিখেছেন, “গত কয়েক বছর যাবৎ ব্যাংকের বাস্তব মালিকদের কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি এবং পরিচালনা পর্ষদের গঠন ও নীতিনির্ধারণে আমরা সম্পূর্ণভাবে বাদ পড়েছি। ব্যাংকের বর্তমান কার্যক্রমে আমার কোনো প্রভাব নেই।”
পদত্যাগপত্রের শেষাংশে তিনি জানান, “ব্যাংকের এই অবস্থায় আমি আর দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। ব্যাংকের সার্বিক স্বার্থ ও ব্যক্তিগত নৈতিকতার কারণে আমি পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।”