দেশের অর্থনীতি স্বস্তিতে আছে: অর্থ উপদেষ্টা


দেশের অর্থনীতি স্বস্তিতে আছে: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্থিতিশীল বলে মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমি স্বস্তিতে আছি। সে জন্য আমরা মোটামুটি একটু আত্মবিশ্বাসী।"

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসার প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটি আগের তুলনায় কমে এসেছে, যদিও কিছু দক্ষিণ এশিয়ার সার্ভিস রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ দেখানো হয়। এই ধরনের সমালোচনার উত্তরে তিনি বলেন, "বেসটা যখন বড় হয় ১১-১৪ ছিল, তারপরে নামিয়ে ৮-এ এনেছি। ওটা যদি ৭ থাকতো, ওখানে যদি ৪-এ নামিয়ে আনতে পারতাম সবাই মহানন্দ হতো।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, বেস লেভেল অনেকটাই খারাপ ছিল, তাই এটি কমানো ছিল চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু তারা তা যথাসাধ্য করেছেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খাদ্য ও অখাদ্য দ্রব্যের মূল্য কমানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তবে অখাদ্য দ্রব্যের মধ্যে বাস ভাড়া, পরিবহন ও জ্বালানিসহ অন্যান্য খরচ কমানো কিছুটা কঠিন কাজ।

আমেরিকার শুল্ক সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শুল্ক ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে এবং চার বিলিয়ন ডলার শুল্ক তারা প্রদর্শন করেছেন। নতুন বেতন স্কেলের বিষয়ে তিনি বলেন, "সেটা পরে এক সময় আমি দেখবো। যাওয়ার আগে এক সময় আমি বলবো।"

সাম্প্রতিক নির্বাচন উপলক্ষে ৪২০ কোটি টাকায় বডি ক্যামেরা কেনার বিষয়টি অপচয় মনে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আপনার সেটা পরে বুঝতে পারবেন।"

বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার বাড়ার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "আমি তাত্ত্বিক দিকে এখন যাবো না। দারিদ্র্য বেড়ে গেছে, দারিদ্র্য আছে প্রকৃতপক্ষে এগুলো বলতে হলে আমার অনেক বক্তব্য দিতে হবে। আমি তো জানি কীভাবে ওরা দারিদ্র্য মেজার করে।" তিনি আরও বলেন, "আপনি ৫ হাজার লোকের টেলিফোন করে ইন্টারভিউ নিয়ে বললেন দারিদ্র্য বেড়ে গেছে, এগুলো তো আমি জানি। আমাকে একজন বলে স্যার আপনি একটা পেপার লেখেন, আমি বলে দিলে একটা ফার্ম ২০ হাজার রিপ্লাই দিয়ে দেবে আপনাকে কালকের মধ্যে। এগুলো রিলাবিলিটির ব্যাপার।" তিনি অমর্ত্য সেনের কথাও উল্লেখ করেন, "অমর্ত্য সেন একবার বলেছিলেন- খুব কঠিন দারিদ্র্য আমার মেজার করতে হবে না। দরিদ্র লোক দেখলেই চিনতে পারবেন, তার চেহারা, তার ভাবে।"

চীন থেকে ২.২ বিলিয়ন ডলারে ২০টি ফাইটার জাহাজ কেনার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য এড়ান। সাংবাদিকদের পুনরায় প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "জানলেই কি সবকিছু বলে দিতে হবে।" ফাইটার জাহাজ কেনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি বলেন, "ওটা ওদের ব্যাপার। ওরা এসেস করে কি করছে, আমরা ওর ভিতরে নেই। আমি অর্থের সংস্থানের…।" অনুমতি প্রদান সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এখন আমি এটার ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।"

ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা জানান, "আইএমএফ’র পাইপলাইনে আরও টাকা আছে কিছু। আর বাকি এডিবি, এআইডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এগুলো আছে। মোটামুটি অনগোইং যেগুলোতে কমিটমেন্ট আছে, দুইটা অ্যাগ্রিমেন্ট সই হবে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে। আর বাকিগুলো আমরা এবার একটু এজ ইউজুয়াল আমাদের ফলোআপ। এবার নেগোশিয়েশনের ব্যাপার না।" তিনি যোগ করেন, "ভবিষ্যতে আমাদের কি প্ল্যান আছে এবার খুব ওপেনলি অনেক কিছু আলোচনা হবে না। নতুন সরকার আসার পর তারা মেজর ডিসিশন নেবে, সেটা হলো আমাদের স্ট্যান্ড। মানে বাকি মেজর ইস্যুগুলো ওরা করবে।"

সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়ে আসছে বলে অর্থ উপদেষ্টা জানান, যদিও কিছু ক্ষেত্রে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×