বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব পাকিস্তানের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:০৫ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান, যা চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ করার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার করতে সাহায্য করবে। ইসলামাবাদ মনে করছে, বন্দরটি ব্যবহার করলে নতুন সমুদ্র রুট খোলা হবে এবং তৃতীয় দেশের বন্দরের ওপর নির্ভরতা কমবে।
আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) এর নবম বৈঠকে এ প্রস্তাব আলোচনায় আসবে। দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠক শেষবার হয়েছিল ২০০৫ সালে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, সরাসরি সামুদ্রিক বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) এবং পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন (পিএনএসসি) এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের বিষয়ও বিবেচনায় রয়েছে। এই চুক্তি কার্যকর হলে চট্টগ্রাম ও করাচির মধ্যে নিয়মিত জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে পাঁচ দশক পর প্রথম সরাসরি কার্গো জাহাজ পৌঁছায়। এরপর থেকে পাকিস্তান সরাসরি সামুদ্রিক সহযোগিতার আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।
ইআরডি জানিয়েছে, বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, হালাল পণ্য মান নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতে প্রশিক্ষণ, চিনি শিল্পে কারিগরি সহায়তা, গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন, টিকা উৎপাদন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া, পাকিস্তান হালাল কর্তৃপক্ষ (পিএইচএ) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর মধ্যে এমওইউ সইয়ের বিষয়ও রয়েছে।
পাকিস্তান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ নতুন বৃত্তি, একটি পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপন এবং নিরাপত্তা সামগ্রী মুদ্রণের কাগজ ও কালি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি ৬৬১ মিলিয়ন ডলার, আর বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে রপ্তানি মাত্র ৫৭ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ থেকে মূলত রপ্তানি হয় পাট, তৈরি পোশাক, সিরামিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, আর পাকিস্তান থেকে আসে তুলা, সুতা, রাসায়নিক দ্রব্য, ওষুধ এবং লোহা-ইস্পাতজাত সামগ্রী।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “করাচি বন্দর ব্যবহার করে সরাসরি রপ্তানি শুরু হলে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজার উন্মুক্ত হবে। তৈরি পোশাক, চামড়া, কৃষিপণ্য ও আইটি সেবার রপ্তানিতে বড় সুযোগ তৈরি হবে।”
তিনি আরও জানান, “ভিসা ও বিমান সংযোগ পুনরায় চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও ব্যবসায়িক সম্পর্কও জোরদার হচ্ছে।”