বাড়তি শুল্ক দিতে হবে আমদানিকারকদেরই: বিজিএমইএ সভাপতি


বাড়তি শুল্ক দিতে হবে আমদানিকারকদেরই: বিজিএমইএ সভাপতি

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশে নামায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন দেশের তৈরি পোশাক খাতের নেতারা। তবে এই শুল্ক কমানোর পেছনে বাংলাদেশ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হলে আবারও জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।

শুক্রবার (১ আগস্ট) এক লিখিত বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, গত তিন মাস ধরে মার্কিন পাল্টা শুল্ক নিয়ে পোশাক খাত এক ধরনের অনিশ্চয়তায় ছিল। মার্কিন ক্রেতারাও পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন। অবশেষে শুল্কহার কমানোয় কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে এই অতিরিক্ত শুল্ক বহন করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারক ও খুচরা বিক্রেতাদেরই।

বিজিএমইএ সভাপতির মতে, যদি বাংলাদেশের ওপর শুল্কহার প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি থাকত, তাহলে সেটি রপ্তানি খাতের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলত। এখন পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে সহনীয়। পাকিস্তানের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি হলেও ভারতের চেয়ে ৫ শতাংশ ও চীনের তুলনায় ১০ শতাংশ কম শুল্কে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশ করতে পারবে মার্কিন বাজারে—যা ব্যবসায়িক সুবিধা বলেই মনে করছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূলধন ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়তে পারে। যদি তারা অতিরিক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে না পারে, তবে অর্ডার কমে যেতে পারে। ফলে বাজারে বিক্রয়ও কমে যেতে পারে।

মাহমুদ হাসান খান জানান, এপ্রিল মাসে প্রথম ধাপে ট্রাম্প প্রশাসন সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসানোর পর, অনেক মার্কিন কোম্পানি তা নিজেদের কৌশলে সামলে নিয়েছিল। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান সরবরাহকারীদের ওপরই সেই শুল্কের চাপ দিয়ে বসে। এবার বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সাফ জানানো হচ্ছে, নতুন শুল্কের দায় আমদানিকারক ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই নিতে হবে।

চীন প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এখনো দেশটির পণ্যে ৩০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর চূড়ান্ত হারে শুল্ক নির্ধারণের অপেক্ষায় রয়েছে। চীনের শুল্কহার বাংলাদেশের চেয়ে কম হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে, যার ফলে ক্রয়াদেশ কিছুটা বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হতে পারে।

তবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে দেশের জ্বালানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যদিও এখনও পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি বা চুক্তির খসড়া প্রকাশ পায়নি, তবুও আশা করা যায়, বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সবশেষে মাহমুদ হাসান খান বলেন, শুল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের গাফিলতি হলে ভবিষ্যতে ঝুঁকিতে পড়তে পারে রপ্তানি খাত। স্বল্পমেয়াদে গম, তুলা ও এলএনজি আমদানি এবং দীর্ঘমেয়াদে বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার মতো চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×