চাকরি ফেরতের দাবিতে আল-আরাফাহ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ


চাকরি ফেরতের দাবিতে আল-আরাফাহ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ

চাকরি হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়া ৫৪৭ কর্মকর্তা এবার সরব হয়েছেন রাজপথে। আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি থেকে হঠাৎ বরখাস্ত হওয়া এসব কর্মকর্তারাই বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

প্রতিবাদ জানাতে কেউ কেউ এদিন শরীরে জড়ান কাফনের কাপড়—চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে প্রতীকী এই প্রতিবাদে সৃষ্টি হয় ব্যতিক্রমী চিত্র।

সাবেক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, চলতি বছরের ২০ জুলাই তাদের হঠাৎ করে একটি ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির চিঠি পাঠানো হয়। পূর্ব কোন পূর্বাভাস না দিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাঁরা চরম আর্থিক ও মানসিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন বলে দাবি করেন।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এদের অনেকেই ৪ থেকে ৫ বছর ধরে শাখা পর্যায়ে নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, হিসাব খোলা এবং আমানত সংগ্রহসহ সব কার্যক্রমেই ছিলেন সক্রিয় ও সফল।

চাকরিচ্যুত একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান আমির হোসেন তাদের ভুল আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করেছেন। তাদের বলা হয়েছিল, একটি মূল্যায়ন পরীক্ষার মাধ্যমে কর্মক্ষমতা যাচাই হবে এবং কেউ চাকরি হারাবে না। কিন্তু পরে সেই মূল্যায়ন পরীক্ষাকেই চাকরিচ্যুতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

চাকরি ফিরে পেতে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা সাতটি দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব কর্মকর্তা যেন নিজ নিজ শাখা ও পদে পুনর্বহাল হন, পূর্ববর্তী ইনক্রিমেন্ট বহাল থাকে, প্রবেশনারি কর্মকর্তাদের যথাসময়ে কনফার্মেশন দেওয়া হয়, মূল্যায়নের নামে চাকরিচ্যুতির পদ্ধতি বাতিল করা হয়, যথাসময়ে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হয়, আগের মতো সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় এবং মানবসম্পদ প্রধান আমির হোসেনকে অপসারণ করা হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, অনেকেরই বয়স সরকারি চাকরির সীমা পেরিয়ে গেছে, ফলে অন্য কোথাও নতুন চাকরির সুযোগ নেই। হঠাৎ চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তারা বলেন, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ধ্বংসের এজেন্ডা বাস্তবায়ন হচ্ছে। পরিচালনা পর্ষদের ব্যবস্থাপনায় গ্রাহক আতঙ্ক আর কর্মী আতঙ্ক ছাড়া একটা ভালো পরিবর্তন নেই। দেশীয় বড় কোনো বিনিয়োগ কেন হচ্ছে না, এটা দেখার বিষয়।

বিষয়টি নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গতকাল চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের চলতি মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা, অতিরিক্ত এক মাসের বেতন, চাকরির মেয়াদ অনুসারে তিন মাস পর্যন্ত অতিরিক্ত বেতন এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ প্রদান করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক কর্মকর্তারা, আর ব্যাংকের সদর দফতরের সামনে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে গণমাধ্যম এবং উৎসুক জনতার।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×