ব্যবসায়ীদের আপত্তি ভোজ্যতেলের দাম কমানোর প্রস্তাবে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের দাম কমানোর প্রস্তাব নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করলেও, তাদের আপত্তির কারণে বৃহস্পতিবার কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। সরবরাহ পরিস্থিতি ও দাম বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর আগামী শনিবার নতুন করে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং মেজর ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সূত্রের বরাতে জানা যায়, বৈঠকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়, যেখানে ১৫ জুলাইয়ের আন্তর্জাতিক বাজারের অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের এফওবি মূল্য যথাক্রমে ১,০৭৯ ও ১,০১৭ ডলার উল্লেখ ছিল। এর তুলনায় ১৫ এপ্রিলের দাম ছিল সয়াবিন তেলের জন্য ১,০০৩ ডলার ও পাম তেলের জন্য ১,০৫২ ডলার। এই সময়ের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পায় প্রায় ১০.৭ শতাংশ, আর পাম তেলের দাম কমেছে ৩ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিন্ন মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির ভিত্তিতে খোলা পাম তেলের প্রতি লিটার ১৯ টাকা ও সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার ১ টাকা দাম কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে ব্যবসায়ীরা প্রতিবেদনটিকে আপত্তিকর বলে অভিহিত করেন। তারা বলেন, “ট্যারিফ কমিশন আন্তর্জাতিক বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ের ভ্যাটের হিসাবও হয়নি, যার ফলে হিসাব ভুল হয়েছে।” তাই তাদের মতে, দাম কমানোর প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়।

আলোচনার শেষে সয়াবিন ও পাম তেলের বর্তমান দামের উপর নতুন করে বিশ্লেষণ করার সিদ্ধান্ত হয় এবং ২৭ জুলাই আবার বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা নেয়া হয়।

মেঘনা গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) তসলিম শাহরিয়ার বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম কমানোর যে হিসাব দিয়েছে, তা ঠিক নেই। সেখানে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ের ভ্যাট হিসেবে নেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম এক হাজার ১০০ ডলারের বেশি এবং পাম অয়েলের দাম প্রায় এক হাজার ১০০ ডলার। এসব কারণে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণযোগ্য হয়নি।”