খালেদা জিয়ার কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার চার্জশুনানি ২৭ নভেম্বর

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় চার্জশুনানির জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। বুধবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২’-এর বিচারক আবু তাহের এ দিন ধার্য করেন। বুধবার (২০ নভেম্বর) এ মামলার চার্জশুনানির দিন ধার্য ছিল। এ দিন খালেদা জিয়া ও প্রাক্তন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদনের শুনানি করেন তাদের আইনজীবী। তবে, এ দিন শুনানি শেষ না হওয়ায় আগামী ২৭ নভেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। এর পূর্বে, ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল চার্জশুনানি করেন৷ শুনানিতে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আর্জি জানান। এরপর থেকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদন শুনানি করছেন। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়। ওই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর ২০০৮ সাল থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে দীর্ঘ নয় বছর মামলাটির বিচার কাজ স্থগিত ছিল। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ মে সে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। এরপর থেকে মামলাটি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য রয়েছে। মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এমকে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, আমিনুল হক ও প্রাক্তন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন। আর যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে এখন বাকি আসামিদের বিচার চলছে। খালেদা জিয়া ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন জোট সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এসআর ওসমানী ও প্রাক্তন পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়ার কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।

গার্মেন্টস কর্মী খুনের মামলায় প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আনিসুল পাঁচ দিনের রিমান্ডে

ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের করা গার্মেন্টস কর্মী ফজলুল করিম খুনের মামলায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২০ নভেম্বর) তাকে কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমান তার দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্য দিকে, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদ তার জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গেল ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পালানোর সময় সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গেল ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নিলে গুলিবিদ্ধ হন ফজলুল করিম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় খুনের মামলা দায়ের করেন।

গুম-নির্যাতন-আয়নাঘরের হোতা কে? জানালেন চিফ প্রসিকিউটর

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রাক্তন পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির প্রাক্তন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসানসহ আট কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল সোয়া দশটায় তাদের ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে তাদের ব্যাপারে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জিয়াউল আহসান বিভিন্ন সময় র‍্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন, সর্বশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিরোধী দলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছে, তাদের তিনি একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছেন, গুম করেছেন, বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেনি। গুম করে পৈশাচিক নির্যাতন, আয়নাঘর, এসব কালচারের হোতা ছিলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে খুন করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়াও নাম জানা-না জানা বহু মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা... ৯০’-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার সারফিয়ান বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, যে ধরনের অত্যাচার করত, তার সাথে আমরা তুলনা করেছি। ভলকানের কসাইয়ের মত বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এ জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন।’

নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো পলক সালমান-আনিসুলদের

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ আটজনকে নতুন কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে নতুন কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, পল্টন, মিরপুর ও উত্তরা পশ্চিম থানার একাধিক মামলায় নতুন করে গ্রেফতার দেখানোর তালিকায় আরও আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য দীপু মনি, জুনাইদ আহমেদ পলক, হাসানুল হক ইনু, কামাল আহমেদ মজুমদার, শাজাহান খান ও রাশেদ খান মেনন। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেয়। এছাড়া উত্তরা পূর্ব থানার ফজলুল করিম নামক একজনকে গুলি করে হত্যা মামলায় আনিসুল হককে পাঁচ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। যদিও এই রিমান্ডের বিরোধিতা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে আত্মগোপন চলে যান দলটির সব নেতা। এর মধ্যে কেউ কেউ বিদেশ পাড়ি জমালেও আবার অনেকে দেশেই লুকিয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আট দিন পর ১৩ আগস্ট নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। পরে নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ। পরে আরও বেশ কয়েক দফা তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পর ১৯ আগস্ট রাতে ডা. দীপু মনিকে রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকেও রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ আগস্ট খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতার দেখানো হলো সাবেক আইজিপিসহ ৮ জনকে

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ আট কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এর আগে, বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক (ওসি) আবুল হাসান, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ডিএমপি মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, ডিএমপি গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক এবং ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন। গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের হাজির করতে আদেশ দিয়েছিল। পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ২০ নভেম্বর তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে যারা গ্রেফতার রয়েছেন তাদের আনা হবে ট্রাইব্যুনালে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ১২৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ৫ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় গার্মেন্টস কর্মী ফজলুল করিম হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদের আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন আনিসুল হককে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন ফজলুল করিম। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তাকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়।

আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে কমিটি গঠনে হাইকোর্টের নির্দেশ

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের করা বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চুক্তি পর্যবেক্ষণে এক মাসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার জন্য রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন আদেশ দেন। এর আগে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা অথবা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আবদুল কাইয়ুম। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর কার্যকর হওয়া আদানি (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিটটি করেন তিনি। তারও আগে গত ৬ নভেম্বর পিডিবি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি সচিবকে তিন দিনের মধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে একতরফা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা বা বাতিল করতে আইনি নোটিশ পাঠান এই আইনজীবী। রিট পিটিশনে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, অনেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন যে এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ নিম্নগ্রেডের কয়লার এই বিদ্যুতের জন্য অন্যান্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বেশি দাম দেবে। অস্ট্রেলিয়ায় আদানির মালিকানাধীন একটি খনি থেকে কয়লা সরবরাহ করা হবে ভারতে আদানির একটি বন্দরে। সেই কয়লা বাংলাদেশের খরচে তৈরি গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হবে। রিট আবেদনে আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয় বিপিডিবি মূলত এমন এক বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করেছে যেখানে আদানি অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারতে কয়লা আমদানি করবে এবং এর পুরো ব্যয় বাংলাদেশকে বহন করতে হবে। রিট পিটশনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলেন, এর সঙ্গে কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে পিবিডিবি কীভাবে এই একতরফা চুক্তি করেছে তা অকল্পনীয়।

নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন কামরুল ইসলাম

অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ এমন কোনো অপর্কম নেই যা করেননি সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। অত্যন্ত প্রভাব প্রতিপত্তির সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব করছেন তিনি। বিরোধী দলমত দমনেও তিনি অগ্রণী ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯টায় অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ নিউমার্কেট থানার ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, কামরুল ইসলাম ফ্যাসিস্ট সরকারের ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চার বারের এমপি, একবার ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও একবার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ আসামি অত্যন্ত ভয়ানক চরিত্রের অধিকারী। যা তার আচার, আচরণ, অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার মাধ্যমে প্রকাশ হতো। তিনি অত্যন্ত প্রভাব প্রতিপত্তির সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমন কোনো অপর্কম নাই যা তিনি করেন নাই। অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার, দুর্নীতিসহ বিরোধী দলমত দমনে তিনি অগ্রণী ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলেন। তার ভয়ে তার সংসদীয় এলাকাসহ বিভিন্ন মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারতেন না। এতে আরও বলা হয়, তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু নিরাপরাধ মানুষকে জেল-জুলুমের মাধ্যমে নির্যাতন করতেন। এ আসামি ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম কলঙ্কিত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি ফ্যসিস্ট সরকারের বহু অপকর্মের ঘনিষ্ঠ সহচর বলে দেশে ও বিদেশে জনশ্রুতি আছে। তার গ্রেফতারে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে শান্তি ফিরে এসেছে। এ আসামিসহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় মাহফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন, শামীম উসমান, মো. আবু মূসা, মাঈনুদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, আবির হোসেনসহ অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত ও চিরতরে পঙ্গু হয়। আব্দুল ওয়াদুদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে মর্মে স্বীকার করেন। প্রাথমিক তদন্তে এ আসামি মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়নের বিভিন্ন চেষ্টায় অব্যাহত রাখেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তকার্য অব্যাহত আছে। তিনি অতিগুরুত্বপূর্ণ একজন দলীয় পলিসি/ডিসিশন মেকার ছিলেন। তাকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হবে। রাষ্ট্রপক্ষ ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত তার ৮ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে আদালতে কামরুল ইসলাম বলেন, সব দিন তো একরকম যায় না। এই দিন, দিন না; সামনে ভালো দিন আসবে। তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেট এলাকা আমার অধীনে না। ওই এলাকার এমপি আমি নিজেও না। এ মামলায় আমাকে ৫৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমার নামটি হয়তো শেষ মুহূর্তে ভুলে এজাহারে লিখে দেওয়া হয়েছে। এর আগে, সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

দুই হাত তুলে দোয়া চাইলেন পলক

জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় অভিযুক্ত ১৩ আসামিকে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল। পরে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করার সময় ১৩ আসামির মধ্যে ছিলেন সাবেক আইসিটির প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার সময় তিনি দুই হাত মোনাজাতের মতো তুলে ধরেন এবং উপস্থিত সবার কাছে দোয়া চান। পরে হেঁটে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে চড়েন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের সামনে এই দৃশ্য দেখা গেছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক আদালত থেকে বের হয়েই সাংবাদিকদের উদ্দেশে দুই হাত উঁচু করে দোয়া চান। এসময় তার পেছনে পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। তবে তাকে স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই হাঁটতে দেখা গেছে। এর আগে ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রথমে বের হন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী, সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক। সবার পরে বেরিয়ে আসেন পলক। অন্যরা হাত নেড়ে সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও পলক দুই হাত মোনাজাতের মতো করে সবার কাছে দোয়া চান। এ সময় তার গায়ে ছিল একটি আকাশি রঙের সোয়েটার এবং সাদা শার্ট। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের টিনশেডর এজলাসে একসঙ্গে বসেছিলেন আসামিরা। ১২ জন পুরুষ আসামি কাঠগড়ার ভেতরে বসলেও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি বসেন কাঠগড়ার বাইরে। টানা প্রায় দুই ঘণ্টা শুনানি হয়। এ সময় তারা পেছনে বসে সব কিছু দেখছিলেন। শুনছিলেন আইনজীবীদের সাবমিশন। ফাঁকে ফাঁকে একজন আরেকজনের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা গেছে। পরে এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ ওইদিন এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ঠিক করা হবে। দুপুরে শুনানি শেষে এক ব্রিফিংয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসেই নয়, বিগত সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই গুম-খুন ও হত্যার বীভৎসতা সৃষ্টি করে। হিটলারের সময়ের ক্যাম্পের মতো ক্যাম্প তৈরি করে তাতে নিষ্ঠুরভাবে বন্দিদের নির্যাতন করা হয়েছে। তারা শুধু গণহত্যাই করেনি, নির্যাতনের যত রকম পন্থা রয়েছে সবই বাস্তবায়ন করেছে, যা হিটলারের নাৎসি বাহিনীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তাজুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন, তাদের মধ্যকার ১৩ জনকে আজ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আগামী দিনে যারা ফ্যাসিস্ট হতে চান, তাদের জন্য আজকের দিনটি একটি শিক্ষার দিন। মানবতাবিরোধী অপরাধ করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না, বিচারের মুখোমুখি হতে হয় তা আজকের দিনের এক বড় শিক্ষা।

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ পেছাল ১১৩ বার

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১১৩ বারের মতো পিছিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত। সোমবার (১৮ নভেম্বর) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ঠিক করেন। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

শেখ হাসিনার সকল অপরাধের সহযোগী ছিলেন মন্ত্রী-এমপিরা: তাজুল ইসলাম

গত ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনার যেসব অপরাধ করেছেন, মন্ত্রী-এমপিরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যা করেননি। আর তার এসব অপরাধের সহযোগী ছিলেন মন্ত্রী-এমপিরা।জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক নয় মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর শুনানিতে এসব কথা বলেন তাজুল ইসলাম।চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছরের শাসনামলে এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যেটা শেখ হাসিনা করেননি। ক্ষমতায় এসে পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ। ব্লাকআউট করে শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর গণহত্যাসহ আওয়ামী লীগের শাসনামলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা। আর উপস্থিত আসামিরা এসব অপরাধ সংগঠনে সহযোগিতা করেছেন। সর্বশেষ জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা, অঙ্গহানিসহ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গণহত্যার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে।শুনানির সময় ১৩ আসামি এজলাসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। তার আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে গারদখানা থেকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।শুনানির জন্য সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।যাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ট্রাইব্যুনালে আনার কথা থাকলেও অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় তাকে হাজির করা হয়নি।এর আগে গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল তাদের ট্র‍্যাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।ওইদিন আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয় জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। আবেদনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা।গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

গণহত্যা মামলা: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৮ নভেম্বর) গণহত্যার মামলার শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। এদিকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি শুরু হয়েছে। এদিন সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে গারদখানা থেকে আসামিদের এজলাসে তোলা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি শুরু হয়। এর আগে সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাদের ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো। সোমবার গণহত্যার ঘটনায় করা মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ ১৪ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনার কথা থাকলেও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাহজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। তবে অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে থাকায় আব্দুর রাজ্জাককে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। এছাড়া শাহজাহান খান অসুস্থ থাকায় প্রথমে আনতে না চাইলেও পরে সবার সঙ্গে তাকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গত ২৭ অক্টোবর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ তাদের হাজির করার আদেশ দেন।

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে। এসব আসামি হলেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিব। এর আগে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় তাদের। সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ট্রাইব্যুনালে আনার কথা থাকলেও অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় তাকে হাজির করা হয়নি। তারা হলেন-সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল তাদের ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ওইদিন আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয় জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। আবেদনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে অর্ধশতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে।

জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিবসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই ১৩ জনকে প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে তোলা হয়। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের হাজির করা হয়। এসময় ট্রাইব্যুনালের আশেপাশে পুলিশসহ শসস্ত্র বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ট্রাইব্যুনালের ভেতরে সাংবাদিক ও আইনজীবী বিভিন্ন সংস্থার লোক ব্যাতিত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। যাদেরকে হাজির করা হয় তারা হলেন আনিসুল হক, ফারুক খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, তৌফিক এলাহী, দিপু মনি, সালমান এফ রহমান, আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম। গত ১৭ অক্টোবর পৃথক দুই আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

দেশ টিভির ব্যবস্থপনা পরিচালক ২ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় দায়ের হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাকে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু-সাঈদ। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে, শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আরিফ হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় নেওয়া হয়।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই ভুক্তভোগী মো. সজীব স্কলাস্টিকা স্কুলের সামনে থেকে গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় গত ১৭ নভেম্বর সজীবের পিতা বিমানবন্দর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি আরিফ হাসানকে জিজ্ঞেসাবাদে এলোমেলো তথ্য প্রদান করায় সত্য উদঘাটনে ৩ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ।উল্লেখ্য, আরিফ হাসান দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স-অ্যাটকোর নেতা। ইতোপূর্বে তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানা গেছে।

সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আসিফ নজরুলের শোক

সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ১৬ নভেম্বর রাত ৪ টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম (৮১) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন)।তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে ড. আসিফ নজরুল এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, দুপুর দেড়টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মরহুমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোববার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে অফিসসমূহ যথারীতি খোলা থাকবে। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হন তিনি। একই সালের ২৯ সেপ্টেম্বর অবসরে যান ফজলুল করিম।

সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিমের ইন্তেকাল

দেশের ১৮তম প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম (৮১) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন)। শনিবার (১৬ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। আইনজীবীদের কাছে পাঠানো সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এক বার্তায় বলা হয়েছে, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম ইন্তেকাল করেছেন। তার নামাজে জানাজা বাদ যোহর ১টা ৪৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি ফজলুল করিম ১৯৪৩ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সুচক্রদণ্ডি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আহমেদ কবীর। তিনি আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদের বংশধর। ফজলুল করিম ১৯৫৮ সালে পটিয়ার কাজেম আলী হাইস্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ১৯৬০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৬৯ লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল’ হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আইনজীবী হিসেবে চট্টগ্রাম বারে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৭০ সালে হাইকোর্টে এবং ১৯৭৯ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। বিচারপতি করিম ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর তিনি হাইকোর্টের অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। দুই বছর পর স্থায়ী হন তিনি। ২০০১ সালের ১৫ মে তিনি আপিল বিভাগে যোগ দেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হন। একই সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।

আদালতে সাবেক ভূমন্ত্রীর ওপর ডিম নিক্ষেপ, ফাঁসির দাবি

খুলনায় আদালত চত্বরে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও ক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে উঠানো হলে খুলনার মহানগর হাকিম মো. রাকিবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।খুলনার ডুমুরিয়ায় এক নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় সহযোগিতা করার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার সহযোগী এমরান হোসেন গাজীকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এ মামলায়। দায়ের করা মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও খুলনা-৫ আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।এর আগে দুপুর ১টার দিকে তাকে আদালতে উঠানোর সময় বিক্ষুব্ধ জনতা নানা স্লোগান দেয় এবং মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা নারায়ণ চন্দ্রের গায়ে ডিম ছুড়ে মারে। বেশ কয়েকটি ডিম তার গায়ে লাগে। পরে আদালত থেকে কারাগারে নেয়ার সময়ও তারা ডিম নিক্ষেপ করে। এ মামলার আরেক আসামি ইমরান হোসাইনকে আদালতে হাজির করা হলে তাকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।আদালত সূত্র জানায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ওই নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরেরদিন হাসপাতালের ওসিসির (ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) সামনে থেকে কয়েকজন লোক তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে ওই রাতে তাকে সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির করে অপহরণ হয়নি বলে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। থানা থেকে বের হওয়ার পর আবার তাকে অপহরণ করে ডুমুরিয়ার একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ উদ্ধার করে ধর্ষণ হয়নি বলে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করে। এসব কাজে এজাজকে সহযোগিতা করেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র।তিনি আরও বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় বাদী এতদিন বিচার পাননি। তবে দেশে বর্তমানে আইনের শাসন কায়েম হওয়ায় নির্যাতিত নারী সঠিক বিচার পাবেন বলে আশা করছি।উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় নারায়ণ চন্দ্রকে আটক করেছিল বিজিবি।

কোনো অজুহাতেই জঙ্গিবাদ অ্যালাও করতে পারি না: আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কোনো অজুহাতে বা কোনো মোড়কে জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদকে অ্যালাও করতে পারি না। ২০০৫ সালে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত জেলা জজ আদালতের দুই বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে ও সোহেল আহমেদ স্মরণে আয়োজিত সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সাব্বির ফয়েজ বক্তব্য রাখেন। প্রয়াত দুই বিচারককে স্মরণ করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, জঙ্গিবাদ কত ভয়াবহ। এখানে আমাদের দুইটা শিক্ষা আছে। জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ কী ভয়ংকর জিনিস। মানুষকে কত যুক্তিহীন অমানুষ ও নিষ্ঠুরে পরিণত করে। আমার মনে হয় না পৃথিবীতে অন্য কোনো কিছু মানুষকে এতটা নিষ্ঠুর মরিয়া বেপরোয়া করতে পারে জঙ্গিবাদ। যে কোনো ধর্মের হতে পারে। ... এটা আমাদের শিক্ষা দেয় আমরা কোনোভাবেই জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদকে অ্যালাউ করতে পারি না। কোনো অজুহাতেই না। কোনো মোড়কেই না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের চারপাশে তো বন্ধুভাবাপন্ন দেশ নেই। তাদের সব সময় চেষ্টা থাকে বাংলাদেশকে হেয় করা, একটা ঘটনা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখা, এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করা। আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি দেশের ভালো চাই, মানুষের ভালো চাই, সমাজের ভালো চাই বন্ধুদের ভালো চাই, সন্তানদের ভালো চাই, আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে চাই, বাংলাদেশকে আর কোনো ফ্যাসিবাদ বা ষড়যন্ত্রের মুখ থেকে রক্ষা করতে চাই, আমাদের অবশ্যই জঙ্গিবাদ মৌলবাদ থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করতে হবে যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এর সুযোগ নিয়ে আমাদের দেশের সম্ভাবনাকে আমাদের অগ্রযাত্রাকে যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে। দেশি বা বিদেশি শক্তি। ২০০৫ সালের এ দিনে বিচারকদের বহনকারী মাইক্রোবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন জেলা জজ আদালতের দুই বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে ও সোহেল আহমেদ। ঘটনার দিন ১৪ নভেম্বর, বিচারক সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ে নিজ বাসভবন থেকে বেরিয়ে অপেক্ষমাণ মাইক্রোবাসে ওঠেন। এরপর অন্য এক বিচারককে নিতে মাইক্রোবাসটি থামে কোয়ার্টারের সামনে। চালক তাদের গাড়িতে রেখে ওই বিচারককে আনতে যান। এ সময় সেখানে অপেক্ষমাণ জেএমবির সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য ইফতেখার হাসান মামুন আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহমেদ এবং বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ জগন্নাথ পাঁড়ের। আহত অবস্থায় ধরা পড়েন হামলাকারী জেএমবির সদস্য ইফতেখার হাসান মামুন। এরপর দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন তৈরি হলে একে একে আটক হন জেএমবির শীর্ষনেতারা। ওই মামলায় আদালত ২০০৬ সালের ২৯ মে ৭ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। দেশের বিভিন্ন কারাগারে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ৬ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

সব বিদ্যুৎকেন্দ্র দ্রুত চালু করার নির্দেশ হাইকোর্টের

সব বিদ্যুৎকেন্দ্র দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, সরকার চাইলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারবে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কুইক রেন্টালের দায়মুক্তি আইন অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী রুল জারি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করা আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, আদালত মন্তব্য করেছেন যে, দায়মুক্তি দিয়ে তৈরি করা আইন অবৈধ এবং এককভাবে কোনো ব্যক্তির কাছে ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা গণতান্ত্রিক দেশে থাকতে পারে না, যা সংবিধানের পরিপন্থি। তিনি আরো বলেন, কুইক রেন্টাল আইন ছিল একটি "লুটপাটের বিশেষ বিধান", যা বিদ্যুৎ সরবরাহ না করেও চুক্তির পুরো টাকা পেতে সুবিধা দিয়েছিল। ২০১০ সালের কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, বিদ্যুৎ সরবরাহ না করলেও কোম্পানিগুলো সম্পূর্ণ টাকা পেয়ে যেত, যা আইনগতভাবে লুটপাটকে সমর্থন করেছিল। হাইকোর্ট সরকারের কাছে নির্দেশ দিয়েছে, যেন বন্ধ থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো দ্রুত চালু করা হয়, যাতে জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে পারে। এর পাশাপাশি, সরকার যদি চায়, তবে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারবে। এছাড়া, গত ২ সেপ্টেম্বর কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত আইন এবং দায়মুক্তি বিষয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এর আগে, কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি এবং ক্রয় সংক্রান্ত ৬(২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী রিট আবেদন করেছিলেন।

হাজী সেলিমের ছেলে সোলাইমান সেলিম কারাগারে

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক প্ল্যাস্টিক কারখানার কর্মচারী রাকিব হাওলাদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সোলাইমান সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য নথি প্রাপ্তি সাপেক্ষে দিন ধার্য করবেন আদালত। এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের তার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তবে এ মামলার মূল নথি না থাকায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জানা যায়, ১৬ বছরের কিশোর রাকিব হাওলাদার চকবাজারের হোসনী দালানস্থ কাজল প্ল্যাস্টিক কারখানায় কাজ করতো। ৫ আগস্ট দুপুরে সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে অংশ গ্রহণ করে। মিছিলটি চানখারপুল পৌঁছালে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে গুলি বর্ষণ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয় রাকিব। তাকে মিডফোর্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন মামলাটি দায়ের করেন।

অর্থপাচার মামলায় ফালুসহ ৩ জনকে অব্যাহতি

১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ এসএম জিয়াউর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।অব্যাহতি পাওয়া বাকি দুই আসামি হলেন– আরএকে সিরামিকস লিমিটেডের ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ কে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান।এদিন আসামিদের পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার তাঁদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন আদালত।সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি আরও বলেন, আসামিদের মধ্যে ইকরামুজ্জামান ও আনোয়ারুজ্জামান জামিনে আছেন। মোসাদ্দেক আলী ফালু পলাতক থাকায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি এ মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় ফালুসহ ৩ জনের নামে বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফালু ও অন্য ৩ ব্যবসায়ী আরএকে সিরামিকস ও রাখেন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির এমডি এস এ কে একরামুজ্জামান, স্টার সিরামিকস লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান এবং পরিচালক ম. আমির হোসাইন দুবাইতে ২০১০ সালে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, ট্রাই স্টার লিমিটেড ও ডেভেলপমেন্ট ইইউই নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তাঁরা অবৈধভাবে দেশটি থেকে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচার করেন।২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

ভোলার সাবেক এমপি মুকুলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় তোফায়েল আহমদের ভাতিজা ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আল-আমীন তালুকদার তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় গুলিতে নিহত হন নাহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সেলিমপুত্র  সাবেক এমপি সোলায়মানের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

রাজধানীর চকবাজার থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করতে যাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ রিমান্ড আবেদন করবেন বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, মামলার ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে’ সোলায়মান সেলিমকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। এ দিন তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে আদালতে উপস্থিত করা হবে। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গতরাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সোলায়মান সেলিমকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এরপর তাকে কোতোয়ালি থানা হাজতে রাখা হয়েছে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি এনামুল হাসান জানান, আজ তাকে চকবাজার থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হবে। যেহেতু চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেই মামলায় তার রিমান্ড চাওয়া হবে। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের নেতারা। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেলেও দেশে অবস্থান করা নেতারা আছেন আত্মগোপনে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। এখনো গা ঢাকা দিয়ে আছেন অনেকে। হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজি সেলিমপুত্র সোলায়মান সেলিম গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন। অবশেষে গতরাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সোলায়মান সেলিম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিটে ভোট করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর গত ১ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন সোলায়মানের বাবা হাজি সেলিম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন হাজি সেলিম। নৌকার প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে এমপি হওয়ার পর সংসদের ১৬ জন স্বতন্ত্র সদস্যকে নিয়ে জোট গঠন করেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন হাজি সেলিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজি সেলিম প্রার্থী না হলে ভোট করে আসনটি নিজের করে নেন তারই বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম।