
ভোলার সাবেক এমপি মুকুলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় তোফায়েল আহমদের ভাতিজা ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আল-আমীন তালুকদার তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় গুলিতে নিহত হন নাহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সেলিমপুত্র সাবেক এমপি সোলায়মানের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ
রাজধানীর চকবাজার থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিমের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করতে যাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ রিমান্ড আবেদন করবেন বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, মামলার ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে’ সোলায়মান সেলিমকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। এ দিন তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে আদালতে উপস্থিত করা হবে। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গতরাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সোলায়মান সেলিমকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এরপর তাকে কোতোয়ালি থানা হাজতে রাখা হয়েছে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি এনামুল হাসান জানান, আজ তাকে চকবাজার থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হবে। যেহেতু চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেই মামলায় তার রিমান্ড চাওয়া হবে। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের নেতারা। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেলেও দেশে অবস্থান করা নেতারা আছেন আত্মগোপনে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। এখনো গা ঢাকা দিয়ে আছেন অনেকে। হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজি সেলিমপুত্র সোলায়মান সেলিম গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন। অবশেষে গতরাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সোলায়মান সেলিম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিটে ভোট করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর গত ১ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন সোলায়মানের বাবা হাজি সেলিম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন হাজি সেলিম। নৌকার প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে এমপি হওয়ার পর সংসদের ১৬ জন স্বতন্ত্র সদস্যকে নিয়ে জোট গঠন করেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন হাজি সেলিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজি সেলিম প্রার্থী না হলে ভোট করে আসনটি নিজের করে নেন তারই বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম।

কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট
কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারার অধীনে কোনো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না এবং ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রহিত করা হলো। এখন সরকার চাইলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে পারবে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ব্যক্তির একক ক্ষমতা গণতান্ত্রিক দেশে থাকতে পারে না। এটি সংবিধানের পরিপন্থি। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। এর আগে গত ৭ নভেম্বর কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায়ের জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। সে সময় আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ। গত ২ সেপ্টেম্বর কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর আগে কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি এবং ক্রয় সংক্রান্ত ৬ (২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন। এ আইনটি সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ এর লঙ্ঘন বলে রিটে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ‘আদালত, ইত্যাদির এখতিয়ার রহিতকরণ’ সংক্রান্ত ৯ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না। ৬ (২) ধারার বলা হয়েছে, উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যেকোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫ এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিত সংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ ও দরকষাকষির মাধ্যমে উক্ত কাজের জন্য মনোনীত করিয়া ধারা ৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে। রিটে বিবাদী করা হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব,পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে। আইনের ৬(২) এবং ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

এ্যানি চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছয় মামলা বাতিল
২০১০ সালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে করা ছয়টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এসব মামলা বাতিলে রুল শুনানি শেষে বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভুঁইয়া। পরে আইনজীবী মো. কামাল হোসেন জানান, ২০১০ সালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় পাঁচটি ও ধানমন্ডি থানায় একটি মা পরে এসব মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদনের পর রুল জারি করা হয়। বুধবার রুলের শুনানি শেষে ছয়টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল
২০১৬ সালে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া এবং জাতির জনককে অবমাননার অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। ওই মামলার আসামি চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর আবেদনে বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশতিয়াক আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া। ২০১৬ সালে বিএনপির সাবেক নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদ আহমেদের নামে খোলা একটি ফেসবুক পেজ থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তার আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ছবিও প্রকাশ করা হয় ওই ফেইসবুক পেজে। এ ঘটনায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে এ অভিযোগ করেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর (সংশোধিত ২০১৩) ৫৭ ধারায় অভিযোগটি করা হয়। আদালত বাদীর বক্তব্য শুনে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে বোয়ালখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ইরাদ সিদ্দিকীকে আসামি করা হয়। পরে ইরাদ সিদ্দিকী এই মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক মেয়র আতিক
রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।একই মামলায় এ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদীরও ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাদের এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে, গত ৭ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানার পৃথক তিনটি হত্যা মামলায় আতিকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছিলেন।শিক্ষার্থী রফিক হাসান হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মোহাম্মদপুর থানার আরও দুই হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে ডিএনসিসি’র সাবেক মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।এদিকে, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস শহীদ ও সাদেক খানসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকেও আজ আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।

বিদুৎ নিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিকে ‘স্বার্থবিরোধী ও অসম’ আখ্যায়িত করে তা বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট আবেদন করেছেন একজন আইনজীবী।বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল কাউয়ুম।রিটকারী আইনজীবী বলেন, বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এটি শুনানি করা হবে।এই আইনজীবী বলেন, আমাদের প্রেরিত লিগ্যাল নোটিশে বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আজ আমরা পিডিবি (সরকার) ও আদানি গ্রুপের মধ্যকার সম্পাদিত অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থপরিপন্থী বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করি। ওই পিটিশনে আদানি গ্রুপের সাথে সম্পাদিত অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থপরিপন্থী চুক্তির শর্তসমূহ সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সংশোধন করতে আদানি গ্রুপ রাজি না হলে তা বাতিল করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়েছি।ভারতের বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের আদানি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ও আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেডের (এপিজেএল) মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয়। ২৫ বছরের জন্য এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর করে তারা। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার। এখনো সেখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করছে ঢাকা।আদানির সঙ্গে চুক্তি সই করে আওয়ামী লীগ সরকার। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন হয় আদানি গ্রুপের। বকেয়ার দাবিতে গ্রুপটি বারবার তাগাদা দেয় এবং আলটিমেটাম দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে গ্রুপটি বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমিয়ে দিয়েছে। শুরু থেকেই আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে সমালোচনা ছিল। তাছাড়া তাদের বিদ্যুৎ না পেলেও খুব একটা সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলেন ট্রাইব্যুনাল
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।ট্রাইব্যুনালে আবেদনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বিএম সুলতান মাহমুদ।এদিকে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারানো লিমন সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক র্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউট কার্যালয়ে লিমন নিজে এসে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ন্যায়বিচার পাইনি। ন্যায়বিচারের আশা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলাম।তাজুল ইসলাম বলেন, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ এসেছে। তদন্ত সংস্থা অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ও গুমের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে বলে জানান তিনি। জিয়াউল আহসান এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালের আদেশে গ্রেফতার আছেন। তাকে এক দিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল এবং আদালত অনুমতি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে আইজিপিকে চিঠি
শেখ হাসিনাসহ জুলাই-অগাস্টের গণহত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলামকে চিঠিটি পাঠান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে গণহত্যা বিবেচনা করে এ আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অর্ধশতাধিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশেই এখনও আত্মগোপনে আছেন।গত ১০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করার জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার আসামি শেখ হাসিনাসহ সব পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে সরকার। পলাতক আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।তিনি বলেছিলেন, খুব দ্রুতই ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হবে। পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্র পৃথিবীর যে দেশেই থাকুক তাদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে আমির হোসেন আমু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ছয় দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমান তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।এর আগে বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা তার এ মামলায় ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানার নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রব নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়।

সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ৬ দিনের রিমান্ডে
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ৬ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রে শরীফুর রহমান শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিপ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার ৬ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।এর আগে সোমবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে।জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তাঁর শ্যালক আব্দুর রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
.jpeg)
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারি করছে সরকার
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে সরকার রেড নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দেওয়া আওয়ামী লীগের অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে না জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি কোনোভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই।’বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গেল জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বিচার কাজও শুরু হয়েছে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আত্মগোপনে চলে যান দলটির শীর্ষ নেতারা। অনেকে দেশে লুকিয়ে থাকলেও আবার কেউ কেউ পালিয়ে বিদেশ গেছেন। যাদের অনেকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে।স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ। সেখানে অনেক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে জামায়াতের কয়েকজন শীর্ষ নেতারা ফাঁসির দণ্ড কার্যকরও করা হয়।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পট পরিবর্তন হলে নিজেদের গঠন করা ট্রাইব্যুনালেই আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার হচ্ছে।

আসিফ নজরুলকে হেনস্তার নিন্দা জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তার নিন্দা জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব ড. আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক রাষ্ট্রীয় সফরের সময় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা এয়ারপোর্টে কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক তাঁর সঙ্গে ন্যাক্কারজনক ও উদ্ধত আচরণের ঘটনা ঘটেছে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধির সঙ্গে এমন আচরণ শুধু শিষ্টাচারবিরোধী নয়, বরং এটি আমাদের জাতীয় মর্যাদা, দেশপ্রেম এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি চরম অবমাননার শামিল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এই অসভ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। জাতীয় মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এবং এমন অপকর্মের পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে।

গণহত্যা মামলায় প্রথম জবানবন্দি দিলেন সাবেক আইজিপি মামুন
ট্রাইব্যুনালের মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে তিনি তার জবানবন্দি দেন। এটি ছিল জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি কর্মকর্তার জবানবন্দি।এর আগে ৩০ অক্টোবর গণমাধ্যমে খবর আসে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন গণহত্যার মামলায় রাজসাক্ষী হতে পারেন। সে সময় কারাসূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি এসব তথ্য প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গণহত্যার ঘটনায় পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এবং এর সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের পরবর্তী নির্দেশনার উপর নির্ভর করবে। এমনকি তিনি রাজসাক্ষী না হলেও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছিল।এর কিছুদিন পর, গত ৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা থেকে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি একাধিক থানার ১৭টি মামলায় অভিযুক্ত। তাকে কয়েক দফায় ৬৬ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।

আদালতে অন্য আইনজীবীদের হাতে মার খেলেন আমুর আইনজীবী
আদালতে অন্য আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিপ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।রিমান্ড শুনানিতে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্যটি রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী। তখন উত্তেজিত আইনজীবীরা তাকে মারধর শুরু করেন। ধাক্কা দিয়ে আদালত থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তিনি দরজার সামনে পড়ে যান। তখন তাকে লাথি মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাকে তুলে আদালত থেকে বের করে দেন।রিমান্ড শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমু শেখ হাসিনার বাবাকে বিপথে নিয়েছিলেন। সেভাবেই শেখ হাসিনাকে বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। উনি ১৪ দল নিয়ে মিটিং করেন। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেকোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে হবে। তারা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট আর তৈরি না হোক। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। এদের বিচার হলে এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট দল আসবে না।এদিকে ভুক্তভোগী আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী বলেন, আদালত চলাকালে আমাকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখানে কোনো ন্যায়বিচার নেই। আমি বিচার চাই।
.jpeg)
সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ৬ দিনের রিমান্ডে
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শাহিন রেজা বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আমুর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সকালে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই নেতাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অন্যদিকে আমুর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমুকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রব নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়।

২৭তম বিসিএসের বঞ্চিতদের শুনানি ৪ ডিসেম্বর
২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করার রায় বৈধ ঘোষণা বহাল রেখেই আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে ১,১১৪ জন প্রার্থীর রিভিউ আবেদন শুনবেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। রিভিউ আবেদনের ওপর আগামী ৪ ডিসেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।প্রসঙ্গত, ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করার হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখে। এরপর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা লিভ টু আপিলও নিষ্পত্তি করা হয়।২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় সরকার ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে দেয়। এর বিরুদ্ধে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা রিট আবেদন করেন। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই, বিচারপতি মো. আবদুর রশিদ ও বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের বেঞ্চ সরকারের সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট রিট আবেদনকারীরা আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন। অন্যদিকে, হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করেন। বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গত বছরের ১১ নভেম্বর এই রায় দেন। সরকারের করা লিভ টু আপিল আবেদনও আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে।২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি, ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩,৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। এরপর ৩০ জুন জরুরি অবস্থার সরকার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে দেয়। পরবর্তী সময়ে ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, এবং ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে ৩,২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করতে অর্থ দেন শমী কায়সার’
জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অর্থের জোগান দিয়েছেন অভিনেত্রী শমী কায়সার। তার দেওয়া অর্থের উৎস এবং অর্থের হিসাব জানতে তার ব্যাংক হিসাব এবং লেনদেনের পরিমাণ ও তারিখ জানতে চায় পুলিশ। এ লক্ষ্যে শমী কায়সারকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শমী কায়সারকে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার এসআই মৃত্যুঞ্জয় পন্ডিত মিঠুন।রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামী শমী কায়সার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারকারের নেতাকর্মীদের উসকানি দেন। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী। মামলার ঘটনার সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এ মামলার সঙ্গে জড়িত অজ্ঞাতপরিচয় অন্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য এবং মামলায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারে আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাহলে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন, অজ্ঞাতপরিচয় আসামি শনাক্ত ও গ্রেফতার এবং আলামত উদ্ধার সম্ভব হবে। এসব কারণে আসামিকে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অর্থের জোগান দিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার দেওয়া অর্থের উৎস এবং অর্থের হিসাব জানার জন্য তার ব্যাংক হিসাব এবং লেনদেনের পরিমাণ ও তারিখ জানা প্রয়োজন। এ অবস্থায় শমী কায়সারকে পুলিশ হেফাজতে এনে মামলার ঘটনার গভীর ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম ও পূর্ব থানা পুলিশ।মামলা সূত্রে জানা যায়, ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ী গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এসময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। শমী কায়সার এ মামলায় ২৪ নম্বর ও তাপস ৯ নম্বর এজহারনামীয় আসামি।

নতুন মামলায় সালমান-আনিসুলসহ গ্রেফতার ৫ জন
রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরা-পূর্ব থানার পৃথক হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ৫জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।এসব মামলায় গ্রেফতার হওয়া অন্যরা হলেন, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব সাবেক সচিব জাহাঙ্গীর আলম।এর আগে বুধবার সকালে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর, খিলগাও থানার হত্যা মামলায় ব্যারিস্টার সুমন, মিরপুর থানার হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেফতার দেখানো হয়। লালবাগ থানার মামলায় জাহাঙ্গীর আলম এবং উত্তরা-পূর্ব থানার হত্যা মামলায় আনিসুল হককে গ্রেফতারের আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানিত আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। এসময় তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশও দেন বিচারক।

পিলখানা হত্যা মামলার পুনঃতদন্তে কমিশন কেন নয় জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দফতর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ হত্যার নেপথ্যের ঘটনা পুনঃতদন্ত করতে কেন কমিশন গঠন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।একইসঙ্গে রুলে পিলখানা হত্যা মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে গত রোববার (৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে বিষয়টি জানতে চান। সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। পরে এ সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন রিটকারী আইনজীবী। তিনি বলেছিলেন, ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার নেপথ্যের কারণ জানতে চায় দেশের জনগণ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুনঃতদন্তের কথা বললেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।পিলখানা ট্রাজেডির পর জাতীয় তদন্ত কমিশনের একজন সদস্য অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির বলেন, ওই সময় সরকারের হস্তক্ষেপে শুধু কাগুজে তদন্ত হয়। এর প্রতিবাদ করলে তাকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। দায় এড়াতে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ অসংলগ্ন কথা বলছেন বলেও জানান সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।এর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দফতর পিলখানায় বিদ্রোহের সময় সেনা অফিসারদের হত্যার ঘটনা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে রিট আবেদন করা হয়।একই সঙ্গে বিডিআর বিদ্রোহের দিনকে সৈনিক শহীদ দিবস এবং হতাহতদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আইন, বিচার ও মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি ও র্যাবের ডিজিকে বিবাদী করা হয়।গত ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদসহ দুই আইনজীবী। বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা অফিসারসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।তার আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ফের তদন্ত করতে নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন ও ওই ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের ২ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষারসহ ৯ জন আইনজীবী।নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা শাস্তির আওতায় আসেনি। অনেক নিরীহ মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিডিআর সদর দপ্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা জনগণ জানতে পারেনি।নোটিশে আরও বলা হয়, সেনা অফিসারদের জীবন রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল নোটিশগ্রহীতাদের। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী এ দায়িত্ব রক্ষায় তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার বলেন, বিডিআর বিদ্রাহের ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাতে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ওই ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। আবার অনেক নিরপরাধ মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে এ ঘটনা ফের তদন্ত করতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে বলেছিল। নোটিশের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়াই হাইকোর্টে রিট করা হয়।

আরও এক মামলায় গ্রেফতার হাজি সেলিম
রাজধানীর লালবাগ থানায় দায়েরকৃত আরও একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো সাবেক সংসদ সদস্য, হাজী সেলিমকে। একই মামলায়, তার সাথে গ্রেফতার দেখানো হয় চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওনকে।মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে মহানগর হাকিম শাহিন রেজার আদালতে হাজির করে গ্রেফতারের আবেদন জানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গ্রেফতার দেখিয়ে, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।এ নিয়ে ৫টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো হাজী সেলিমকে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বকশিবাজার আলিয়া মাদরাসার সামনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়; ছাত্রলীগ ও যুবলীগ গুলি চালালে ফজলুল করিম নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। ওইসময়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে গুলির নির্দেশ দেন এই দুই আসামি।পরে আহত ব্যক্তি নিজেই এই হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত ১৫টি মামলার এজহারনামীয় আসামি হাজী সেলিম।

সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা বিকেলে
সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে আজ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টে এই সভা ডেকেছেন।এর আগে গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আতিকুস সামাদের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) হাইকোর্ট সূত্রে বিষয়টি জানা যায়।সেদিন আদেশে বলা হয়, আগামী ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে প্রশাসন ভবন-৪ এর দোতলায় অবস্থিত কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।ফুল কোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও পরামর্শ করে থাকেন। নেওয়া হয় বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা: খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি ১০ নভেম্বর
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য আগামী ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।সোমবার (৪ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অরফানেজ ট্রাস্টের নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান।একইসঙ্গে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।বাকি চার আসামি হলেন সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।

পিলখানা হত্যা: পুনঃতদন্ত কমিশনের বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট
পিলখানায় বিডিআর হত্যার নেপথ্যের কারণ উদঘাটনে পুনঃতদন্ত কমিশন হয়েছে কিনা, তা রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে এই তথ্য জানতে চান।আগামী মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।বিচারপতিরা বলেন, ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার নেপথ্যের কারণ জানতে চায় দেশবাসী। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুনঃতদন্তের কথা বললেও এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।এর আগে, পিলখানা ট্রাজেডির পর হওয়া জাতীয় তদন্ত কমিশনের একজন সদস্য অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির বলেন, ওই সময় সরকারের হস্তক্ষেপে শুধু কাগুজে তদন্ত হয়। এর প্রতিবাদ করলে তাকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। দায় এড়াতে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ অসংলগ্ন কথা বলছেন বলেও অভিযোগ করেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দফতর পিলখানাকে রক্তে রঞ্জিত করে একই বাহিনীর কিছু সদস্য। সেই বিদ্রোহে দেশের সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।