১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ


১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার কিছু পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের টিএফআই-জেআইসি সেলের তত্ত্বাবধানে গঠিত অপারেশনের আওতায় সংঘটিত গুম, খুন এবং চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে এসব সেনা কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত।

আদালত একইসঙ্গে মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য পলাতক আসামিদের হাজির করার লক্ষ্যে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২০ নভেম্বর।

গত ১১ অক্টোবর, সেনা সদর দপ্তর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অভিযোগপত্রে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওইদিন ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, “সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এলপিআরের একজন এবং চাকরিতে থাকা ১৫ জনসহ মোট ১৬ জনকে সেনা সদরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। ৯ অক্টোবরের মধ্যে তাদের রিপোর্ট করতে বলা হয়। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন সময়মতো উপস্থিত হন।”

তিনি আরও জানান, এলপিআরে থাকা ওই কর্মকর্তাসহ ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। অপরদিকে, একজন আত্মগোপনে রয়েছেন এবং অবশিষ্ট ৯ জন ইতিমধ্যে অবসর গ্রহণ করেছেন।

এর আগে ৮ অক্টোবর গুম ও খুনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ডিজিএফআই প্রধানসহ ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সব মিলিয়ে মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনার ঝড়, কারণ রাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এত সংখ্যক কর্মরত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একযোগে গ্রেপ্তারি আদেশ জারি হলো।

আদেশ অনুযায়ী, ২১ অক্টোবরের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ ছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি। সে অনুসারেই বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হয় এবং পরে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×