মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে গেলেন ফায়ার ফাইটার শামীম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:২৪ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকার টঙ্গীতে একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন নেভানোর সময় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মীর মধ্যে একজন, শতভাগ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার বিকেলে টঙ্গীর ওই গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় চারজন ফায়ার ফাইটার দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে শামীম আহমেদ এবং নুরুল হুদার দেহের ১০০ শতাংশ পুড়ে যায়। আহতদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল।
তালহা বিন জসিম আরও জানান, শামীম আহমেদ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০৪ সালের ১৬ আগস্ট ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। তার বাড়ি নেত্রকোনায়, বিবাহিত এবং তিন সন্তান রয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, চারজন দগ্ধ ফায়ার ফাইটারের মধ্যে তিনজন এখনও চিকিৎসাধীন। তারা হলেন—১০০ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, ৪২ শতাংশ দগ্ধ অফিসার খন্দকার জান্নাতুল নাঈম এবং ৫ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার জয় হাসান।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে দুজন ফায়ার ফাইটার শতভাগ দগ্ধ হয়েছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। চল্লিশ ভাগের বেশি পুড়ে যাওয়া রোগী আশঙ্কাজনক। তবে দেশে চিকিৎসা করলেও ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আবেগের চেয়ে সায়েন্সকে বেশি গুরুত্ব দেব। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের যা করা দরকার সব করব।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, “সরকার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দগ্ধদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে। আল্লাহর কাছে সবাই দোয়া করবেন যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।”
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সোমবার রাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে গিয়ে দগ্ধদের খোঁজ নেন। তিনি বলেন, “ফায়ার ফাইটারদের মূল লক্ষ্য আগুন নিয়ন্ত্রণ করা ছিল। তবে বিস্ফোরণের কারণে তারা দগ্ধ হয়েছেন। তারা সবাই পিপি পরেছিলেন, তবে আগুনের তাপমাত্রা এত বেশি ছিল যে পিপি পোড়ে গেছে।”