আদালতে কাঁদলেন ছাগলকাণ্ডের মতিউর, মেলেনি জামিন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৪:৪৮ পিএম, ১২ আগস্ট ২০২৫

ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান আদালতে জামিন চেয়ে অশ্রুসিক্ত হন। তবে তার এই কান্না বিচারকের মন গলাতে ব্যর্থ হয়। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নাকচ করেন।
আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলায় সেদিন মতিউর রহমানকে আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান জামিনের আবেদন উপস্থাপন করেন। আইনজীবীর বক্তব্য শেষে আসামি নিজেও কিছু বলার সুযোগ চান।
আদালতের অনুমতি পেয়ে মতিউর বলেন, “আমি কারাগার থেকে দুদককে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আজ সেই চিঠি আপনাকে দিলাম। আপনি দয়া করে পড়ুন এবং যা আদেশ দেবেন, আমি তা মেনে নেব।”
তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে যোগ করেন, “আমার পরিবার ভেঙে গেছে। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই কারাগারে। আমার মা প্যারালাইজড, দেখাশোনার কেউ নেই।” কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আদালতের কাছে জামিনের আবেদন জানিয়ে বলেন, “জামিন পেলে আমার কাছে থাকা নথি আদালতে উপস্থাপন করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারব।”
জবাবে আদালত জানান, এখনই দোষী বা নির্দোষ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। তাই তাকে আরও ধৈর্য ধরতে হবে। এরপর জামিন আবেদন খারিজ করা হয়।
দুদকের নথি অনুযায়ী, গত বছরের ২ জুলাই মতিউর ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়। ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েসহ পাঁচজনের বিবরণী জমা দেন। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি দুদক মামলা করে এবং ১৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তারের পরদিন তিনি কারাগারে যান।
মতিউরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে কোরবানির জন্য তার ছেলে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কেনেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা তোলে। পরবর্তীতে তার পরিবারের বিপুল সম্পদ নিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, মতিউর ও তার পরিবারের নামে রয়েছে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট, তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব। এ ছাড়া, গত বছরের ২৪ জুন আদালত মতিউর, তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।