ডলারের মজুদ আপদকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৪২ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার বর্তমান মজুদ আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন সাবেক গভর্নর।
তিনি বলেন, ডলারের চাহিদা কমলেও বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নে, এ পদক্ষেপ আমদানিকারকদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করছে কিনা—জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “ডলারের দাম কিছুটা যদি স্থিতিশীল না থাকে তাহলে খারাপ প্রভাব পড়বে। যারা রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের বিষয়টাও দেখতে হবে। কারণ ওরাই তো আমাদের চালিকা শক্তি।”
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনছে, এটা সত্যি। কিন্তু এখন আমাদের হাতে যে মজুদ আছে, তা সংকটকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়। হঠাৎ বড় ধরনের আমদানির প্রয়োজন হলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। অনেকের ধারণা, ডলার শুধু আমদানির জন্য ব্যবহৃত হয়। আসলে তা নয়। তাই বাড়তি মজুদ থাকা জরুরি।”
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, “২০০৭–০৮ সালে সিডর ও আইলার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছিল। তখনও নানা চাপ সামাল দিতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, রিজার্ভ আরও বাড়ানো দরকার।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০২২ সাল থেকে দেশে ডলারের দাম দ্রুত বেড়ে যায়। ৮৫ টাকা থেকে ডলার গিয়ে দাঁড়ায় ১২২ টাকায়। এতে সরবরাহ ও চাহিদার বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কঠিন প্রভাব ফেলে। ডলার বিক্রি করেও তখন নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে অর্থ পাচার রোধে সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রবাহ দেখা গেছে। এতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে দামের পতন ঘটার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনে মূল্য স্থিতিশীল রাখছে। ফলে রিজার্ভ যেমন ধীরে ধীরে বাড়ছে, তেমনি বাজারে ডলারের দাম এখনও ১২০ টাকার ওপরে রয়েছে।
সম্প্রতি পিপিআরসির এক জরিপে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের কারণে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ অস্বস্তিতে আছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা জানান, তিনি প্রতিবেদনটি দেখেছেন।