হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য শুরু, সাক্ষীর ঠিকানা প্রকাশ করা যাবে না


হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য শুরু, সাক্ষীর ঠিকানা প্রকাশ করা যাবে না

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে রোববার (২ আগস্ট)। এদিন মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ শুরু হবে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে এ কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারও করা হতে পারে।

এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। তিনি জানিয়েছেন, সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের বিধি ১৪ ও ১৮(৪) অনুসারে কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে:

১. সাক্ষীর ছবি বা ভিডিও ধারণ এবং প্রচার নিষিদ্ধ,
২. কেবল নাম প্রকাশ করা যাবে,
৩. ঠিকানা বা অবস্থান কোনোভাবে প্রকাশ করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর জন্য গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে। এতে শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় অন্যতম আসামি আবদুল্লাহ আল-মামুন ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট দিন ধার্য করে আদালত।

প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা শুনানিতে অংশ নেন। শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে শুনানি করেন আমির হোসেন। গ্রেফতার হয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির থাকা আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

এর আগে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ১৬ জুন দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয় আদালত। সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি। ফলে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে শুনানি পরিচালিত হয়।

এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গত ১ জুন ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি পৃথক অভিযোগ যুক্ত করা হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। এরপর এ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া প্রথম মামলাটিই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

শুধু এই মামলাই নয়—আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগেও আরেকটি মামলা রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া আরেক মামলার আসামিও তিনি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×