তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি ১৩ আগস্ট
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:২৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৫

দুই দশক আগে সংঘটিত ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় নিয়ে আবারও আলোচনায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি ফের শুরু হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৩ আগস্ট।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো অনুষ্ঠিত হয় আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি। এদিন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চ, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে, পরবর্তী শুনানির জন্য ১৩ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অন্যান্য আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে এই আপিল দায়ের করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এছাড়াও, বিএনপির পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৭ জুলাই হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর প্রথম শুনানি হয়। সেদিন পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪ জুলাই নির্ধারণ করা হলেও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে ৩১ জুলাই নতুন করে শুনানি কার্যতালিকায় ওঠে।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করে। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করার অনুমতি পায়। একই সঙ্গে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেয় আদালত।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ১৯ ডিসেম্বর, সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথকভাবে দুটি লিভ টু আপিল দাখিল করে। গত ১৩ মার্চ এই আবেদন দুটি চেম্বার জজ আদালতে উপস্থাপন করা হলে, আদালত তা নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এরপর একত্রে শুনানি কার্যক্রম শুরু হয়।
লিভ টু আপিলের ওপর প্রাথমিক শুনানি শুরু হয় ১৫ মে এবং ২৮ মে তা মঞ্জুর করা হয়। পরে ১৭ জুলাই থেকে পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির প্রায় ৩ শতাধিক নেতাকর্মী।
ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। এরপর বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বাতিল করে হাইকোর্ট খালাসের রায় দেয়, যার বিরুদ্ধে আপিল চলমান রয়েছে।
এ মামলার বিচারিক রায়ে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং লুৎফুজ্জামান বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সব আসামিকে খালাস দেন। বিচারপতি আসাদুজ্জামান বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।