গুমের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার স্মৃতি এখনো তাড়া করে ফিরছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে। দীর্ঘ ৯ বছর পর তিনি শনিবার (১১ অক্টোবর) ফিরে গেলেন সেই সীমান্তপথে, যেদিক দিয়ে তাকে চোখ বেঁধে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি ডকুমেন্টারি প্রজেক্টের অংশ হিসেবে তিনি সিলেট সীমান্ত পরিদর্শন করেন। সেখানেই এক টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপকালে সেই দিনের আতঙ্কঘন মুহূর্তগুলো স্মরণ করেন সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, “আমাকে যেদিন চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তো কিছুই বুঝতে পারিনি। জানতামও না যে, আমাকে বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছে। ভেবেছিলাম হয়তো ক্রসফায়ারের উদ্দেশে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এখানে এসে মনে হচ্ছে, এই রাস্তা দিয়েই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”
সালাহউদ্দিন জানান, ভারতের শিলংয়ে পৌঁছানোর পর চোখের বাঁধন খোলার পরই তিনি বুঝতে পারেন যে তাকে হয়তো ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “যখন ছেড়ে দেওয়া হলো, তখন পথচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশের কাছে যাই। কিন্তু পরে আমাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়। তখন ভাবছিলাম, বাকি জীবনটা হয়তো এখানেই কাটাতে হবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে নেওয়া হয়। পরিবার অভিযোগ করে, তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে ধরে নিয়ে যায়। প্রায় দুই মাস পর, একই বছরের ১১ মে ভারতের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এই দীর্ঘ গুম ও নির্বাসনের অভিজ্ঞতা এখন চলচ্চিত্রের ফ্রেমে ধরা পড়ছে—যা শুধু সালাহউদ্দিনের নয়, দেশের গুম রাজনীতির এক নীরব সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।