ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ


ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী সড়ক যোগাযোগ আজ চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উত্তাল আন্দোলনের জেরে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে স্থবির হয়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এর ফলে পদ্মা সেতু পেরিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ কর্মসূচি দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। স্থানীয়রা ফরিদপুরের আলগী হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেন। কিন্তু সকাল ১০টা পার হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। একই সময়, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-খুলনা মহাসড়কের মুনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড ও সুয়াদী পাম্পের পাশে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় আন্দোলনকারীরা। ফলে রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে, আটকে যায় শত শত ট্রাক, বাস ও প্রাইভেট যানবাহন।

এক ট্রাকচালক মালেক শেখ জানান, “সকালে পদ্মা সেতু পার হয়ে মুনসুরাবাদ পৌঁছাতেই রাস্তা বন্ধ পেয়ে দাঁড়াতে হয়। খুলনার মোংলা বন্দরের দিকে যাচ্ছিলাম। এখন রাস্তায় আটকে ভোগান্তিতে পড়েছি।”

এদিকে, বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া কামাল মোল্লা, হাসান শরীফ ও হেমায়েত মাহমুদ জানান, “আমরা জানতাম না রাস্তার এমন অবস্থা হবে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ভ্যানে ও হেঁটে আসছি। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা ভাঙ্গাবাসীর দাবির প্রতি একাত্মতা জানাই।”

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন তাদেরকে তিন দিন সময় চেয়েছিল বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও তাদের দাবির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন তারা। বিক্ষোভকারীদের ভাষায়, “রক্ত লাগে রক্ত নে, ভাঙ্গাবাসীর মুক্তি দে”, “লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে”, “আমার মাটি, আমার মা, নগরকান্দায় দেবো না” - এই স্লোগানে মুখর ছিল পুরো এলাকা।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা চলমান রয়েছে। তাই আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তারা সড়কে জানমালের নিরাপত্তা বিবেচনায় শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করে সরে যান।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল জানান, “হাইওয়ের চারটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুরের চেষ্টা করে, তাহলে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

এর আগেও গত শুক্রবার একই দাবিতে নয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল এলাকাবাসী। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ফের শুরু হওয়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকের আন্দোলন চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×