সিলেটে যৌথবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার আরও ১৩ হাজার ঘনফুট পাথর, আটক ২
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:১৮ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও আশপাশের এলাকায় সাদাপাথর লুটপাট ঠেকাতে যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে আবারও বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার হয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) দিনের অভিযানে মোট ১৩ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয় এবং পাথর চুরিতে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আরডিসি আশিক মাহমুদ কবিরের নেতৃত্বে ধোপাগুল সংলগ্ন সালুটিকর ভাটা এলাকার একটি স্টোন ক্রাশার মিল থেকে উদ্ধার করা হয় ১১ হাজার ঘনফুট পাথর। সেগুলো মাটিচাপা দিয়ে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। স্থানীয়দের ভাষ্য, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় পাচারকারীরা পাথর চোরাচালান করতে না পেরে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখে।
অন্যদিকে একইদিন গোয়াইনঘাট উপজেলার বিন্নাকান্দি এলাকায় আরও ২ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। এ অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও রতন কুমার অধিকারী।
এর আগে শনিবার ধোপাগুল এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ও ক্রাশার মিলে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে প্রশাসন। টানা চার দিনের অভিযানে মোট প্রায় ৪ লাখ ঘনফুট সাদাপাথর উদ্ধার হয়েছে।
প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই সাদাপাথর এলাকায় অবাধ লুটপাট শুরু হয়। চক্রগুলো প্রকাশ্যে নদীর তীর থেকে স্তূপকৃত পাথর নৌকায় করে সরিয়ে নেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু সিলেট সদর নয়, কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায়ও চলছে একযোগে অভিযান। শুক্রবার জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়, যা পুনরায় ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর সাদাপাথর এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খনিজ সম্পদ অধিদপ্তরের মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলমগীর আলমকে গ্রেপ্তার এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ধোপাগুল স্টোন ক্রাশার এলাকায় বিপুল পরিমাণ পাথর মাটিচাপা দিয়ে লুকানো হয়েছে। অনেক জায়গায় বালু ঢেকে রাখা হলেও কিছু জায়গায় পাথরের স্তূপ খোলা অবস্থায় রয়ে গেছে।
এদিকে হাইকোর্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, সাত দিনের মধ্যে উদ্ধারকৃত সব পাথর যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং লুটে জড়িতদের তালিকা আদালতে জমা দিতে হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ সাদাপাথর লুট হয়ে গেছে। এর ফলে পর্যটক কমে এসেছে চোখে পড়ার মতো। বহু পাথর ছাতক হয়ে নদীপথে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচার হয়ে গেছে।