চট্টগ্রামে ইপিজেডের আগুন পাঁচ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ভেঙে পড়ছে দেয়াল


চট্টগ্রামে ইপিজেডের আগুন পাঁচ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ভেঙে পড়ছে দেয়াল

চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় একটি টেক্সটাইল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 'আদম ক্যাপ্স' নামের নয়তলা ভবনটিতে দুপুর ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলেও, ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুনের দাপট আরও বেড়েছে। একের পর এক বিস্ফোরণ ও তীব্র তাপের কারণে ভবনের একাধিক দেয়াল এবং উপরের তলাগুলো ভেঙে পড়েছে। আগুন এখন ভবনের নিচতলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে কালো ধোঁয়া।

চোখে পড়ার মতোভাবে আগুনের শিখা ছাদ ছাড়িয়ে প্রায় ১০০ ফুট ওপর পর্যন্ত উঠে গেছে। আশপাশের এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রচণ্ড তাপ। আগুনের তীব্রতা এতটাই যে, কারখানা থেকে ৩০০ গজ দূরেও তাপ অনুভব করা যাচ্ছে।

দমকল বাহিনীর পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্ত হয়েছে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা। শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ শুরু করলেও, সন্ধ্যা ৬টার পর তা বেড়ে প্রায় ২০টি ইউনিটে দাঁড়িয়েছে।

কারখানাটিতে মোট ৭০০ শ্রমিক কাজ করলেও, কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবাহান বলেন, "আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই এ ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই।"

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ভবনের উপরের দিক থেকে আগুন শুরু হয়ে নিচে নামতে শুরু করে। আগুন ছড়াতে সাহায্য করেছে কারখানায় থাকা পিপি পণ্যের টিস্যু জাতীয় দাহ্য কাঁচামাল। পাশের 'আল হামেদি টেক্সটাইল' কারখানার কয়েকজন কর্মচারী বলেন, "আদম ক্যাপ্স কারখানায় মূলত তোয়ালে ও হাসপাতালের ব্যবহারের জন্য পিপি জাতীয় পণ্য তৈরি করা হয়। সেখানে ব্যবহৃত টিস্যু জাতীয় কাঁচামালের রোলের কারণে আগুনের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে।"

ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন রয়েছে, যারা জনসাধারণের ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

আগুনের উৎস এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, "ভবনের ভেতরে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন। আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলেও পানির চাপ কম থাকায় কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।"

প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় অভিযান চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×