অস্বাভাবিক জোয়ারে নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
- নোয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৫৯ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৫

সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিস্তীর্ণ নিচু অঞ্চল, যার মধ্যে রয়েছে নিঝুম দ্বীপসহ একাধিক ইউনিয়ন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে যায়, ফলে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে আসে।
জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ নামার বাজার এলাকার রাস্তায় প্রায় দুই ফুট পানি উঠে যায়। এতে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ঢুকে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসা ও সম্পদ। বাসিন্দা এনায়েত হোসেন বলেন, জোয়ারে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাজারের ওপরে রাস্তাটি দুই ফুট উচ্চতার পানিতে তলিয়ে যায়। মানুষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। এলাকার অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
এ অবস্থায় বাজারের সঙ্গে দ্বীপের বন্দরটিলা বাজারের সড়ক যোগাযোগ প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ ছিল। দ্বীপটির দক্ষিণ পাশে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি সহজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, রাতের জোয়ারেও একই রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়নের তুপানিয়া গ্রাম পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সড়কপথে চার ফুট পানি উঠে গ্রামটি সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউনুছ বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারে তুফানিয়া গ্রামের প্রতিটি ঘরবাড়ি–মসজিদ পানির নিচে তলিয়ে যায়। শুক্রবার কোনো মসজিদে মানুষ জুমার নামাজ আদায় করতে পারেননি। অনেকে বেড়িবাঁধের ওপরে দাঁড়িয়ে সময় পার করেছেন। পানি নেমে যাওয়ার পর বাড়িঘরে ফিরছেন মানুষ।
প্লাবিত হয়েছে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল ঢালচর ও চরগাসিয়াও, যেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় সামান্য জোয়ারেই লোকালয় তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
চরগাসিয়ার জনতা বাজারের এক ব্যবসায়ী রিয়াজ বলেন, বেলা ১১টার মধ্যে চরে মাঠঘাট সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে যায়। চরের অধিকাংশ মানুষ সরকারি আশ্রয়ণকেন্দ্রে অবস্থান করছেন। আবার জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার পর বাড়িঘরে ফিরে গেছেন।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন জানান, হঠাৎ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। লোকালয়ে পানি চলে এসেছে। এতে নিঝুম দ্বীপসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ বিপদে রয়েছে। আমরা আমাদের মতো করে খোঁজখবর নিচ্ছি। প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা পাঠানো হবে।