পাহাড়ে ধর্ষণের পুনরাবৃত্তির জন্য দায়ী বিচারহীনতা
- রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৪৩ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোরালো বার্তা দিতে রাঙামাটির শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছেন ব্যতিক্রমী এক প্রতিবাদ। লাঠি ও ঝাড়ু হাতে মিছিল করে তারা সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাঙামাটির সদর উপজেলার কুতুকছড়ি এলাকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ নামের একটি সংগঠন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্রমাগত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, আর তার মূল কারণ বিচারহীনতা। অপরাধীরা শাস্তির মুখোমুখি না হওয়ায় তারা আরও সাহসী হয়ে উঠছে। বক্তাদের অভিযোগ, “দাগি অপরাধীদের পার্বত্য এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে শাস্তি হিসেবে। এমনকি শিক্ষার্থীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মানিকগঞ্জ থেকে এক কর্মকর্তাকে বান্দরবানে বদলি করা হয়েছে।”
তারা প্রশ্ন তোলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন ‘পানিশমেন্ট জোন’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে? রাষ্ট্র এ বিষয়ে জবাব দিক।” বক্তারা আরও বলেন, “এসব ঘটনায় বোঝা যায়, রাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্ন করার পথ বেছে নিচ্ছে।”
সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও শিক্ষার্থীদের মতে, সেটি ‘লোকদেখানো’ পদক্ষেপ। তারা বলেন, “পাহাড়ি নারীরা আজ নিজের ঘরে, রাস্তায় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নিরাপদ নন। বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ করতেও দ্বিধা করছে না।”
সমাবেশ থেকে বক্তারা দ্রুত সব ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কঠোর ও দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
কুতুকছড়ির বড় মহাপূরম উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী একি চাকমা। বক্তব্য দেন কেতু চাকমা, ইতি চাকমাসহ অনেকে।
এর আগে নির্বাণপুর বনবিহারের ফটক থেকে শুরু হয়ে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক হয়ে কুতুকছড়ি বাজার পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ লাঠি ও ঝাড়ু মিছিল করেন। এই মিছিলে অন্তত ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে।
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা ‘যৌন নিপীড়নবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী মঞ্চ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দেন। ১১ সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় একি চাকমাকে, আর সদস্য সচিব মনোনীত হন মৈত্রী চাকমা।