দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে পানি বিপৎসীমার ওপরে, শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোর পানির মাত্রা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে নদী তীরবর্তী অনেক জনপদ জলমগ্ন হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল তিনটার পর থেকে বরিশাল শহরের প্রধান সড়ক সদর রোডসহ কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী এলাকা জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পতিত হয়েছে।

নগরীর কাছাকাছি অবস্থিত কীর্তনখোলা নদীর আশপাশের এলাকায় পানির উচ্চতায় হাঁটু সমান অবস্থায় অনেক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভাটিখানা, পলাশপুর এবং সাগরদি ধান গবেষণা রোড এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে জনজীবনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী তাইজুল ইসলাম বিকেল ৫টায় জানান, মেঘনা, তেতুলিয়া সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিকেল তিনটার পর থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কীর্তনখোলার পানি বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভাটা শুরু হলে নগরীর বসতবাড়ি থেকে পানি দ্রুত নেমে যাবে।

পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সমকাল প্রতিনিধি জানান, সমুদ্রের অবস্থা খুবই উত্তাল, উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল গতিতে বাতাস বইছে এবং জোয়ারের কারণে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। একই অবস্থা বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার প্রতিনিধিও নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। যদিও অধিকাংশ সময় বৃষ্টিপাত ছিল হালকা থেকে মাঝারি ধরনের। শুক্রবার সারাদিনে একই ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। ছুটির দিন হওয়ায় লোকজন প্রধানত ঘরবন্দি ছিল। বেলা ১২টার পর বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসও প্রবল হয়।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার জানান, আজ বিকেল ৩টায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাসের প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল এলাকায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিনি আরও জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বরিশাল বন্দরের কর্মকর্তা শেখ সেলিম রেজা জানান, নদীর পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তবে কোনো ধরনের লঞ্চ চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে গতকাল সকাল থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।