ময়মনসিংহে শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, চার দিন পর মিলল লাশ
- ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৬:২৯ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৫

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে চার বছরের এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে; তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পাগলা থানাধীন দিঘীরপাড় এলাকায় শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ও গলিত অবস্থায় শিশুটির ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয় বলে পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান।
নিহত আইমান সাদাব নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারগুড়িয়া গ্রামের প্রবাসী আলামিনের ছেলে।
সে তার মা সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘীরপাড় (অতার বাড়ি) গ্রামে নানা সুলতান মিয়ার বাড়িতে থাকত।
সুলতান মিয়া বলেন, “আমার নাতি শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির সামনে মাইকে শব্দ শুনে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর খোঁজ মিলছিল না। পরে বাড়ির আশপাশের পুকুর-ডোবা ও স্বজনদের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সেদিন রাতেই পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
“সকালে প্রতিবেশী সোহাগ মিয়া জানায়, জঙ্গলের পাশে এবং পুকুর পাড়ে গলিত এক শিশুর লাশ পড়ে আছে। পরে সেখানে গিয়ে সাদাবের লাশ আমরা শনাক্ত করি।”
নিহত শিশুর আত্মীয় মোফাজ্জল হোসেন বলেন, সাদাবকে বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। তিন দফায় মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর পর মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ করে দেয় অপহরণকারীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত শিশুর নানা সুলতান মিয়া বলেন, “অপহরণকারীরা তার নাতিকে মুক্তি দেবে বলে বিকাশের মাধ্যমে তিন দফায় ২৮ হাজার টাকা নেয়। মুক্তিপণের টাকা নিয়াও আমার নাতিডারে মাইরা ফালাইলো।”
নিহত সাদাবের মা সুমাইয়া আক্তার কান্না জড়িতকণ্ঠে বলেন, “আমার একমাত্র নিষ্পাপ ছেলে কি অন্যায় করেছে। তাকে এভাবে অপহরণ করে দাবি টাকা নিয়েও চার দিন আটকে রেখে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। আমাদের বুক খালি করেছে।”
ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, “বিকাশে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। নম্বরগুলো র্যাবকেও দেওয়া হয়েছে। ওরা প্রতারক চক্র। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “এসব ক্ষেত্রে অপহরণকারীদের চেয়ে প্রতারক চক্র বেশি সক্রিয় হয়ে যায়। কোথাও কেউ নিখোঁজ হলে প্রতারকরা বিকাশে টাকা হাতিয়ে নেয়।
“এক্ষেত্রে তারা দোকানের এজেন্ট নাম্বার ও ভূয়া এনআইডি নাম্বার দিয়ে রেজেস্ট্রেশন করা সিম দিয়ে প্রতারণা করে।”