৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদলের সাবেক নেতাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- শরীয়তপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:০২ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৫

ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে চলাচলকারী বাসগুলোর কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে যুবদলের সাবেক এক নেতাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি করেন শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের বাস মালিক ওয়ালি উল্লাহ খান।
মামলার মূল অভিযুক্ত যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম। মামলায় আরও ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যারা চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ।
বাস মালিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ফাহিম ও তার অনুসারীরা প্রতিটি বাস ট্রিপে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। মাসিক গড় হিসেবে প্রায় ৮ লাখ টাকা তোলা হতো। সম্প্রতি ফাহিম একবারে ৫ কোটি টাকা দাবি করেন এবং আরও ১০টি বাস চালুর শর্ত দেন।
চাঁদা না পেয়ে ফাহিমের লোকজন বাস চলাচলে বাধা দিতে শুরু করে। গত সপ্তাহে যাত্রাবাড়ী এলাকায় শরীয়তপুরগামী বাসগুলো ঢুকতে না দিয়ে অন্তত ২০টি বাস ভাঙচুর এবং ১২ জন বাস শ্রমিককে মারধর করা হয়। এতে বাধ্য হয়ে এসব বাস ধোলাইপাড় ও জুরাইন পর্যন্ত যাত্রী নামিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে টোলপ্লাজার সামনে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা মানববন্ধন করেন। এর ফলে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মামলার পর পুলিশ যাত্রাবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ফাহিমের অনুসারীদের সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, ফাহিম রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন প্রভাব বিস্তার করছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, ফাহিমের অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন, তবে মামলা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে এখন কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে শরীয়তপুরের প্রায় ২৫০টি বাস যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত নিয়মিত চলাচল করে, যার মধ্যে ১৭০টি বাসই শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের। প্রতিদিন এসব বাসে গড়ে ১২-১৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে।
মামলার পর থেকে মুশফিকুর রহমান পলাতক রয়েছেন, তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।