ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই করব: জামায়াত আমির
- ফেনী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৩৫ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। আমরা ক্ষমতা চাই না, সবার জন্য একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক দেশ চাই।’
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে ফেনীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত রোকন সম্মেলন ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য কিছু জরুরি ও মৌলিক সংস্কার করতে হবে। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করে নির্বাচন হলে, সেটি হবে নির্বাচনের জন্য গণহত্যা। এটি আমাদের সন্তানদের সঙ্গে বেইমানি হবে। আমরা বেইমানি করব না। কাউকে করতেও দেব না।’
তিনি বলেন, ‘মৌলিক ও জরুরি সংস্কারে বাধা দেওয়া যাবে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবার ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে। এটি রুখতে দরকার পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। এই পদ্ধতির নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশিশক্তির রাস্তা বন্ধ হবে।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদেরকে উন্নয়নের মহাসড়কের কথা বলেছে। কিন্তু আমরা সেই উন্নয়নের মহাসড়ক দেখিনি। আমরা তাদের ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচারের উন্নয়ন দেখেছি। রূপপুরে ৭২ হাজার টাকার বালিশ দেখেছি। বিরোধী দল ও মতের উপর দানবীয় নির্যাতন ও বেপরোয়া তান্ডব দেখেছি। তারা জামায়াতের ১ থেকে ১১ নম্বর নেতা পর্যন্ত সিরিয়ালে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। রিমোট কন্ট্রোলের রায় দিয়ে তারা শুধু আমাদেরকে খুন করে নাই, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে খুন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘জাহেলী যুগ থেকে এ পর্যন্ত সব সময় যুবকদের হাতেই সমাজ পরিবর্তন হয়েছে। যুবকরাই পরিবর্তনের নিয়ামক। জাতি হিসেবে আমরা আবু সাঈদদের কাছে ঋণী, তাদের বন্ধুদের কাছে ঋণী। তারা জীবন দিয়ে ৫ আগস্টের পরে আমাদের জাতিকে মুক্ত করেছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশে যখন কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং পুলিশ সদস্য ছিল না, তখন আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ ১৫ দিন দায়িত্ব পালনের পর আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরে ফিরেছি। যখন থানাগুলোতে কাজের কোনো পরিবেশ ছিল না, তখন আমরা ২৩২টি থানায় যাবতীয় সরঞ্জাম দিয়ে কাজ শুরু করে পুলিশের সঙ্গে ছিলাম। তাই আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলের পুলিশ হবেন না। আপনারা নাগরিকদের পুলিশ হন।’
ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারি সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহের মোহাম্মদ মাছুম ও মুহাম্মদ শাহজাহান।
বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য একেএম সামছুদ্দিন প্রমুখ।
রুকন সম্মেলন শেষে সন্ধ্যায় জামায়াত আমির একই স্থানে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিভিন্ন পেশার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।