অবশেষে স্থগিত হল কবরস্থানের সভাপতি পদের নির্বাচন
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:৫৯ পিএম, ২১ মে ২০২৫

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় এক কবরস্থান কমিটি করা নিয়ে দেশ জুড়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত করে দিল নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। বুধবার (২১ মে) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কবরস্থান নির্বাচন কমিশন প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টার।
তিনি জানান, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'আগামী ২৪ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকায় আমরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছি। দুই একদিনের মধ্যে গ্রামের প্রধানবর্গ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বসে সমঝোতার মাধ্যমে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি উপহার দিবো।'
প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। সবার সিদ্ধান্তে হোক এ কমিটি। পারিপার্শ্বিক ভেবে আমি আর এসবে নাই।
অপর প্রার্থী মূলগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।
উল্লেখ্য চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু সভাপতি কে হবেন? এমন বিষয় নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুইটি পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এলাকাবাসীরা দাবি জানান ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হোক। পরে থানার ওসির পরামর্শে সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তারপর গঠন করা সাত সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ঘোষণা করা হয় তফশিল। দুইজন প্রার্থী জামানত দিয়ে মনোনয়ন ফরম তুলে জমা দেন। যাচাই বাছাই শেষে তাদের দুজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। দেওয়া হয় প্রতিক বরাদ্দ। আব্দুল কুদ্দুস ছাতা ও শরিফুল ইসলাম ছাতা প্রতিক পান। দুই প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে যায় এলাকা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থণা করেন প্রার্থীরা। তৈরী হয় নির্বাচনী আমেজ। এলাকাবাসীর মাঝেও দেখা দেয় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর চাটমোহর উপজেলা সহ দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচনের খবর। তবে এ নিয়ে এলাকায় বিএনপির দুই দ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাও বিরাজ করতে থাকে। মানুষের মাঝে সংশয় এবং উৎকণ্ঠা দেখা দিলে অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান, 'নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সেখানে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে বলে জেনেছি। এই নির্বাচন ঘিরে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে তারা নিজেরা যদি সবার সম্মতিতে একটা গ্রহণযোগ্য কমিটি দিতে পারে তাহলে সেটাই ভালো হয়। তবে কেউ যদি এ নিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহন করবো।'