সিলেটে পাঁচ শিক্ষার্থীর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ; মাসিক আয় অর্ধ লক্ষ টাকা
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৩:৪৮ পিএম, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

পড়াশোনার পাশাপাশি সিলেট শহরে জনপ্রিয় চালের গুঁড়ার রুটি আর মাংসর মুখরোচক খাবার বিক্রি করে সাড়া ফেলেছে ‘দ্যা ওনেস্ট কিচেন’ সিলেটের পাঁচ শিক্ষার্থী। নার্সিংয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সহপাঠী ও ছোট ভাইদের নিয়ে সিলেট শহরের মদিনা মার্কেট এলাকায় ছোট ফুড শপ খুলেছে তারা, যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মুখরোচক এই খাবার খেতে ছুটে আসেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। সুরমা নার্সিং কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান চৌধুরী একই কলেজের ছোট ভাইদের নিয়ে শুরু করেছেন তাদের স্বপ্নের যাত্রা। যেখানে একই কলেজের জসিম উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আজমল ফুয়াদ, আফজাল আহমেদ তালুকদার রয়েছেন সম্পৃক্ত।
হোস্টেলে বসে হঠাৎ করেই সবাই মিলে কিছু একটা উদ্যোগ নেয়ার তাড়না থেকেই তাদের এমন পরিকল্পনা। সমাজে শূন্য থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ী বনে যাওয়াদের আইডল মেনেই যাত্রা শুরু করেছেন এই পাঁচ শিক্ষার্থী।
ফখরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সবাই এক সাথে মিলে পরিকল্পনা করি। তারপর আর দেরি না করেই উদ্যোগটা নিয়ে নেই। সিলেটের জনপ্রিয় খাবার চালের গুঁড়ার রুটি সাথে গরুর মাংস আমরা এটি বিক্রি করে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সাথে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা চিকেনের ব্যবস্থা রেখেছি। এ ছাড়া, স্পেশাল চাটনি থাকছে সাথে। সকলের কথা চিন্তা করেই আমরা খাবারের মূল্য কম রেখেছি; যাতে সকলেই খেতে পারেন।’
প্রতিদিন গড়ে শুরুতে নতুন অবস্থায় ৭-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে আফজাল আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘আমরা গত ৬ জানুয়ারি শুরু করলাম। শুরু থেকেই সকলেই আসছেন খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন। নতুন অবস্থায় ৭-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। আমরা যেখান থেকে দুই হাজার টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি। আমাদের ধারণা, প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকার মতো আয় করা সম্ভব। তবে, সময়ের সাথে সবাই সহযোগিতা করলে সেই সংখ্যা বাড়বে।’
খাবারের স্বাদ আর গুণগত মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন লোকজন। নিজেরা রান্না করাসহ স্পেশাল বাবুর্চির সহযোগীতা নিয়ে ভোজন রসিকদের পরিবেশন করে মজাদার খাবার। বিফ চিকেনের সাথে রয়েছে স্পেশাল ভর্তাসহ ডিমের আইটেম সাথে বিশেষ আকর্ষণ সিলেটের জনপ্রিয় চালের গুঁড়ার রুটি; যেটির কদর রয়েছে অঞ্চলটির সর্বত্র।
ভোজন প্রেমীদের কথা মাথায় রেখে ফুড শপটি মানসম্মত খাবার ও ব্যতিক্রম উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকেই। পড়ালেখার পাশাপাশি এমন উদ্যোগ যে কাউকে অনুপ্রেরণা জাগাবে বলছেন তারা। বুধবার বন্ধ থাকলেও সপ্তাহের বাকি ছয় দিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা থেকে রাত তাদের শপটি খোলা থাকে। ভাসমান এই শপটির খাবারের প্রশংসা এখন সিলেটের সর্বত্র। উদ্বোধনের এক সপ্তাহের মাথায় ব্যপক সাড়া ফেলেছেন পাঁচ শিক্ষার্থীর এমন উদ্যোগ। নার্সিংয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার স্বত্ত্বেও ক্লাস এবং ডিউটির বেড়াজাল অতিক্রম করে শিফট ভাগ করে পরিচালনা করছেন তাদের স্বপ্নের এই শপটি।