রাকসু নির্বাচনের ২৩ পদের ২০টিতেই শিবিরের জয়
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৪৭ এম, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিত্র সংগঠন ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। ২৩টি পদের মধ্যে এই প্যানেল জয়ী হয়েছে ২০টি পদে। বাকি তিনটি পদে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
৩৪ বছর পর অনুষ্ঠিত এই বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
শীর্ষ তিনটি পদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট, যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ছাত্রদল-সমর্থিত শেখ নূর উদ্দীন আবির পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ ভোট। ভোটের ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৯০।
তবে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জোটের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মারের কাছে। তিনি পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৩৭ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফজলে রাব্বি ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৯ ভোট, ফলে জয় ও পরাজয়ের ব্যবধান দাঁড়ায় ৫ হাজার ৮০৮।
সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবির-সমর্থিত সালমান সাব্বির ৬ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল-সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পান ৫ হাজার ৯৪১ ভোট। এ পদে ব্যবধান ছিল তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র ১ হাজার ৩০ ভোট।
খেলাধুলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নার্গিস আক্তার, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ তোফা, যিনি কোনো প্যানেলের আওতায় প্রার্থী হননি।
নির্বাচনের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। দিন শেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে শুরু হয় ভোট গণনা, যা রাতে ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৬৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ ভোটার। ছয়টি নারী হলে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হলে হল সংসদের ১৫টি পদে ৫৯৭ জন এবং সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি পাঁচটি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫৮ জন।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত রাকসু নির্বাচনের এই ফলাফলের পর বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল ব্যাপক উচ্ছ্বাস। এক শিক্ষার্থী বলেন, "এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা।"
নির্বাচিতদের তালিকা:
ভিপি: মোস্তাকুর রহমান জাহিদ
জিএস: সালাহউদ্দিন আম্মার
এজিএস: এস এম সালমান সাব্বির
ক্রীড়া সম্পাদক: নার্গিস খাতুন
সহক্রীড়া সম্পাদক: আবু সাইদ মোহাম্মদ
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: জাহিদ হাসান
সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক: মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম
মহিলা সম্পাদক: সাইয়্যেদা হাফসা
সহমহিলা সম্পাদক: সামিয়া জাহান
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: বি এন নাজমুস সাকিব
সহতথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: সিফাত আবু সালেহ
মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মোজাহিদ ইসলাম
সহমিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক: আসাদুল্লাহ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক: তোফায়েল আহমেদ তোফা
সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক: মোজাহিদুল ইসলাম সায়েম
বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক: ইমরান মিয়া লস্কর
সহবিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক: মোহাম্মদ নয়ন হোসেন
পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক: আবদুল্লাহ আল মাসুদ
সহপরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক: মাসুমা ইসলাম মুমু
চার কার্যনির্বাহী সদস্য:
মোহাম্মদ দীপ মাহবুব
মোহাম্মদ ইমজিয়াল হক কামালী
সুজন চন্দ্র
এবি এম খালেদ
সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি:
সালাহউদ্দিন আম্মার
মুস্তাকুর রহমান জাহিদ
ফাহিম রেজা
আকিল বিন তালেব
সালমান সাব্বির