চাকসুতে ৪৪ বছর পর শিবিরের বড় জয়
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:২৫ এম, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ এবারের নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদসহ মোট ২৪টি পদে জয় পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সর্বশেষ জয় ছিল ১৯৮১ সালে। সে সময় ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার, আর জিএস পদে জয়ী হন আবদুল গাফফার। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনে শিবির পরাজিত হয় ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র কাছে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্যাম্পাসে সংগঠনটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে তারা প্রভাব হারায়। প্রায় এক দশক নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিবির আবারও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফেরে।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ২০২৫ সালের নির্বাচনে তাদের এই জোরালো প্রত্যাবর্তন এখন ক্যাম্পাসজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত মোট সাতবার চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে—১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১, ১৯৯০ এবং এবার ২০২৫ সালে। দীর্ঘ তিন দশক পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক উৎসাহ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। তিনি বলেন, “নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল উৎসবমুখর।”
সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হয়েছেন শিবির সমর্থিত মো. ইব্রাহিম হোসেন, ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি পদে বিজয় পেয়েছে শিবির-সমর্থিত প্যানেল। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল জিতেছে কেবল সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে—এ পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট, আর শিবির সমর্থিত সাজ্জাদ হোছন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট।
এ ছাড়া সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন তামান্না মাহবুব নামে এক ছাত্রী, যা এবারের নির্বাচনের অন্যতম ব্যতিক্রমী দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।