চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি


MARCH NAEEM 2ND/shadman-islam-hundred-290525-02-1745916141.jpg

সাদমান ইসলামের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রায় আড়াই বছর পর কোনো ওপেনারের কাছ থেকে তিন অঙ্কের ইনিংস পেল বাংলাদেশ।


রিচার্ড এনগারাভার অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি চমৎকার কাভার ড্রাইভ করলেন সাদমান ইসলাম। দুই ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে বল চলে গেল সীমানায়। সাদমান পৌঁছে গেলেন বহু প্রতীক্ষিত ঠিকানায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের দূর হলো প্রায় আড়াই বছরের অপেক্ষা।

গত দেড়-দুই বছর ধরেই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা হতাশার পর হতাশা দিয়ে চলেছেন বাংলাদেশকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর অভিযানে একটু স্বস্তি বয়ে আনলেন সাদমান। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে করলেন দারুণ সেঞ্চুরি।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার শুরু থেকে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১৪২ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন সাদমান। বাউন্ডারিচার মেরে শতক ছোঁয়ার পথে মোট ১৬টি বাউন্ডারি মারেন বাঁহাতি ওপেনার।

তপ্ত রোদের মাঝেও সাগরিকার গ্যালারিতে আছে শ'দুয়েক দর্শকের উপস্থিতি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই হয়তো সেঞ্চুরি পূর্ণ করে প্রথমে গ্যালারির দিকেই ব্যাট উঁচিয়ে ধরেন সাদমান। পরে ড্রেসিং রুমের দিকে ব্যাট তোলেন তিনি।

প্রায় সাত বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে সাদমানের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই হারারে টেস্টে ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেটি ছাড়িয়ে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি বাড়িয়ে নিচ্ছেন বাঁহাতি ওপেনার।

গত অগাস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে শতরানের সুবাস পেয়েও হারিয়ে ফেলেন সাত রান দূরে মোহাম্মদ আলির বলে বোল্ড হয়ে।

সাদমানের সেঞ্চুরিতে ঘুচল বাংলাদেশের প্রায় আড়াই বছরের অপেক্ষা। ২০২২ সালের পর ডিসেম্বরের পর তিন অঙ্কের দেখা পেলেন বাংলাদেশের ওপেনার। সবশেষ চট্টগ্রামেই ভারতের বিপক্ষে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অভিষিক্ত জাকির হাসান।

টেস্টে একাধিক সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ওপেনার সাদমান। ওপেনারদের কাছ থেকে মোট ২০টি সেঞ্চুরি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ১০টিই করেছেন তামিম ইকবাল। এছাড়া একের বেশি সেঞ্চুরি আছে ইমরুল কায়েসের (২)।

তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পথে এনামুল হকের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১১৮ রান যোগ করেন সাদমান। প্রায় আড়াই বছর ও ৩৩ ইনিংস পর শুরুর জুটিতে শতরান পায় বাংলাদেশ। সবশেষ ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ১২৪ রান যোগ করেছিলেন জাকির।

দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর ইনিংসে শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন সাদমান। জিম্বাবুয়ের বোলাররা প্রায় প্রতি ওভারেই দিয়েছেন আলগা বল। সেগুলোর প্রাপ্য সাজা দেন বাঁহাতি ওপেনার।

৭ চারে ৭৮ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে যান সাদমান। পরে একই ছন্দে ছুটতে থাকেন তিন অঙ্কের দিকে। মাঝে এনামুল আউট হলেও থামেননি সাদমান। আরও ৯টি বাউন্ডারি মেরে তিনি পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে।

প্রায় চার বছরের অপেক্ষা ঘোচানোর পর ব্রায়ান বেনেটের শর্ট বলে পুল করে ছক্কা মারেন সাদমান। ৪২ ইনিংসের ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ছক্কা। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংসটাউনে প্রথম ছক্কাটি মারেন তিনি।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটিকে বেশি দূর আর নিতে পারেননি সাদমান। ব্রায়ান ব্রেনেটের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ১৮১ বলে ১২০ রান করে। নিজেকে অবশ্য খানিকটা দুর্ভাগা তিনি ভাবতে পারেন। বলটি লেগ স্টাম্পে স্পর্শ করছিল কোনোরকমে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×