আমৃত্যু ফিলিস্তিনের সমর্থক ছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনা


MARCH NAEEM 2ND/imag.webp

ফুটবলের জাদুকর ডিয়েগো ম্যারাডোনা চলে গেছেন পাঁচ বছর আগেই, কিন্তু তার হৃদয়ের যে স্পষ্ট ভাষা ছিল, তা আজও বিশ্ববাসীর হৃদয়ে অনুরণিত হয়। তিনি শুধু মাঠের কিংবদন্তি ছিলেন না, ছিলেন নিপীড়িতের পক্ষে এক অনন্য কণ্ঠ। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা বারবার গর্বভরে বলেছিলেন—‘আমার হৃদয়ে আমি ফিলিস্তিনি।’ আজ যখন ফিলিস্তিন আবার রক্তে ভাসছে, তখন ম্যারাডোনার সেই মানবিক অবস্থান আমাদের নতুন করে ভাবায়।

ম্যারাডোনা সবসময়ই ছিলেন খোলামেলা ও স্পষ্টবাদী। তিনি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছিলেন বারবার। তার বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন হুগো শ্যাভেজ, ফিদেল ক্যাস্ত্রো ও এভো মোরালেসের মতো নেতারা। তিনি জনসমক্ষে “অ্যান্টি-বুশ” লেখা টি-শার্ট পরেছিলেন, এমনকি ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানাতে পিছপা হননি।

২০১২ সালে এক সাক্ষাৎকারে মারাদোনা বলেন, `আমি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহানুভূতিশীল। আমি নির্ভয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি।` ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলায় হাজারো মানুষ নিহত হলে তিনি বলেন, 'ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের যা কিছু করা হচ্ছে তা লজ্জাজনক।” একই বছর এক বিবৃতিতে তিনি জানান, “আমার হৃদয়ে আমি ফিলিস্তিনি।'

২০১৮ সালে রাশিয়ার মস্কোয় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আবারও বলেন, 'আমিও একজন ফিলিস্তিনি।' সেই মুহূর্তে আবেগঘন আলিঙ্গনে ধরা পড়ে তার মানবিক দৃঢ়তা।

এমনকি ফিলিস্তিন জাতীয় দলের কোচ হওয়ার জন্য আলোচনায়ও ছিলেন তিনি। শুধু খেলা নয়, বিশ্ব রাজনীতি ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নেও তার ছিল অগাধ আগ্রহ ও স্পষ্ট অবস্থান।

ম্যারাডোনার মৃত্যুতে হামাস থেকে শুরু করে বহু ফিলিস্তিনি নেতারা শোক প্রকাশ করেন। তারা বলেছিলেন, এই মহান খেলোয়াড় শুধুই ফুটবল নন, ছিলেন একজন প্রতিবাদী হৃদয়ের মানুষ।

আজ যখন গাজা রক্তাক্ত, তখন ম্যারাডোনার সেই কণ্ঠস্বর—"In my heart, I am Palestinian"—বিশ্ব বিবেককে আবার নাড়া দেয়। ফুটবলের মাঠের বাইরেও যে তিনি কত বড় খেলোয়াড় ছিলেন, তা ইতিহাস কখনো ভুলবে না।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×