
ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধীর ছাত্ররা দখলদারিত্ব করে বেড়াচ্ছে : ছাত্রদল সভাপতি
রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের পাশাপাশি, নতুন নামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পুরাতন ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে তীব্র নিন্দা জানান ছাত্রদল সভাপতি। আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। রাকিব বলেন, বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ছাত্রদলের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছে।তারা রক্ষিবাহিনীর মতো দখলদারি করে বেড়াচ্ছে। জাহিদুল ইসলাম পারভেজের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে বনানী থানা কমিটির সুবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজীর উপস্থিতি প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি নিরপরাধ পারভেজ হত্যার বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি ছাত্রদের নিরাপত্তা, একপাক্ষিক আচরণ ছেড়ে ন্যায্যতার দাবি করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিএনপি ‘সিরিয়াসলি’ সংস্কারে সহযোগিতা করছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে বিএনপি ‘সিরিয়াসলি’ সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে, আন্তরিকতা সঙ্গে এবং সিরিয়াসলি সংস্কার কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতায় আছি।’ গত বৃহস্পতিবারে মুলতবি হওয়া বৈঠক আজ রোববার সকাল ১১টায় আবার শুরু হয়। বৃহস্পতিবারে দিনব্যাপী বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও বিএনপি সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে। সেদিন সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় আজ আবার বৈঠক চলছে। আজকের বৈঠকে নির্বাচন, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনসহ সব বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আজকে পাঁচ কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা সমাপ্ত করা যাবে। এখন আমরা সংবিধানের যে পর্যায় থেকে আলোচনা শেষ করেছিলাম, ওই পর্যায় থেকে আলোচনা শুরু করব। এরপর বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ বাকি দুটি কমিশনের ওপর আলোচনা শেষ করে, আশা করছি বিকেলের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ এর আগে বৃহস্পতিবার সংলাপের বিষয়ে বিএনপির দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়গুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জানানো হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিটে জবাব চেয়ে বিভ্রান্ত-মিসলিড করা হয়েছে: বিএনপিসংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিটে জবাব চেয়ে বিভ্রান্ত-মিসলিড করা হয়েছে: বিএনপি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও আছেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা: জিএম কাদের
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের ‘প্রয়োজন নেই’ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কারই করতে চাক, তা নির্বাচিত সংসদে পাস করতে হবে। “দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে এই সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনদিনই কার্যকর হবে না। সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কতবড় গর্তে পড়বে তা তারা বুঝতে পারছে না।” শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় কথা বলছিলেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, “একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সকল সমস্যা সমাধানের প্রথম স্টেপ। যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।” নির্বাচনের সময় সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, সেই নিশ্চয়তা চেয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও আমাদের আপত্তি নেই। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপিরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন।” বর্তমান সরকার কী ভূমিকা নেবে তাও স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, “একতরফা নির্বাচন করে কারোরই লাভ হবে না। একতরফা নির্বাচন হলে আবারো গণ্ডগোল হবে, এর একটা স্থায়ী সমাধান দরকার।” কোনো কোনো দল আগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি করলেও, এ বিষয়ে একমত নন আওয়ামী লীগের এক সময়ের জোটসঙ্গী জাপার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাঁধা দিচ্ছে না। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। “এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ, আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয়, কিন্তু হাই কোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। এই সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে।” অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়র করে সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, “সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে, আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।” অন্যদের মধ্যে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যৌথসভায় বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। এ সময় দলের শীর্ষ নেতারারাসহ বিভাগ, জেলা, মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সাধারণ সভায় প্রশ্নের মুখে এনসিপির কয়েক জ্যেষ্ঠ নেতা
দলের সাধারণ সভায় নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনেক নেতা। সভায় নবগঠিত দলটির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কাজে জড়ানো, অজানা উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া, দলের চেয়ে ব্যক্তির ভাবমূর্তিকে বড় করে তুলে ধরার অভিযোগ ওঠে। মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন। দলীয় কার্যক্রমের চেয়ে নিজের নির্বাচনী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ায় আরেক মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহকেও জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৩টা থেকে টানা ১১ ঘণ্টা চলা এনসিপির তৃতীয় সাধারণ সভায় এসব ঘটনা ঘটে। এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৩ জন সভায় অংশ দেন। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১০-১২ সদস্যের উচ্চক্ষমতার ‘শৃঙ্খলা ও তদন্ত কমিটি’ গঠন হবে। কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা ওই কমিটি তদন্ত করবে। প্রয়োজনে দলীয় আহ্বায়কের পদও স্থগিত করতে পারবে কমিটি। আগামী তিন মাস এনসিপি নেতারা নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন। এ সময়ের মধ্যে কেউ নির্বাচনী এলাকায় প্রচার কিংবা শোডাউন করলে শাস্তি পেতে হবে। আগামী তিন মাস দলের সাংগঠনিক বিস্তারে সবাইকে করতে হবে আত্মনিয়োগ। এ সময়ের মধ্যে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠনে সক্রিয় হতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক পদ পেতে সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ৪০ বছর। সাংগঠনিক কাজের স্বার্থে ৬৪ জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করা হয়। জেলা কমিটি হবে ৩১ থেকে ৫১ সদস্যের, উপজেলা কমিটির আকার হবে ২১ থেকে ৪১ সদস্যের। কমিটিগুলো অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সদস্য সচিবের সইয়ে অনুমোদিত হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদের নিয়ে আপাতত জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন করা হবে। আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতিত অন্য দলের নেতাকর্মী আসতে চাইলে নেওয়া হবে। তবে আওয়ামী লীগের হয়ে যারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিলেন, খারাপ হিসেবে পরিচিত- এমন কাউকে নেওয়া হবে না। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বয়স ৩০ বছরের কম। জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স কেন কমপক্ষে ৪০ হতে হবে- এমন প্রশ্নে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, সবাই মনে করছে, এনসিপি ৩০ বছরের কম বয়সীদের দল। সব বয়সের মানুষকে যুক্ত করতে বা অভিজ্ঞদের উৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাত ২টার দিকে সভা শেষে যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্কারবিষয়ক প্রস্তাব প্রণয়ন, গণহত্যায় জড়িত আওয়ামী লীগের বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি নির্ধারণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর নীতি গ্রহণে সরকারকে দাবি জানানোর বিষয়গুলো সভায় গুরুত্ব পেয়েছে। গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যা, ভারতে ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে জনমনে স্বস্তি আনতে সরকারকে জোর দাবি জানানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে চলতি সপ্তাহে ঢাকা মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সমালোচনার মুখে পড়েন ছাত্রলীগ ছেড়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটানো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যোগ দিয়ে আলোচিত হওয়া সারজিস আলম। তিনি ঈদের আগে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে ৪০০ গাড়ির বহর নিয়ে শোডাউন করে সমালোচিত হন। সভা সূত্র জানিয়েছে, এনসিপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন, সারজিস কীভাবে লাখ লাখ টাকা খরচ করে শোডাউন করছেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে সারজিস বলেন, ‘আমি নিজেই শোডাউনের বিপক্ষে। তবে পঞ্চগড়ের মতো প্রত্যন্ত এলাকার রাজনৈতিক বাস্তবতায় শোডাউন করতে হয়েছে। মামাতো, ফুফাতো ভাই ও একজন ফুফার আর্থিক সহযোগিতায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করেছি। ৪০টি গাড়ি নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনেকে গাড়ি নিয়ে আসায় সংখ্যা বেড়েছে।’ সভায় আরেক নেতা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। এগুলো ‘ডিফেন্ড’ করতে গিয়ে সবাইকে দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দীন তানভীরের বিরুদ্ধে আত্মপ্রচার ও সরকারি কাজ থেকে কমিশন আদায়ের অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি নাগরিক কমিটিতেও ছিলেন না, অভ্যুত্থানেও সমন্বয়ক পর্যায়ের কেউ ছিলেন না। তবু এনসিপিতে কীভাবে বড় পদ পেলেন? এর জবাবে সভায় তানভীর বলেন, ‘আমি সরাসরি না থাকলেও আন্দোলনে সহায়তা করেছি।’ সভা সূত্র জানিয়েছে, সারজিসের জবাবে অন্য নেতারা সন্তুষ্ট হলেও তানভীরের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়নি।’ সভায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রেস সচিব মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়েও কথা হয়। আরিফুল ইসলাম আদীব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সভায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি নয়, দলের রাজনীতির কথা বলেছি। সবাইকেই জবাবদিহির আওতায় থাকতে হবে- এ কথা সবাই বলেছি।’ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি। তবে আমরা এনসিপিও নির্বাচনের পক্ষে। আগে গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করতে হবে।’ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সভায় দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রস্তাব করেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।’

গণতন্ত্রের কোন বিকল্প নাই: মির্জা ফখরুল
‘গণতন্ত্রের কোন বিকল্প নাই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনও বিকল্প নাই এবং গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না… ইট ক্যান নট বি ইম্পোজড। আপনি আমার ওপরে চাপিয়ে দেবেন, তা দেওয়া যাবে না।’ ‘গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে, প্র্যাকটিস করতে হবে, সেই জায়গাগুলো খোলা রাখতে হবে। এই আশা রেখে আবারও বলতে চাই- সেই বিহঙ্গের মতো একদিন না একদিন তীরে এসে পৌঁছাবোই।’ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, আমার বিশ্বাসও আছে যে তিনি সফল হবেন।’ ‘আসুন, আমরা সবাই মিলে তাকে সাহায্য করে, আমরা নিজেরাই নিজেদের সাহায্য করে, আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’ তিনি বলেন, ‘এত যে রক্তপাত হলো, এত যে রক্ত ঝরলো, এত যে মায়ের বুক খালি হলো, তার পরিণতি কী হবে শেষ পর্যন্ত?’ ফখরুল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভালো হবে এবং খুব ভালো হবে। কারণ আমরা বাংলাদেশের মানুষেরা চিরকাল ভালোর জন্যে সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি এবং জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণরা, আমাদের ছেলেরা আজকে বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন, সব তাদের জন্যে। দেখুন, ৫২ থেকে ২৪ পর্যন্ত সব আন্দোলনে তরুণরা ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করছেন, সেখানেই আমাদের শক্তি সেই প্রান্তিক মানুষগুলো।’ যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ আরোপ প্রসঙ্গ: মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে আমেরিকা ট্যারিফ আরোপ করে ফেলেছে এবং খুব দ্রুত যদি এই ট্যারিফের বিষয়ে সুরাহা না করা যায়, তাহলে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে, এটা সত্য কথা।’ ‘আমার মনে হয়, আমরা এই শ্রেণির মানুষগুলোকে (কৃষক) যদি সামনের দিকে এগিয়ে আসতে পারি, তাদের কাজ দিতে পারি, তাদের বিভিন্ন প্রযুক্তি দিতে পারি- তাহলে এই সমস্যাগুলো আমরা অতি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবো।’ বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেমিনার হলে ‘এমপাওয়ারমেন্ট বাংলাদেশ ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগ’-এর যৌথ উদ্যোগে ‘প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের দূরদৃষ্টিতে ক্ষমতায় বাংলাদেশ: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথে কূটনীতি-শাসন ব্যবস্থা রূপান্তরমূলক’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠিত সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রয়াত সিরাজুল ইসলামের বড় মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান। ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়: বহুচিন্তার একত্রিত ফল’: মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক রাজনীতি আছে, এটার জন্মটা হয়েছিল বহুত্ববাদের মধ্য দিয়ে। অনেকে ভুল বুঝাবুঝি করেন, মানে বহুচিন্তার মধ্য দিয়ে অনেক চিন্তা এক জায়গায় আসে। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যখন লড়াই করি, তার আগে সেই সময়ে আমাদের নেতা অনেকেই ছিলেন। অত্যন্ত বড় বড় নেতা- মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের মাহবুবউল্লাহ সাহেব আসেননি বোধহয়, তিনিও তখন বিরাট নেতা ছিলেন। ওখানে বাদল দা বসে আছেন, তারাও বড় নেতা ছিলেন।’ ‘তখন আমাদের একেকজনের একেক চিন্তা ছিল। সেই চিন্তাগুলো ছিল কেউ আমরা সমাজতন্ত্র করবো, কেউ সমাজকে পাল্টে দেবো, কেউ কমিউনিজম করবো, কেউ ধর্মীয় ব্যবস্থাকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করবো, ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করবো—সব মিলিয়ে যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তখন আমরা এক হয়েছি। এক হয়ে লড়াইটা করেছি। আজকে ২৪-এর আন্দোলনে একই ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিন্তা নিয়ে আমরা এসেছি। সেদিন ছাত্রদের ওপর গুলি শুরু হয়েছে, তখন কিন্তু সবাই নেমে এসেছেন রাস্তায়। আজকে আসুন, সবাই মিলে এক হয়ে যাই। আমাদের সমস্যা আছে, সমস্যার সমাধানও হবে। ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে।’ ‘দেশটা আমাদের, বিদেশের কেউ এসে করে দেবে না’: বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সবাই যদি আজকে এইটুকু বুঝতে পারি যে দেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎ আমাদেরই নির্মাণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ওই আমেরিকা থেকে এসে ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) তৈরি করে দেবেন না, বা চীন থেকে শি (শি জিনপিং) এসেও এটা করে দেবেন না। অথবা ভারত থেকে মোদি (নরেন্দ্র মোদি) ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবেন না। এই বিষয়গুলো আমাদের মনের মধ্যে, অন্তরের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে।’ সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইদের একটা অভ্যাস আছে, এটা ভালো না খারাপ আমি বলতে চাই না। ওনারা শুধু ঝগড়া বাধিয়ে দিতে চান।’ ‘দেখবেন, টকশোতে যারা অ্যাংকোরে কাজ করেন, তাদের শুধু লক্ষ্য ঝগড়া লাগিয়ে দেওয়া। আমার কাছে সাংবাদিক ভাইয়েরা অত্যন্ত প্রিয়। তারা একেবারে ছোট ভাইয়ের মতো। আমার কাছে এমন একটা বিষয় পাঠিয়ে… যেটা নিয়ে কথা বলতে বলেছে। কিন্তু আমি হতাশ করছি, আমি সেটি নিয়ে কথা বলবো না। কারণ আমি এটা নিয়ে বলতে চাই না।’ দুই পর্বের এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। প্রথম পর্বে বিএনপি মহাসচিব ছাড়া অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। দ্বিতীয় পর্বে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেন বারবার মার খাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা?
২০২৪ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাজপথে নেমে এসেছিল দেশের আপামর জনসাধারণ। সেই আন্দোলনের জেরেই দেশ দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনার স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পায়। যাদের ডাকে স্বৈরশাসকের গুলির সামনে দাঁড়িয়েছিল দেশের ছাত্র-জনতা, তারাই এখন মারধরের শিকার হচ্ছেন বলে বিভিন্ন সময় জানা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক মাসের মধ্যেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কেন মার খাচ্ছেন? গত এক মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর অন্তত ৭টি হামলা-মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৬ মার্চ কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এনসিপি নেতাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫ জন আহত হন। ২৪ মার্চ হাতিয়ায় হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। সে সময় তিনি নিজের ফেসবুক পেজে দাবি করেন, হাতিয়ার জাহাজমারাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা এ হামলা করেছেন।গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় নেতা ঢাকা কলেজ ছাত্র কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি দিপু রহমান বিজয়। জমিসংক্রান্ত বিষয়ে এই হামলা হয়েছিল বলে জানা যায়। দুই দিন পর ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজানে হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ইসতিয়াক হোসেন সিফাত। রাজনৈতিক কারণে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর থানা এলাকায় হামলার শিকার হন ছাত্ররা। রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস আই টুটুল ও তার সহযোগীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। পর দিন মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সাবেক নেতা খালিদ বিন সাঈদ ও সাঈদ স্বাধীন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে রামুর চেইন্দা বসুন্ধরা এলাকায় একটি বাণিজ্য মেলায় চলমান জুয়ার আসর বন্ধ করায় তাদের ওপর এই হামলা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরের উত্তর কাট্টলীর আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে তিন দফা হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ওই কলেজের এক নারী শিক্ষিকাকে কলেজে আসতে নিষেধ করা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সেখানে গেলে কলেজের ভেতর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর দুই দফা হামলা করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে সেখানে আরেক দফা হামলা হয় বলে জানা যায়। এসব ঘটনায় এখনো পর্যন্ত বড় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারাবাহিক হামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, সামাজিক অসহিষ্ণুতা ও দমননীতিরই বহিঃপ্রকাশ। ফলে ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়েই উদ্বেগ বাড়ছে।

নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কার দৃশ্যমান হতে হবে: আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে এজেন্ডা-ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে সে অনুযায়ী বিচার এবং সংস্কার দৃশ্যমান করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। কিন্তু তার আগে বিচার এবং সংস্কার সরকারকে দৃশ্যমান করতে হবে। এটার জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন, সরকার সে সময়টুকু পেতে পারে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। আখতার হোসেন বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সংবিধানের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুদক এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতো বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারিনি। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট কেন অন্তর্ভুক্ত হয়নি সে বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছি। আমাদের মতামতগুলো জানাতে চেয়েছি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে সংবিধানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। তার মধ্য দিয়েই সাংবিধানকিভাবে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ রয়েছে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলছি এবং বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি। সেই প্রেক্ষাপটে কীভাবে সংবিধান পুনর্লিখন করা যায় তা নিয়ে এবং গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি।

হাসিনা আরেকটু সময় পেলেই বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা আরেকটু সময় পেলেই বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, গণতন্ত্রবিনাশী দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভারত এ দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। শেখ হাসিনার মাধ্যমে তারা তিন-তিনটি নির্বাচন করে প্রমাণ করেছিল বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা নেই। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেই মূলত সব অর্থে বাংলাদেশকে ভারতের ক্রীতদাসে পরিণত করেছিল। আরেকটু সময় পেলে ফ্যাসিস্ট হাসিনা লেন্দুপ দর্জির মতো বাংলাদেশটাকেও ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো। শনিবার (১৯ এপ্র্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভারতে মুসলিম নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভারত সম্প্রতি নিজেদের সারা বিশ্বে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরেছে। এটি এতটাই নির্মম রাষ্ট্র, শুধু যে মুসলমানদের হত্যা করছে তা নয়, সে দেশে নিম্নবর্ণের হিন্দু এবং জাতি-প্রজাতির মানুষকে তারা হত্যা করছে, নির্যাতন করছে। গাজায় ইসরায়েল এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। মনে রাখতে হবে এই ভারত কিন্তু দখলদার ইসরায়েলের বন্ধুরাষ্ট্র। বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছিল। তারা জায়গা দিয়েছিল, আশ্রয় দিয়েছিল। সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এজন্য আমরা ভারতকে বন্ধুরাষ্ট্র মনে করি। কিন্তু ভারত কি বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র মনে করে? না, তারা মোটেও সেটা মনে করে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করার পাঁয়তারা করা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শেখ হাসিনাকে তারা (ভারত) জায়গা দিয়েছে। এরপর ভারত নিজেদের আর কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এটা দাবি করতে পারে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে জায়গা দিয়ে নিজেরাও যে ফ্যাসিস্ট সেটা ভারত প্রমাণ করেছে। ‘আমরা ফ্যাসিস্টকে রুখে দিয়েছি, আমাদের দেশ থেকে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছি; এখানে তাদের জায়গা হয়নি। বলা হচ্ছে, জীবন বাঁচানোর জন্য হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। আসলে জীবন বাঁচানোর জন্য না। তার আসল ঠিকানাই হচ্ছে ভারত। একজন ফ্যাসিস্ট কেবল আরেকজন ফ্যাসিস্টের সঙ্গে থাকতে পারে। কারণ আমরা তো এরশাদকেও পরাজিত করেছিলাম। গণঅভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। তিনি জেলখানায় গিয়েছিলেন। হাসিনার মতো ভারতে পালিয়ে যাননি।’ শামসুজ্জামান দুদু বলেন, হাসিনার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে কব্জায় রাখতে পারেনি। তাই বলে আগামী দিনে পারবে না, সেটা ভাবার অবকাশ নেই। নানান ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বাংলাদেশকে কব্জায় রাখতে তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে এ দেশে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের কথাটা বিএনপি বারবার আপনাদের কাছে বলে আসছে। তা না হলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা কঠিন হবে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ভারতের জন্যই সুবিধা হবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান প্রমুখ।

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়, বললেন জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী। কিন্তু আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এলডিপিতে যোগ দিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী
লে. জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, আমলাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপিতে যোগ দিয়েছেন। শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে এলডিপিতে যোগ দেন তিনি। এ সময় এলডিপির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ (বীর বিক্রম) তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এলডিপি মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ড. রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায়। তিনি জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের সাবেক কমান্ড্যান্ট ছিলেন। আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রাইন কমান্ডের (এআরটিডিওসি) জিওসি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। সাভারে রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় সময় সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। দায়িত্ব পালন করেছেন পদাতিক ডিভিশনসহ সেনাসদরের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বাংলাদেশ রাইফেলসের পরিচালক অপারেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসাতে গণঅভ্যুত্থান হয়নি: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, একটি দলকে সরিয়ে অন্য দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য চব্বিশ সালের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়নি। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, মৌলিক এবং গঠনমূলক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অধিকার সুরক্ষিত রেখে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি আরও জানান, এনসিপি সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা এবং নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই সনদ জাতির সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। এটি আমাদের অঙ্গীকার এবং এই অঙ্গীকার রক্ষা করতে হবে। যাতে বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরতান্ত্রিক বা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেই পথ আমাদের বন্ধ করতে হবে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রত্যাশা করি। বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দলে সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

এনসিপি’র জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ৪০
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় সাংগঠনিক কাজের স্বার্থে ৬৪টি জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরে পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সাধারণ সভায় এমন প্রস্তাবনা আসে। একই সভায় কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে জেলা কমিটি সর্বনিম্ন ৩১ সদস্য থেকে সর্বোচ্চ ৫১ এবং উপজেলা কমিটি সর্বনিম্ন ২১ সদস্য থেকে সর্বোচ্চ ৪১ সদস্য নিয়ে গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। উভয় কমিটির আহ্বায়কের ক্ষেত্রে বয়স সর্বনিম্ন ৪০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে চলতি সপ্তাহে ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে। এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঞ্চালনায় সভার আলোচ্য বিষয় ছিল– এনসিপি’র অঞ্চলভিত্তিক সাংগঠনিক নীতিমালা নির্ধারণ, সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবনা প্রণয়ন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার, গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি নির্ধারণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর পলিসি গ্রহণে সরকারকে দাবি জানানো, গাজায় ইসরায়েলি সহিংসতা ও ভারতে ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করে জনমনে স্বস্তি আনতে সরকারকে জোর দাবি জানানো। এনসিপি’র কেন্দ্রীয় সংগঠক খায়রুল কবিরের মায়ের মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিক শোক প্রকাশের মাধ্যমে সভাটি শুরু হয়। এতে সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রস্তাব করেন মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। এছাড়াও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপরিসরে এনসিপি’র কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি সাংগঠনিক ‘শৃঙ্খলা ও তদন্ত কমিটি’ গঠন হয়। রবিবার (২০ এপ্রিল) ওই কমিটি ঘোষণা করা হবে। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে এনসিপি’র যুগ্ম-সদস্য সচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে তৃতীয় সাধারণ সভা ও গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

জনগণের ক্ষতি করতে আ.লীগ ওত পেতে আছে : এ্যানি
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, জনগণের ক্ষতি করার জন্য আওয়ামী লীগ ওত পেতে আছে। এদের ভুল হয়েছে—আজ পর্যন্ত জনগণের সামনে এসে বলে নাই। বরং হুংকার দিচ্ছে, ঝটিকা মিছিল করে দেখিয়ে দেবে।তিনি বলেন, বিচারের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করা কোনো সুযোগ নাই। এরা হঠাৎ হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে। হঠাৎ করে এসে যদি এভাবে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করে, তাহলে জনগণের দুর্ভোগ আছে।শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আমান উল্ল্যাহপুর আয়েশা দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, এ দেশে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে তারা (আওয়ামী লীগ) আবার কিন্তু একটা ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ তৈরি করতে চাইবে। এ সুযোগ দেশের মানুষ আর কখনো দেবে না, দিতে চায় না। সেজন্য এই সরকারকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে। হাসিনা পালিয়ে যাবার আট মাস হয়েছে। কিন্তু এখনো ঢাকাতে ফ্যাসিবাদের ঝটিকা মিছিল হচ্ছে। হঠাৎ করে ঝটিকা মিছিল করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরা যারা অপরাধী, ষড়যন্ত্রকারী, খুনি, তারাই অপকর্মগুলো করছে। যেটা হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৬-১৭ বছর হয়েছে।এ্যানি আরও বলেন, এখনো পর্যন্ত বিচার কিন্তু দৃশ্যমান না। দ্রুত বিচার করতে হবে। হাসিনার পরিবারের যারা এই দুঃশাসন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ছিল, মানুষের অত্যাচার, নির্যাতন, দুঃশাসন তৈরি করেছিল, তাদের বিচারও দৃশ্যমান করতে হবে। আমাদের জনগণের স্পষ্ট বক্তব্য হলো আমরা দ্রুত দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। আরেক দিকে সংস্কারও দেখতে চাই। নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি।সভার উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান ও প্রধান বক্তা ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির সদস্য সচিব মো. মোখলেছুর রহমান হারুন।বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দের রহমান রায়হানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, যুগ্ম-আহ্বায়ক শাহ মো. এমরান ও সদর (পূর্ব) উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
রাজধানীতে আবার ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) উত্তরায় ঢাকা-১৮ সংসদীয় এলাকায় এই মিছিল করেন দলটির নেতাকর্মীরা।ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলনের নেতৃত্বে এই মিছিল করা হয়। মিছিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।এ সময় তারা 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগানে মুখর ছিল। এছাড়াও তারা ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, 'শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহার আনামের নেতৃত্বে স্থানীয় নেতাকর্মীদের আয়োজনে আজ বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা প্রধান সড়কে প্রতিবাদী মিছিল করে আওয়ামী লীগ।

বিএনপিকে পাশ কাটাতেই নির্বাচন বিলম্ব করছে সরকার: দুদু
বিএনপিকে পাশ কাটাতেই সরকার নির্বাচন বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে এক যুব সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুম হওয়া নেতা-কর্মৗদের অবিলম্বে সন্ধানের দাবিতে এই যুব সমাবেশ হয়। সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এ সরকারের কাজে দেশবাসী খুবই উদ্বিগ্ন। তারা (সরকার) কি চায় সেটাও আমরা বুঝি না।’ সরকারের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশে কি করবেন, কি করবেন না, এটা বড় কথা না। একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনতিবিলম্বে একটা নির্বাচন দিন।’ তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আপনাদের আগেও বলেছি, হাসিনাকে যখন তাড়াতে পেরেছি, অন্য ফ্যাসিবাদের যদি উদ্ভব ঘটে তাদের তাড়ানো বাংলাদেশের মানুষের ‘ওয়ান-টু’র ব্যাপার। সেটি মাথায় রেখে কাজ করবেন। আপনাকে ফুলের মালা দিয়ে গ্রহণ করেছি। ফুলের মালা দিয়ে বিদায় জানাতে চাই। এটাই বিএনপির স্ট্যান্ট এখনো পর্যন্ত।’ সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘এই সরকার রুটিন কাজ ছাড়াকিছুই করতে পারবে না। বর্তমান প্রশাসনের ওপর দুইটি জিনিস ভর করেছে খুব বেশি করে। একটা হচ্ছে- ঠিক অফিস টাইমের মধ্যে অফিসটা করে কোনো রকমে বাড়ি চলে যাওয়া। আরেকটা হচ্ছে, কোনো ফাইল যদি সামনে আসে সেই ফাইলটাকে বিলম্ব করে করে কোনো রকম নিজে এখান থেকে সরে গিয়ে আরেক জনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। এ কারণে সব কাজ স্থবির হয়ে গেছে।’ সংগঠনের আহ্বায়ক কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুল কালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানী ঢাকায় ফের মিছিল করেছেন। রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-১৮ সংসদীয় এলাকায় আজ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মিছিল করেন তারা। জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। তারা- ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’,‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকে। এ মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর উত্তর উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলন। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা প্রধান সড়কে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ঝটিকা মিছিল করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বিদ্যমান সংবিধানের অধীনের সরকারকে বৈধ মনে করি না: ফরহাদ মজহার
লেখক ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থান আমাদের নতুন রাষ্ট্র গঠনের দিকে নেয় নাই। গণঅভ্যুত্থানের শেষে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সংবিধান বহাল রাখা হয়েছে। তা ঠিক বলে মনে করি না। এই সংবিধানের অধীনের সরকারকে বৈধ মনে করি না। আমি জনগণের পক্ষে কথা বলি। এ সরকারে পক্ষে সব সময় থাকার প্রশ্নই আসে না। সকল প্রকার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।’ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে ইমাজিনেক্সট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতীয় সংস্কৃতি: প্রেক্ষিতে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিকে ‘দেশের নতুন গঠনতন্ত্র’ উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘সংবিধান মানে আইন। ইংরেজ আইন প্রণয়ন করে, জনগণ গঠনতন্ত্র করে; সংবিধান মানেই হচ্ছে উপনিবেশিক শাসন। আপনি লুটের মাফিয়া শ্রেণির পক্ষে, আপনি একটা শাসনতন্ত্র বানাবেন। একটা আইন দিয়ে গরিবদেরকে শোষণ করবেন। সাধারণ মানুষকে শোষণ করবেন। আগের মতোই চলবেন। আর গঠনতন্ত্র মানে জনগণ নিজেরা অংশগ্রহণ করে।’ জাতীয় সংস্কৃতির মাধ্যমে জাতিবাদকে ফেরত নিয়ে আসা হয় বলে মন্তব্য কর তিনি বলেন, ‘জাতিবাদের একটি রূপ হচ্ছে বাঙালি জাতিবাদ, যার ইতিহাস হচ্ছে ফ্যাসিবাদ। ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সাংস্কৃতিকভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধীতাই আমাদের সংস্কৃতির মূল চরিত্র। সকল প্রকার জাতিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।’ এটা বাঙালি জাতিবাদের পাশাপাশি সব প্রকার ধর্মীয় জাতিবাদের বিরুদ্ধেও অবস্থান বলেও উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইসলামে জাতিবাদের স্থান নেই’। ফরহাদ মজহার বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে উৎসবের নজির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেখিয়েছে। যাতে বাঙালি ছাড়াও ছোট ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করেছ। এই উৎসবে ধর্মনিরপেক্ষ, ধার্মিক, আস্তিক, নাস্তিক, সনাতন ধর্মালম্বী, বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এবং সকলে অংশগ্রহণ করেছে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে গোষ্ঠীটি তৈরি হয় তাকে জাতি বলা হয়। এটা হচ্ছে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী।’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার সংস্কৃতি যত শক্তিশালী হোক, আমাকে কিন্তু সেখানে বাইরের পৃথিবীর সংস্কৃতির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টিকে থাকতে হবে। আকর্ষণ তৈরি করতে হবে। সেই জায়গা তৈরি নিয়ে ভাবতে হবে।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘অনির্বাচিত সরকার’ না বলার দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, ‘বাংলাদেশে অনির্বাচিত সরকারের সুনির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে। জনসম্মতিহীন অবৈধ সরকারকে অনির্বাচিত সরকার বলা হয়। যেমন- এক/এগারোর সরকার, আওয়ামী লীগ সরকার। এ সরকার অবৈধ বা জনসম্মতিহীন সরকার না। এটা ঠিক (বর্তমান) সরকার ভোটের মাধ্যমে আসেনি।’ অতীতে ৩০-৩৫ শতাংশ ভোটে বাংলাদেশের ক্ষমতায় রাজনৈতিক দলগুলো এসেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের প্রতি ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের সমর্থন রয়েছে। তাই এ সরকারকে কেন অনির্বাচিত? অনির্বাচিত সরকার তো বীনা সিক্রি (বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার) বলে বেড়ান। ভারতের সেনাবাহিনী বলে- আমরা নির্বাচিত সরকার আসলে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবো।’ ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হলে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা হবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে তুষার বলেন, ‘আপনি বলছেন- ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হলে দেশে বিশৃঙ্খলা হবে। ধরা যাক সরকার নির্বাচনটা মার্চে নিয়ে গেলো। এখন যদি ডিসেম্বরের পরে বিশৃঙ্খলা হয়, তার দায় কার? যারা এ কথা বলেছেন অবশ্যই তাদের নিতে হবে।’ ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে ও ইমাজিনেসক্সট ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র ও নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ ইমতিয়াজের সঞ্চালনায় ‘ধারণাপত্র’ পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাফর ফিরোজ। এছাড়া বক্তব্য দেন শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

র’ এর প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না: হাসনাত
ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর প্রেসক্রিপিশনে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ওই পোস্টে হাসনাত লেখেন, র’ (RAW)-এর স্টেশন হেডের সঙ্গে মিটিং করে তাদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না।

সংস্কার কেন ভোটাধিকার-গণতন্ত্রের বিকল্প হবে, প্রশ্ন রিজভীর
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলে বলেছেন, সংস্কার, ভোটাধিকার-গণতন্ত্রের বিকল্প হবে কেন? যে ভোটাধিকারের জন্য ১৫-১৬ বছর সংগ্রাম করেছেন, সেই ভোটাধিকার কেন বিলম্বিত হচ্ছে? সেটা নিয়ে কেন এত কথা হচ্ছে? কেন নির্বাচন ও ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে দাঁড় করানো হচ্ছে? বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এসব প্রশ্ন করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানে মাহফিলের আয়োজন করে ‘ইলিয়াস আলী গুম প্রতিরোধ কমিটি’। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমরা ভোট, নির্বাচন ও ভোটাধিকারের কথা বললে, সরকার আরো কিছু কথা বিকল্প হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে। গণতন্ত্র মানেই তো নির্বাচন। গণতন্ত্র মানেই তো ন্যায়বিচার। সেগুলো নিয়ে কি করছেন? আমাদের নেতাকর্মীদের নামে ৬০ লাখ মামলা। ৮ মাস ক্ষমতায় আছেন, এসব মামলা তো প্রত্যাহার করা যেত। কিন্তু এজন্য কিছুই করেননি। আজও কেন আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াতে হবে? সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ডিসেম্বর আর জুনের মধ্যে পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে কেন? অন্তর্বর্তী সরকারকে এটার জবাব দেওয়া দরকার।’ রিজভী বলেন, ‘বিএনপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয় না। তার মানে, কোনো একটা এজেন্ডা বা পরিকল্পিত নকশার মধ্য দিয়ে এই সরকার চলছে। এটাই তো মানুষের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন। এই কারণেই তো আজ এত ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। আমরা চেয়েছি একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, আমাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, আইনের শাসন নিশ্চিত করা। অন্তর্বর্তী সরকারকেই জায়গাটি নিশ্চিত করা দরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অবদানকে আমরা স্বীকার করি। কিন্তু এটা যদি এ রকম হয় যে, তাদের কথায় প্রশাসন চলবে, সব সরকারি কর্মকাণ্ড হবে, এটাকে বলে নৈরাজ্য। এই নৈরাজ্য কেন হবে? ডিসি-এসপিরা বলেন, এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বলে গেছেন, এভাবে করা যাবে না। তাহলে জনপ্রশাসন কেন?’ দোয়া মাহফিলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সাত-আট মাস অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে, গুম কমিশনে আমরা আমাদের অভিযোগ দাখিল করেছি। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সুস্পষ্ট বক্তব্য পাইনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য, কথাবার্তা, বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খবর বের হচ্ছে। এর মধ্যে কোনটি সঠিক বুঝতে পারি না। একটা ইতিবাচকভাবে খবর প্রকাশ করার হয়, আবার নেতিবাচকভাবে খবর প্রকাশ করা হয়। সরকারের কাছে সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই, আপনারা আপনাদের গুম কমিশন, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল, যেটাই গঠন করে থাকেন না কেনো, গুমের বিষয়ে আপনারা কী করেছেন, সেটা স্পষ্ট করুন।’ দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী প্রমুখ।

আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আদায় করে নেবো: ফারুক
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন দিতে হবে। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আদায় করে নেবো। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন তা দ্রুত করে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। সব সংস্কার করতে বর্তমান সরকারের তিন-পাঁচ বছর সময় লাগবে। এই তিন থেকে পাঁচ বছর কী আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন?’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন তা দ্রুত করে নির্বাচন দেন। বাকি যে সংস্কারের প্রয়োজন হবে, তা নির্বাচিত সরকার এসে করবে। দেশের জনগণের আরও অনেক দাবি-দাওয়া তখন আসতে পারে। সেগুলো আমলে নিয়ে সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার।’ সংগঠনের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এ সময় আর বক্তব্য রাখেন– বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুন অর রশিদ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু প্রমুখ।

শিগগিরই নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে যাচ্ছে জামায়াত: শিশির মনির
নিবন্ধন নিয়ে হতাশ না হতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির। শিগগিরই দলটি নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে যাচ্ছে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এ কথা জানান অ্যাডভোকেট শিশির মনির। এ সময় জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তির বিষয়টিও চলতি মাসেই ফয়সাল হবে বলে জানান তিনি। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না করলেও ভোটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। পিছিয়ে নেই জামায়াতও। এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ আসনে প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে দলটি। অথচ নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়টি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি সর্বোচ্চ আদালতে। এরই মধ্যে গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস কেটে গেছে। এর মধ্যে রাজনীতির মাঠেও বেশ সরব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অথচ, এখন পর্যন্ত নিবন্ধন না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলছেন দলের আইনজীবীরা। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, যৌক্তিক কারণে বিলম্ব হলেও হতাশ হওয়ার কারণ নেই। শিগগিরই নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাওয়ার মামলার চূড়ান্ত রায় হবে। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর আইনি প্রক্রিয়ায় অন্যদলের শীর্ষ নেতারা মুক্ত হলেও একযুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে এটিএম আজহার। সেটিও নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে দলটির ভেতরে-বাইরে। তবে, মুক্তির আইনি প্রক্রিয়া শেষ। এখন শুধু শুনানির অপেক্ষা। জামায়াতের এ আইনজীবী আরও বলেন, আগামী রোববার (২০ এপ্রিল) থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচার কাজ শুরু হবে। কিন্তু, ২৩ থেকে ৩০ তারিখ প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে থাকবেন। এরপর এই দুই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।

ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাবে বিএনপি: সালাউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সংস্কার নিয়ে সিরিয়াস বলেই ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালাচ্ছে বিএনপি। এ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দফাওয়ারী আলোচনা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপরে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এগুলোর উপরে বিস্তারিত আলোচনা চলছে। সংবিধান সংস্কার দিয়ে শুরু করেছি, তারপর জুডিশিয়ারি হবে, এরপরে নির্বাচন ব্যবস্থা হবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। আজকে যদি শেষ করতে না পারি, পরেও আলোচনা হবে।’ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হওয়া বৈঠকের চা বিরতিতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বোঝাতে চাচ্ছি, সংস্কারের বিষয়ে কতটা সিরিয়াস বিএনপি। সংবিধান সংস্কারের মধ্যে ১৩১টা প্রস্তাব আছে, স্পেডশিটে আমরা পেয়েছিলাম মাত্র ৭০টা দফা। দফাওয়ারি আলোচনা চলছে। সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্র ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, মৌলিক অধিকারের বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা করব। মোটাদাগে সংবিধান সংস্কারের মৌলিক বিষয়ে তারা যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব একটা জায়গায় আসার জন্য। আর যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলো ২৫টির মতো একমত ও আংশিক একমত হয়েছি। বাকি অধিকাংশ বিষয়ে স্পেডশিটে (রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চিঠি) আমরা একমত হতে পারি নাই। স্প্রেড শিটে বিভ্রান্ত সৃষ্টি ও মিসলিড করা হয়েছে। ১৩১ দফার মধ্য বিস্তারিত আলাপ আছে। কমিশনের মৌলিক প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে আলাপ করে ঐকমত্যে আসার চেষ্টা করা হবে। যে সংস্কারে জাতির কল্যাণ হয় সেটিই বিবেচনা করা হবে।’ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুডিশিয়ারিতে অল্প বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করছি আমাদের অনেকটা মিসলিড করার মতো হয়েছে। বিস্তারিত মতামত দিতে গিয়ে দেখা গেছে, দেড়শর বেশি দফা ছিল যার মধ্যে আমরা ৮৯টি দফার বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি। যে সমস্ত বিষয়ে হ্যাঁ-না জবাব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানে গিয়ে দেখলাম বিস্তর ফারাক। যেমন বলা আছে- আর্টিকেল ৯৫ সংশোধনী ব্যতিরেকে এখনই যদি বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়ার জন্য বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ জারি করা হয়, সেটার ক্ষেত্রে বর্তমান সংবিধানের অবস্থা বহাল রেখে বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ ও তার অধীনে কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও আইনটার মধ্যে লেখা আছে কাউন্সিল গঠন করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিএনপি চায় কিন্তু প্রক্রিয়া যেন সাংবিধানিকভাবে হয়। বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশের ক্ষমতাসহ সকল সংস্কার সাংবিধানিকভাবে হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাই হোক না কেন সেটা আনকনন্সিটিউশনাল (অসাংবিধানিক) হবে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা কন্সটিটিউশনে (সংবিধান) গৃহীত না হচ্ছে। কারণ সেখানে অধ্যাদেশ করার মতো ক্ষমতা জুডিশিয়ারিকে দেওয়া হয় নাই। সবকিছু বিধিমাফিক হওয়া উচিত।’

সংস্কারে ঘাটতি থাকলে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে: জামায়াত আমির
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে, তবে অতিরিক্ত সময় যেন না নেয় এই বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে, যেন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে।’ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘‘সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। সংস্কার কারা করবে, সংস্কারের প্রধান অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলো। এই দলগুলো যত দ্রুত সহযোগিতা করবে, তত দ্রুত নির্বাচন হবে।’ আমির বলেন, ‘সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার ঘাটতি থাকে, যদি সংস্কার না হয়- তাহলে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’ রাজনৈতিক দলগুলোকে বাস্তবতার জায়গায় এসে সংস্কারে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান আমির। দৃশ্যমান বিচার দেখাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন আমির। শফিকুর রহমান এ সময় ইউরোপের সব দেশের দূতাবাস স্থাপনের জন্য আহ্বান জানান।

এ বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় সমমনা ইসলামি দলগুলো
চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে ‘সমমনা ইসলামি দলসমূহ’। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্তে ঐকমত্য পোষণ করে দলগুলো। খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল মাজেদ আতহারী, মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, মো. আবদুল জলিল, নেজামে ইসলাম পার্টির প্রচার সচিব মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসউদ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। বৈঠকে আরও কয়েকটি বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন নেতারা। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সংবিধানের মূলনীতিতে ’মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনস্থাপন; সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ‘বহুত্ববাদ’ সংবিধানে সংযুক্ত না করা; পিলখানায় বিডিআর হত্যা, শাপলা চত্ত্বরে গণহত্যা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে গণহত্যাসহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করা; হেফাজতের নেতা কর্মীসহ আলেম-ওলামাদের নামে দায়ের করা ও অন্যান্য রাজনৈতিক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা; আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।