
তিন দলের সাথে চুলিকের বৈঠক: রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন ঢাকা সফররত মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরেন সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক। বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম, দলগুলোর অর্থনৈতিক পলিসি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর। বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন তিন দলের নেতারা। গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) গুলশানে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসায় পর্যায়ক্রমে তিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন এ কূটনীতিক। প্রথম আলোচনা হয় জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে। এতে উপস্থিত ছিলেন আমির শফিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বৈঠক শেষে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বৈঠকে রাজনীতি এবং নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে। চুলিক বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা, ক্ষমতায় গেলে জামায়াতের অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক নীতি কী হবে, তা জানতে চেয়েছেন। আঞ্চলিক বিষয়, সংখ্যালঘু, নারী অধিকার, শ্রমিক অধিকার নিয়েও জামায়াতের অভিমত জানতে চেয়েছেন। এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশ একটি নাজুক সময় পার করছে। আশা করি, তা উপলব্ধি করে যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’ দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় বিএনপির সঙ্গে। বিকেল সাড়ে ৪টার এ বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অংশ নেন। বৈঠক বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘নির্বাচন ও সংস্কারের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে অর্থনীতি ও ট্যারিফের বিষয়টা আসছে। সবাই মিলে শুল্ক কীভাবে প্রত্যাহার করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, শুল্ক একটা সহনীয় সীমার মধ্যে না আনলে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ বিএনপির অর্থনৈতিক নীতি কী হবে, তা বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে যত সংস্কার হয়েছে, বিএনপির সময়ে হয়েছে। অর্থনীতির সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে; রাজনৈতিক সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে শুরু করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা– সব সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আমাদের সংস্কারের কারণে আসছে। আগামী দিনে আমরাও বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কারে যাব।’ সবার শেষে নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক করেন এনসিপির প্রতিনিধিরা। বৈঠকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে অংশ নেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মূলত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম, নির্বাচন বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের আগ্রহ ছিল। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশের সামনের রাজনীতি কোন দিকে যাবে এবং এনসিপির গঠন প্রক্রিয়া, সাংগঠনিক কার্যক্রম, আদর্শ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’ এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি, আমাদের রাজনৈতিক দল কেন, কোন পরিপ্রেক্ষিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সংস্কার বিষয়ে সংস্কার কমিশনে আমরা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছি, সেটি আমরা বলেছি। আমাদের যে তিনটি দাবি- বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন; সেটা আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি।’ আওয়ামী লীগের বিচার এবং নির্বাচনে আসার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি।’ ‘আমাদের যে দলীয় অবস্থান- আমরা বলেছি যে, বিচারের আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক, রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং নির্বাচনে আসার কোনো সুযোগ নেই।’ পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও চেয়েছেন বলে জানান তিনি।

রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য লড়াই বিশ্বের ইতিহাসে বিরল: নজরুল ইসলাম
রাষ্ট্র পরিবর্তনের জন্য লড়াই বিশ্বের ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘অতীতের অনেক বিজয় ধরে রাখতে পারিনি। কমিশন ও সরকারকে সহযোগিতা করছি বিজয় যাতে হাতছাড়া না হয়।’ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশ গঠনের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা কাজে লাগাতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘ভালো চাই, খুব বেশি ভালো করতে গিয়ে মানুষের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা যেন স্তিমিত না হয়ে যায়।’ বিএনপির সংস্কার শুধু দাবি নয়, এটি দলের প্রতিশ্রুতি জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’ তিনি বলেন, ‘ঐকমত্যে জুলাই সনদ না হলেও বিএনপির ৩১-দফা সনদ আছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা তৈরি করেছিল।’ এ সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, ‘জাতীয় সনদ তৈরি করাই লক্ষ্য, যার মাধ্যমে স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছে, ভিন্ন মত নিয়ে আলোচনা করতে চাই। গণতান্ত্রিক সংগ্রামে বিএনপির ভূমিকা দেশের মানুষ অবগত। তাদের ভূমিকা জনগণের কাছে প্রশংসনীয়।’ বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির চেয়ারপারসন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সাবেক সংস্থাপন সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান অংশ নেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র উপ- কমিশনের মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বাসদের যত আপত্তি
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশের ওপর লিখিত মতামত জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। দলটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। এসব আপত্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সংবিধানের প্রিয়েম্বল বা ভূমিকা পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই’ বলে মত দিয়েছে বাসদ। দলটি মনে করে, ‘কমিশনের সুপারিশে পাকিস্তান আন্দোলনের ইতিহাস অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে সমান্তরাল দেখানোর বা কোনও ক্ষেত্রে ’৭১-কে ’২৪ দিয়ে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জনসাধারণের কাছে প্রতীয়মান হতে পারে।’ বুধবার (১৬ এপ্রিল) সংসদ ভবনস্থ এলইডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদারের নিকট জমা দেওয়া হয়। এ সময় বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, সদস্য জুলফিকার আলী ও প্রকৌশলী শম্পা বসু। বাসদ মনে করে, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, আত্মত্যাগ, ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ ১৫ বছরের সংগ্রাম ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধানের শেষে অ্যানেক্স হিসেবে যুক্ত থাকতে পারে। সংবিধানের সংশোধনের ক্ষেত্রে ৭ (ক) এবং ৭ (খ) বাতিল চেয়েছে বাসদ। দলটি রাষ্ট্রের নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বহাল রাখতে বলেছে। সংবিধানের দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, অষ্টমসহ অগণতান্ত্রিক সকল সংশোধনী ও নিবর্তনমূলক সকল কালাকানুন বাতিল চেয়েছে বাসদ। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি-গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে দলটি। ‘সংসদের মেয়াদ ৫ বছর রাখা। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বারের বেশি নয় এবং কর্তৃত্ব যুক্তিসঙ্গত করা। সংসদ নেতা, প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হবে কিনা সেটা স্ব স্ব দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্ধারণের এখতিয়ার রাখা।’ ‘মোট আসনের ১০ শতাংশ তরুণ তরুণীদের মনোনয়নের প্রস্তাব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ভোটার ও প্রার্থীর বয়স কমিয়ে যথাক্রমে ১৭ ও ২১ বছর করার সিদ্ধান্ত এই সময়ে অপ্রয়োজনীয় এবং সন্দেহ উদ্রেককারী।’ বলে জানায় বাসদ। আইনসভার নির্বাচনে নারী সদস্যদের সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। পাশাপাশি জামানত সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকায় সীমিত রাখা। নির্বাচনি ব্যয়ের সীমা ৩ লাখের বেশি নয় এবং নিয়মিত তদারকি ও নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, সুয়োমটোর ভিত্তিতে কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান করার পক্ষে মত দিয়েছে বাসদ। বাসদের মতামতে বলা হয়েছে, গণপরিষদ/ সংবিধান সংস্কার সভা/জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আমাদের মত- এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান জরুরি। নির্বাচিত সংসদই স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কারগুলো আলোচনা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারবে। চিঠিতে বাসদ জানায়, স্থানীয় সরকার না জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আমাদের মত- সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা।

ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে বিএনপি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক বসেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এ বৈঠক শুরু হয়। পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব মনিরুজ্জামান। গত ২৩ মার্চ ঐকমত্য কমিশনে সংস্কারের মতামত জমা দেওয়ার পর আজ এ বৈঠক হচ্ছে। এর আগে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন।

ডেসটিনির রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে নতুন দল ‘বাংলাদেশ আমজনতা পার্টি’
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ আমজনতা পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তিনি দলের আহ্বায়ক হিসেবে থাকছেন। এছাড়া সদস্য সচিব হয়েছেন ফাতিমা তাসনিম। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত শেরাটন হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে দলটি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রফিকুল আমীন। এ সময় তিনি এই দলের নাম ঘোষণা করেন। ডেসটিনি গ্রুপ ছাড়াও মোহাম্মদ রফিকুল আমীন বৈশাখী টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক ডেসটিনির সম্পাদক। অর্থ পাচার ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা দুটি মামলায় দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেন তিনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি কারামুক্তি পান। এদিকে গত রোববার (১৩ এপ্রিল) ফাতিমা তাসনিম গণঅধিকার পরিষদ থেকে উচ্চতর পরিষদের সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন। আজ নতুন দলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

নির্বাচনের সময় নিয়ে অসন্তুষ্টই থাকতে হচ্ছে বিএনপিকে
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবির প্রতি আপাতত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মতি আদায় করতে পারেনি বিএনপি। এ নিয়ে হতাশা চেপেও রাখেনি দলটি। ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি গণমাধ্যমকে বলেছে, বৈঠকের ফলাফলে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। তবে নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৬ সালের জুনের পরে যাবে না- সরকারের দিক থেকে বিএনপিকে বারবার এমনটি আশ্বস্ত করা হয়েছে। বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও সাংবাদিকদের তা-ই বলেছেন; ব্যাখ্যা করেছেন কারণও। গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌনে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে উভয় পক্ষ। দুপুর সোয়া ১২টায় এ বৈঠক শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। তখন প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছিলেন। বিএনপি তাতে আশ্বস্ত হয়েছিল। কিন্তু পরে সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা জানায়। তার পর থেকে বিএনপি নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা এবং নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানায়। সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে নানামুখী কথা শুরু হলে বিএনপি সরকারের সঙ্গে আবার বসার সিদ্ধান্ত নেয়। গতকালের বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ছিলেন। সরকারের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিএনপির সূত্র জানায়, তাদের পক্ষ থেকে বৈঠকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রমজান, তারপর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এবং এর পর বর্ষাকাল শুরুর কথা স্মরণ করিয়ে ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করা কঠিন বলে মত দেওয়া হয়। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে তিনি নির্বাচনের তারিখ ঠিক করবেন। কোনোভাবেই জুন পার করবেন না। বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের সময়সীমার কথা বলেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে চান। আমরা তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) বক্তব্যে একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি– ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি, তা আরও খারাপের দিকে চলে যাবে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।’ বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং করণীয় নিয়ে একটি লিখিত প্রস্তাবনা প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হয়। সেখানে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, তারা ফ্যাসিস্ট এবং তাদের দোসরদের বিচার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম দৃশ্যমান না করা পর্যন্ত নির্বাচন দিতে পারছেন না। খুব শিগগির এসব কার্যক্রমকে দৃশ্যমান করার উদ্যোগ ত্বরান্বিত করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয় বিএনপি নেতাদের। বিএনপি নেতারা বলেছেন, নির্বাচনের জন্য ১৮ মাস যথেষ্ট সময়। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের যে গতি, সংস্কারের যে গতি, তাতে নির্বাচন নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে। যেসব সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য হবে, তার মধ্যে যেসব সংস্কার নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। বাকিগুলো জুলাই সনদ হিসেবে থাকবে। সেই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। কিন্তু সংস্কার ও বিচারের দোহাই দিয়ে নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা উচিত হবে না। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা না বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। সেখানে কোনো সমস্যা থাকলে বিএনপি প্রয়োজনে সাহায্যের প্রস্তাব দেয়। তারা ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশন টিমে লোকবল সংকট, যথেষ্ট তদন্ত টিম না থাকায় সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বলে জানান। এ পর্যায়ে বিএনপি প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য বলেন, ‘যদি নির্বাচন নিয়ে আরও সময়ক্ষেপণ করা হয় তাহলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টির ঝুঁকি থাকবে। পতিত সরকারের দোসররা সক্রিয় হবে। তারা ষড়যন্ত্রের সুযোগ পাবে। আবার অনির্বাচিত সরকারের লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকার প্রবণতা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিএনপি শুধু নির্বাচনের স্বার্থেই নির্বাচন চায় না; গণতন্ত্রের জন্য, দেশের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে এবং গণঅভ্যুত্থানের যে প্রতিশ্রুতি, তা বাস্তবায়নে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছে।’ বিএনপি নেতারা বলেন, ‘দেশের মানুষ বিগত ১৬ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। সেই অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি আন্দোলন করেছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পর চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি। কিন্তু যখন প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন, তাতেও আশ্বস্ত হয়েছে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতির সামনে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা এবং নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানায় বিএনপি। কিন্তু তার বিপরীতে সরকারের কেউ কেউ নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। একই সঙ্গে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কথাবার্তায় জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।’ বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক ও গায়েবি মামলা নিরসন নিয়ে কথা বলেন বিএনপি নেতারা। বৈষম্যের শিকার ও পদোন্নতিবঞ্চিত প্রশাসন ক্যাডারের ৭৬৪ কর্মকর্তাকে সচিবসহ বিভিন্ন পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হলেও তাদেরকে কোথাও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে কী করবে বিএনপি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলের ভেতরে এবং আমাদের মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তারপর আমরা আবারও আপনাদের সামনে আসব।’ এদিকে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল অ্যান চুলিকের সঙ্গে গতকাল বিকেলে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকেও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবির কথা তুলে ধরে বিএনপি। নির্বাচন কোনোভাবেই জুনের পরে যাবে না: আসিফ নজরুল- বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কোনোভাবেই আগামী বছরের জুনের পরে যাবে না। যে যা-ই বলুক না কেন; এটা পুরো জাতির কাছে প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকার। বিএনপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ইচ্ছা করে দেরি করে মে বা জুন মাসে নির্বাচন করা হবে, সেটা না। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ডিসেম্বরে সম্ভব হলে ডিসেম্বরে, জানুয়ারিতে সম্ভব হলে জানুয়ারিতেই নির্বাচন হবে বলে বিএনপিকে বৈঠকে বোঝানো হয়েছে। আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের কাছে জনগণের তো একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, যেন আমরা দোষীদের বিচার করে যাই। বাংলাদেশে হাজারের বেশি তরুণ জীবন দিয়েছে, আর ৫০-৬০ হাজার মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বিচারের দাবি তো গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান আকাঙ্ক্ষা। সে ক্ষেত্রে আমরা বিচার না করে যদি নির্বাচন দিই, মানুষের কাছে জবাব দেব কীভাবে?’ সংস্কার নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই চার্টার (সনদ) প্রস্তুত হয়ে গেলেও আইনগত বিষয় আছে, নীতিগত বিষয় আছে। সেগুলো গ্রহণ করতে সময় লাগছে। বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক বলে উল্লেখ করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বিষয়ে দলটি অত্যন্ত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করে। আসিফ নজরুল বলেন, বিএনপি বলেছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করলে ভালো হয়। আমরা বলেছি, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যেটা বারবার বলেছেন, সেটাই সরকারের অবস্থান। সেখান থেকে অন্য কেউ যদি বেফাঁস কথা বা নিজস্ব বিবেচনায় কথা বলেন, সেটাতে তারা যেন বিভ্রান্ত না হন। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল)। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে দলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল থাকবে। গত ২৩ মার্চ ঐকমত্য কমিশনে সংস্কারের মতামত জমা দেওয়ার পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

নির্বাচনের সময় ঠিক হবে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে: সামান্থা শারমিন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ধারণ হবে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে। তারপর আসবে রোডম্যাপ।’ বুধবার (১৬ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা লেখেন এনসিপির এই নেত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘একটি দলকে সন্তুষ্ট করার জন্য যদি প্রধান উপদেষ্টা সময় বলতেন তাহলে এর বাইরের সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষ অসন্তুষ্ট হতো।’ পোস্টে সামান্থা শারমিন বলেন, ‘আজ (বুধবার) বিএনপি প্রধান উপদেষ্টার সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তী) সরকার বরাবরই বিএনপিকে অধিক গুরুত্ব দেয়। যদিও সেটা বৈষম্য কিন্তু ভবিষ্যৎ রাজনীতির সুস্থ পরিবেশের জন্য, আমরা সেটা নিয়ে আপত্তি করছি না। তবে একটি দলকে সন্তুষ্ট করার জন্য যদি প্রধান উপদেষ্টা সময় বলতেন তাহলে এর বাইরের সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষ অসন্তুষ্ট হতো। বিশেষত তখন যখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিরলস কাজ করছে।’ তিনি বলেন, ‘সময় ঠিক হবে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে। তারপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিতে হবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার রোডম্যাপ। বাংলাদেশের জনগণ জানবে কোন কোন বিষয়ে সকল পক্ষ একমত হচ্ছে। যদি কোনও রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কারে একমত না হয় তার ভিত্তিতে তার জনসমর্থন (ভোট) কমবে। তবে একমত হওয়া সংস্কারের পর সকলেই নির্বাচনে সোৎসাহে অংশ নেবে।’ এ সময় তিনি বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, “বিশেষত কদিন আগে বলে ওঠা 'এই সরকারের কোনও সংস্কার মানবো না' নেতাকে নিয়ে করা বৈঠকে এটুকু সাবধানতা দরকার বৈকি।”

মনে হচ্ছে মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না, এ অবস্থায় নির্বাচন সম্ভব নয়
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বর্তমানে যে মাঠ প্রশাসন রয়েছে, সেই মাঠ প্রশাসন মনে হচ্ছে নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চলছে এবং সেসব জায়গায় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। প্রশাসন অনেক জায়গায় বিএনপির পক্ষে কাজ করছে, এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকায় সফররত মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে কী আলোচনা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমরা যে প্রস্তাবনাগুলো সংস্কার কমিশনে দিয়েছি, সেগুলোর কথা বলেছি। আমরা বলেছি আমাদের তিনটি দাবির কথা—সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন। আমরা বলেছি যে আমরা এখানে নূন্যতম সংস্কার নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের জন্য আমরা কাজ করছি। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া নির্বাচন হলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি প্রশাসন বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে অনেক জায়গায়। মাঠপর্যায়ে যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে, সেই জায়গায়ও প্রশাসন আসলে নিরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা বলেছি, এ ধরনের প্রশাসন যদি থাকে তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করাটা সম্ভব নয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র, পুলিশ নিশ্চিত করতে হবে।’

নসরুল হামিদ সম্পত্তি বেচতে চান, নেই কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আড়ালে থেকে এখন সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করছেন তিনি। তবে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। আর যেসব সম্পত্তি বিক্রি করেছেন, তার অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর গুলশান ক্লাবের ঠিক উল্টো পাশে অনেকটা ফাঁকা পড়ে আছে বড় একটি প্লট। গুলশান-২-এর মতো অভিজাত এলাকায় এক বিঘার ফাঁকা প্লট আর নেই। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী এর দাম অন্তত ২০০ কোটি টাকা। মূল্যবান এ সম্পত্তির মালিক নসরুল হামিদ বিপু। দুই মাস ধরে জায়গাটি বিক্রির চেষ্টা চলছে। যদিও খুঁজে পাওয়া যায়নি কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বণিক বার্তা। নসরুল হামিদের গুলশানের মূল্যবান এ প্লটটির পাশাপাশি আরও রয়েছে পাঁচ বিঘা জমি। যেটা রাজধানীর মাদানী এভিনিউর ১০০ ফুট রাস্তার পাশে অবস্থিত। অনেকটা বাগানবাড়ির আদলে এটা গড়ে তুলেছেন তিনি। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সেখানে নিয়মিত আড্ডা দিতেন তিনি। সম্প্রতি এ জমিটিও বিক্রির জন্য ক্রেতা খোঁজা হচ্ছে। প্রতি কাঠা দুই কোটি করে ধরলেও সম্পত্তিটির মূল্য ২০০ কোটি টাকা। তবে এত বড় জায়গা একসঙ্গে কেনার মতো গ্রাহক না পাওয়ায় ছোট প্লট আকারে বিক্রির তৎপরতা চালাচ্ছে নসরুল হামিদের কোম্পানি হামিদ রিয়েল এস্টেট। বড় আয়তনের এ দুটি প্লট বিক্রি করতে না পারলেও গুলশান, বনানী ও নিকেতন এলাকার একাধিক ছোট প্লট ও বাড়ি এরই মধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন নসরুল হামিদ। আর এসব সম্পত্তি বিক্রির টাকার বড় অংশই তিনি হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শেখ হাসিনা পরিবারের ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে কলকাতায় আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা রয়েছে, এমন একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে নসরুল হামিদ আমাকে ফোন করছেন, আমি যেন তার গুলশান কিংবা মাদানী এভিনিউর জমিটি কিনি। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় নসরুল হামিদের জমি কেনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তা ছাড়া এত পরিমাণ অর্থও এ মুহূর্তে আমার হাতে নেই। তাই অপারগতা প্রকাশ করেছি।’ ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘নসরুল হামিদ আমাকে বলেছেন, তার বেশির ভাগ সম্পত্তিই বিক্রি করে দেবেন। এ জন্য তাকে যেন ক্রেতা খুঁজে দিই, তিনি অনুরোধ করেছেন। এরই মধ্যে তিনি ছোট আকারের কিছু প্লট ও বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে শুনেছি।’ দেশের হুন্ডির বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন, এমন একজন ব্যবসায়ী জানান, নসরুল হামিদসহ আওয়ামী লীগের পলাতক এমপি-মন্ত্রীদের বড় অংশ তাদের সম্পত্তি বিক্রির টাকা ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় সরিয়ে নিচ্ছেন। আগে থেকেই ওই সব দেশে তাদের বাড়ি-গাড়ি রয়েছে। তাদের স্ত্রী ও সন্তানরাও সেখানে বসবাস করে আসছিলেন। নসরুল হামিদের দুই সন্তানও বিদেশে থাকেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করেন, এমন একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নসরুল হামিদসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের অর্থ পাচারে সহায়তা করছেন। ২০১৪ সাল-পরবর্তী এক দশকের বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন নসরুল হামিদ বিপু। মন্ত্রণালয়টির মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ে সরকারের সবচেয়ে বেশি অর্থের অপচয় ও লুটপাট হয়েছে এ মন্ত্রণালয়কে ঘিরে। অভিযোগ আছে, নিজের ব্যবসা ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে নসরুল হামিদ বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। রাজধানীর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানেও তার সম্পত্তি ও ব্যবসা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত দেড় দশকে দেশের বিদ্যুৎ খাতে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ হয়। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলার ১২২ টাকা দরে) এ বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল ২০০৯-১০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত এক যুগে বিদ্যুৎ খাতে ২৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার (৩ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগ হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের এ তথ্য নসরুল হামিদ নিজেই ২০২২ সালে জাতীয় সংসদে জানিয়েছিলেন। দেশে গত দেড় দশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে গণহারে কয়েক ডজন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিশেষ আইনের অধীনে। এ আইনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়াই দর-কষাকষির মাধ্যমে প্রকল্প অনুমোদনের সুযোগ রাখা হয়েছিল। শেখ হাসিনা নিজেই এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় নসরুল হামিদ একাই পুরো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সর্বেসর্বা ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আইনের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি বিভিন্ন প্রকল্প ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দিতেন। বিদ্যুৎ খাতের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গত এক দশকে দেশে যতগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদন পেয়েছে, তার প্রতিটির বিনিময়ে নসরুল হামিদকে শতাংশের হিসাবে ঘুষ দিতে হয়েছে। এ খাত থেকে তার প্রাপ্ত ঘুষের পরিমাণই হবে হাজার কোটি টাকার বেশি। বিদ্যুৎ খাতের পাশাপাশি এলপিজি ও এলএনজি আমদানিতেও বিভিন্নভাবে ভাগ বসিয়েছিলেন নসরুল হামিদ। ২০২১ সালে দেশে এলপিজি আমদানিতে বৃহৎ একটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল সরকার। বিপুল বিনিয়োগের এ প্রকল্পটি বাগিয়ে নিতে সিঙ্গাপুরে নিজের মামার নামে নসরুল হামিদ একটি শেল কোম্পানি খুলেছিলেন। ওই কোম্পানিসহ আরও দুই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ভিটল ও জাপানের মারুবেনি করপোরেশনকে ৩০৫ মিলিয়ন ডলারের এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণে চুক্তির জন্য নির্বাচিত করতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন তিনি। গুরুতর এ দুর্নীতির বিষয়টি ওই সময় প্রকাশ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নসরুল হামিদকে পিছিয়ে আসতে হয়। নসরুল হামিদের পৈত্রিক ব্যবসা ছিল জমি বেচাকেনা তথা রিয়েল এস্টেটের। তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপ। এ গ্রুপের অধীনে হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, হামিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, ডেলকো বিজনেস অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড, হামিদ ইকোনমিক জোন, হামিদ ফ্যাশন লিমিটেড অ্যান্ড হামিদ সোয়েটার লিমিটেড ও হামিদ এগ্রো লিমিটেডের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। হামিদ গ্রুপের রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ব্র্যান্ড হলো ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ’। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদে রয়েছেন নসরুল হামিদ বিপুর ভাই ইন্তেখাবুল হামিদ অপু। বিপুর মতো তিনিও বর্তমানে পলাতক। সম্পত্তি বিক্রির বিষয়ে মন্তব্য জানতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেও নসরুল হামিদ কিংবা তার ভাই ইন্তেখাবুল হামিদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ রয়েছে। এমনকি বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে হামিদ গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে গিয়েও দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে গ্রুপটির বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারা নিজেদের নাম উদ্ধৃত করে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নসরুল হামিদ বিপু ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের পরিমাণ অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সচল ছিল। কিন্তু এর পর থেকেই পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হয়েছে। বেশ কিছু কর্মীকে এরই মধ্যে ছাঁটাই কিংবা ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। কোম্পানির রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। বেশ কিছু জমি এরই মধ্যে বেদখল হয়ে গেছে।’ নসরুল হামিদের নির্বাচনী এলাকা কেরানীগঞ্জ। এলাকায় স্থানীয়রা জানান, গত দেড় দশক ধরে নসরুল হামিদের কথাই ছিল কেরানীগঞ্জের আইন। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর গত আট মাসে অনেকেই তাদের বেদখল হওয়া জমি দখলে নিয়েছে। যদিও নসরুল হামিদ এসব জমি প্লট বানিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা নসরুল হামিদের সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন। ওই নেতার অনুসারীরা নতুন করে মানুষের জমি দখল নিতে শুরু করেছেন।’ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৮১ কোটি টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে এরই মধ্যে নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিপু ছাড়াও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারিফ হামিদের নামেও পৃথক মামলা করেছে সংস্থাটি। গত ডিসেম্বরে দায়ের করা এসব মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে গত বছরের ২২ আগস্ট দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওই দিন তার প্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। এ সময় ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ’ নামে ভবনের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি ভল্টে থাকা নগদ অর্থ, বৈদেশিক মুদ্রা এবং অস্ত্র-গুলিসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়।

আগামী রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায় জামায়াত
আগামী রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান দলটির আমির শফিকুর রহমান। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জামায়াতের আমির। ঘণ্টা খানেক বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের বিচার দেখতে চায় জামায়াত। একই সঙ্গে তারা প্রধান উপদেষ্টার দেয়া নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতির পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে বিএনপি সন্তুষ্ট না: মির্জা ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট বিএনপি। বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানাননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা বলেছি ডিসেম্বর নির্বাচনের কাট অফ সময়।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে বিএনপি
প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিএনপির নেতারা। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গেছেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয় বলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান। প্রতিনিধি দলের অন্যদের মধ্যে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে আলোচনার জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিএনপি সময় চেয়েছে বলে জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছে বিএনপি। ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে দল। নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কাটাতে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা জরুরি বলেও জানান দলটির প্রভাবশালী এই নেতা। এদিকে কাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ জানতে যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধি দল
আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ জানতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় গেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্য তারা যমুনায় যান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিএনপিদলীয় সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠকের ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ বা কর্মসূচি কী হবে। নেতারা সরকারের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচনের নিশ্চিত আভাস পাওয়া যায়, তাহলে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মনোযোগ দেবে দলটি। নির্বাচনের সময়সীমা ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না পেলে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ভাববে বিএনপি। এ বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব গত গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হবে। আমরা তো সবসময় বলে আসছি, আলোচনার মধ্য দিয়ে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। নিঃসন্দেহে এটি সম্ভব হবে এবং আমরা সবাই সফল হবো।’ চিকিৎসা শেষ ওই দিনই তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফেরেন। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, সরকারের সঙ্গে এর আগের বৈঠকগুলোতে নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং সরকারের ভেতরে-বাইরের নানা কথায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকেও তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন। সেই মতে বিএনপি অনুরোধ জানিয়েছিল, জনমনে বিভ্রান্তি দূর করতে প্রধান উপদেষ্টা যেন জাতির সামনে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি যেন নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এর বাস্তবরূপ দেখা যায়নি। এখন আবার শুরু হয়েছে এই সরকারকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় রাখার প্রচারণা। পাঁচ বছরের কথাও কেউ কেউ বলছেন। এর পেছনে সরকারের কারও কারও ইন্ধন থাকতে পারে বলে মনে করছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করে উল্টো পথে হাঁটার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি- এ কেমন আচরণ? যখনই ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচনের দাবি করা হয়, তখনই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।’ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের জন্য এত মানুষ প্রাণ দিল, আন্দোলন করল, সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে আপত্তি কোথায়? কাদের সুবিধা দিতে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা আসছে? কেন অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে?’ এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি। এর আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পেলে দলীয় কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছিল বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে। সংস্কার ইস্যুকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছিল বিএনপি। দলটি শুরু থেকে বলে আসছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত ভোটের ব্যবস্থা করা হোক। এ দাবির সপক্ষে তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও বাম ঘরানার দলগুলোর সম্মতি আছে। এর বিপরীত অবস্থানে আছে জামায়াতে ইসলামী, নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ কয়েকটি ইসলামী দল। তাদের দাবি, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। কথা হচ্ছে ছোট না বড় সংস্কার, এ নিয়েও। বিএনপি নেতারা সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে করার পক্ষে। তারা বলছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কারগুলো কিংবা সংবিধান বাদে অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সরকারের নির্বাহী আদেশ কিংবা অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। শুধু সংবিধান সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি হবে সেসব নির্বাচিত সংসদে বাস্তবায়ন করা হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সমমনা সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করছে বিএনপি। আজকের বৈঠকেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পেলে পরিস্থিতি অনুযায়ী করণীয় ঠিক করে ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা দলটির। এরই মধ্যে তারা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকও শুরু করেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা। আবার আরেকজন বলেন জুনে নির্বাচন। আরেকজন বলেছেন, পাঁচ বছর এই সরকার থাকার দরকার, জনগণ চায়। একজন উপদেষ্টা বললেন, তারা নির্বাচিত। এদিকে সরকারের ঘনিষ্ঠ একজন বললেন, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারের সৃষ্টি হয়। এই যে কথাগুলো—এতে একটা বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এতে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। এটি পরিষ্কার করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাচ্ছি আমরা।’ সরকার নির্বাচনের নির্দিষ্ট রূপরেখা না দিলে বিএনপি কী করবে–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগে আলোচনা হোক। কী আলোচনা হয় দেখি, শুনি; তারপর এ বিষয়ে কথা বলব।’ কাল ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল)। দুপুর ৩টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৩ মার্চ ঐকমত্য কমিশনে সংস্কারের মতামত জমা দেওয়ার পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ৬ মার্চ পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন।

গাজা স্বাধীন করা নিয়ে নাসির উদ্দিনের নামে মিথ্যা প্রচারণা
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের ছবিসংবলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রলের সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন নাসির বলেছেন, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মাত্র ১ সপ্তাহে গাজা (ফিলিস্তিন) স্বাধীন করার সক্ষমতা রয়েছে।’ এ বিষয়ে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, নাসির উদ্দিন নাসির এমন মন্তব্য করেননি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মাত্র ১ সপ্তাহে গাজা (ফিলিস্তিন) স্বাধীন করার সক্ষমতা রয়েছে’ শীর্ষক কোনো প্রকাশ্য কোনো মন্তব্য ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির করেননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনো রকমের নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আলোচিত দাবির সঙ্গে প্রচারিত পোস্টগুলোতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণের উল্লেখ নেই। ফটোকার্ডটিতেও কোনো গণমাধ্যমের নাম বা লোগো দেখা যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম ফটোকার্ড প্রকাশ করলে তাতে প্রতিষ্ঠানটির নাম বা লোগো সংযুক্ত থাকে। তাই স্পষ্টভাবে বলা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটি কোনো গণমাধ্যমের নয়। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া একই মন্তব্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের নামেও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে তার পক্ষ থেকে এমন কোনো মন্তব্য করার তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। সুতরাং, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের নামে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

ড. ইউনূসের সাথে বৈঠক আজ, নির্বাচনের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা চায় বিএনপি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায় এবং দ্রুত সময়ে যাতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় সে দাবি নিয়ে আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে বিএনপি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথাও জানাবেন দলের নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বুধবার দুপুর ১২টায় এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল অংশ নেবেন। বিএনপিদলীয় সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠকের ওপর নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ বা কর্মসূচি কী হবে। নেতারা সরকারের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচনের নিশ্চিত আভাস পাওয়া যায়, তাহলে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মনোযোগ দেবে দলটি। নির্বাচনের সময়সীমা ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না পেলে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ভাববে বিএনপি। এ বৈঠকের বিষয়ে ফখরুল ইসলাম গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হবে। আমরা তো সবসময় বলে আসছি, আলোচনার মধ্য দিয়ে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই। নিঃসন্দেহে এটি সম্ভব হবে এবং আমরা সবাই সফল হবো।’ চিকিৎসা শেষ ওই দিনই তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফেরেন। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, সরকারের সঙ্গে এর আগের বৈঠকগুলোতে নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং সরকারের ভেতরে-বাইরের নানা কথায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকেও তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন। সেই মতে বিএনপি অনুরোধ জানিয়েছিল, জনমনে বিভ্রান্তি দূর করতে প্রধান উপদেষ্টা যেন জাতির সামনে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি যেন নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেন। এর বাস্তবরূপ দেখা যায়নি। এখন আবার শুরু হয়েছে এই সরকারকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় রাখার প্রচারণা। পাঁচ বছরের কথাও কেউ কেউ বলছেন। এর পেছনে সরকারের কারও কারও ইন্ধন থাকতে পারে বলে মনে করছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করে উল্টো পথে হাঁটার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি- এ কেমন আচরণ? যখনই ডিসেম্বরের মধ্য নির্বাচনের দাবি করা হয়, তখনই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়।’ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের জন্য এত মানুষ প্রাণ দিল, আন্দোলন করল, সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে আপত্তি কোথায়? কাদের সুবিধা দিতে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা আসছে? কেন অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে?’ এসব বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি। এর আগে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পেলে দলীয় কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছিল বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে। সংস্কার ইস্যুকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছিল বিএনপি। দলটি শুরু থেকে বলে আসছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত ভোটের ব্যবস্থা করা হোক। এ দাবির সপক্ষে তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও বাম ঘরানার দলগুলোর সম্মতি আছে। এর বিপরীত অবস্থানে আছে জামায়াতে ইসলামী, নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ কয়েকটি ইসলামী দল। তাদের দাবি, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। কথা হচ্ছে ছোট না বড় সংস্কার, এ নিয়েও। বিএনপি নেতারা সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে করার পক্ষে। তারা বলছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কারগুলো কিংবা সংবিধান বাদে অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সরকারের নির্বাহী আদেশ কিংবা অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। শুধু সংবিধান সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি হবে সেসব নির্বাচিত সংসদে বাস্তবায়ন করা হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে সমমনা সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করছে বিএনপি। আজকের বৈঠকেও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পেলে পরিস্থিতি অনুযায়ী করণীয় ঠিক করে ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা দলটির। এরই মধ্যে তারা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকও শুরু করেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা। আবার আরেকজন বলেন জুনে নির্বাচন। আরেকজন বলেছেন, পাঁচ বছর এই সরকার থাকার দরকার, জনগণ চায়। একজন উপদেষ্টা বললেন, তারা নির্বাচিত। এদিকে সরকারের ঘনিষ্ঠ একজন বললেন, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারের সৃষ্টি হয়। এই যে কথাগুলো—এতে একটা বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এতে নির্বাচন নিয়ে জনগণের মনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। এটি পরিষ্কার করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাচ্ছি আমরা।’ সরকার নির্বাচনের নির্দিষ্ট রূপরেখা না দিলে বিএনপি কী করবে–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগে আলোচনা হোক। কী আলোচনা হয় দেখি, শুনি; তারপর এ বিষয়ে কথা বলব।’ কাল ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল)। বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৩ মার্চ ঐকমত্য কমিশনে সংস্কারের মতামত জমা দেওয়ার পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ৬ মার্চ পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াত আমির
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। রোববার লন্ডনে খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।বিস্তারিত আসছে...

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ঢাকা ১১ আসন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে এই মিছিল করেন তারা।নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তার ফেসবুকে মিছিলটির ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহার আনামের নেতৃত্বে স্থানীয় নেতাকর্মীদের আয়োজনে আজ বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা প্রধান সড়কে এই প্রতিবাদী মিছিল করা হয়।এ সময় তারা- ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখরিত ছিল। এছাড়াও তারা- ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘অবৈধ সরকার, মানি না মানবো না’, ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকে।উল্লেখ্য, এর আগে গত ৬ এপ্রিল (রবিবার) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।

ইসলামপন্থীরা এবার একক প্রার্থী দিতে চায়, জানালেন চরমোনাই পীর
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ইসলামি দল মিলে একটি বাক্স দেওয়ার ব্যাপারে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। এবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমও জানালেন সেই সম্ভাবনার কথা। সেই প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে চরমোনাই পীর আশা করছেন, তাদের এই উদ্যোগ সফল হবে।মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মাগুরার শালিখায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জনতার প্রতি আহ্বান রেখে চরমোনাইর পীর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বহু শাসক আমরা দেখেছি। বহু নীতিও আমরা দেখেছি। আমাদের কাংখিত রাষ্ট্র আমরা পাই নাই। এবার ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে হবে। ইসলামপন্থী সকলে এবার আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা যে দলই করেন না কেন এবার দেশের স্বার্থে ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করুন। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছবেই।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো পরিবর্তন হয় নাই। চাঁদাবাজি, দখলদারি, পেশীশক্তির প্রদর্শন এখনো বিদ্যমান। কারা এগুলো করছে তা আমরা সবাই জানি। জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোতে পতিত স্বৈরাচারের রেশ এখনো আছে। এই অবস্থায় নির্বাচনকে মুখ্য করে তোলার কোনো কারণ নেই। বরং সংস্কার করে ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্রকাঠোমো নিশ্চিত করেই নির্বাচনে যেতে হবে। যেসব বিষয়ে একমত বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনমুফতি রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাতে জ্বালানি একটি প্রধান সমস্যা। অপ্রতুল জ্বালানি এবং জ্বালানির দাম নিয়ে স্থিতিশীল কোন নীতি না থাকার কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত থাকে। সাম্প্রতিক সরকার বিনিয়োগ সম্মেলন করলো। সেখানে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করার নানা চেষ্টা করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। অথচ এখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।চরমোনাই পীর বলেন, গ্যাসের দাম নির্ধারণের এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নতুন শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। একই খাতে ব্যবসারত পুরোনো কারখানা কম দামে গ্যাস পাবে। নতুন কারখানাকে বাড়তি দাম দিতে হবে। ফলে নতুনেরা পুরোনোদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়বেন।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে নীতির ধারাবাহিকতা থাকা আবশ্যক। নীতি অনিশ্চয়তা বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে দ্বিধাগ্রস্ত করে। ফলে নুতন শিল্পের জন্য ৩৩% দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং ব্যবসা সংক্রান্ত নীতিতে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

‘সুস্থ আছেন তোফায়েল আহমেদ’
বাংলাদেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ সুস্থ আছেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে হঠাৎ করে ওঠা তার মৃত্যুর খবরটি গুজব। ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীন তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে জানতে তোফায়েল আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী হাসনাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুস্থ আছেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি ঘুমাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি তোফায়েল আহমেদের জামাতা ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত তোফায়েল আহমেদ চলমান কোনো কিছুই বোঝার মতো পরিস্থিতিতে নেই। ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন ও তার স্ত্রী ডা. তসলিমা আহমেদ জামান মুন্নী (তোফায়েল আহমেদের মেয়ে) বাংলাদেশের এই অতিচেনা মানুষটির সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন। দিন-রাতের অধিকাংশ সময় কাটে তার বনানীর বাড়িতে। তোফায়েল আহমেদের পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, এখন তিনি কোনো কিছু বোঝার মতো অবস্থায় নেই। প্রায় বিনষ্ট স্মৃতিশক্তি তাকে অনেকটাই অনুভূতিহীন করে দিয়েছে। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের কেউ দেখতে এলে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন। ভয়াবহ স্ট্রোকের কারণে শরীরের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় দিন-রাতের দুই-তৃতীয়াংশ সময়ই ঘুমিয়ে থাকেন। হাঁটতে পারেন না। শারীরিক জটিলতার কারণে প্রায়ই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

দ্রুত বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবে দেখতে চাই: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবে দেখতে চাই।’ সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন রোডে এনসিপি আয়োজিত পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘নাগরিক পার্টি বর্তমানে বিচার, কাঠামোগত সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়কে রাজনৈতিক এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গ্রহণ করেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে বিচার ও সংস্কার কার্যক্রমের একটি রোডম্যাপ চেয়েছি, যাতে এগুলোর মাধ্যমে গণপরিষদ ও আইনসভায় অগ্রসর হওয়া যায়।’ নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো হাসিনামুক্ত, ফ্যাসিস্টমুক্ত বৈশাখ উদযাপন করতে পারছি। আশা করি সামনের দিনগুলোতে নববর্ষ জাতীয় উৎসব হিসেবে পালন করতে পারবো।’ জুলাই বিপ্লব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে সেভাবে ধারণ করছে না। অথচ আমরা তখনই বলেছিলাম, এটি কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।’ নাহিদ বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান কেবল দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি রাষ্ট্রের আমূল কাঠামোগত পরিবর্তন, মানুষের ন্যায়বিচারের অধিকার এবং একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন।’ অনুষ্ঠানে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ দলের অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা সায়মন গ্রেফতার
কারওয়ান বাজারে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সায়মন নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) এক এসএমএসের মাধ্যমে পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গত ৬ এপ্রিল মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে কারওয়ান বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তখন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনী প্রচার চলছিল। বেগম খালেদা জিয়া সেই নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আওয়ালের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।সে সময় তার গাড়িবহরে হামলা করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোকজন। এ ঘটনার ১০ বছর পর ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

আওয়ামী লীগের মৃত্যু ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’ সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ছাত্র-জনতাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় ইতিহাস হয়ে থাকবে। বৈশাখী শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তা এসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ, যা নষ্ট করার জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রচলন শুরু করে আওয়ামী লীগ। এ দেশে সব জাতি ধর্মের মানুষ একসঙ্গে এসব সংস্কৃতি পালন করবে, এর মধ্যে ধর্ম চর্চাকে আনা যাবে না। যারা সংস্কৃতিকে নষ্ট করবে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।’ এ সময় বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে ভারতীয় সংস্কৃতি বর্জনের আহ্বান জানান তিনি। এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিগত ১৫ বছর পরিকল্পিতভাবে একটি দেশের সংস্কৃতি এ দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয়েছে।’ সকালে রাজধানীর পরীবাগ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুভ নববর্ষ উপলক্ষ্যে এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সতীর্থ স্বজন। তিনি বলেন, ‘এমনকি এই পহেলা বৈশাখে মুখোশের আড়ালে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হতো। এমনকি দাড়ি-টুপি নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হতো, দাড়ি-টুপি পরা সব মানুষ কি খারাপ? না।’ জুলাই ছাত্রদলের কথা স্মরণ করে রিজভী বলেন, ‘তুমুল আন্দোলন চলছে, আমি কারাগারে। সেখান থেকে শুনছি, তারুণ্যের উদ্দীপনা, তেজ। পুলিশ বলছে, ‘গুলি করি একটা পড়ে যায়, আবার সেখানে এসে আরেকজন দাঁড়ায়’। এই উদ্দীপনা দিয়েছে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের গান, লেখা, অনেক কবির লেখনীর মাধ্যমে। যার জন্য আমাদের ১৬ বছরের লড়াই, সেটি আমরা নিশ্চিত করি। সেই গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করা নিয়ে কোনো টালবাহানা করা যাবে না। এই শুভ নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা দ্রুত ভোটাধিকার ফিরে দেওয়া। কারণ ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়ে নিজের কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল।’ সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘ভোটাধিকারকে কেন সংস্কারের সঙ্গে এক করে দেখা হচ্ছে, গণতন্ত্র মানেই সংস্কার। গণতন্ত্র হচ্ছে প্রবাহমান খরস্রোত নদীর মতো। এখানে কর্তৃত্ববাদের কোনো জায়গা নেই, আর যেখানে কর্তৃত্ববাদের জায়গা নেই সেখানেই গণতন্ত্র বয়ে যায়। সংস্কার হচ্ছে বয়ে যাওয়া।’

আলোচনা-ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপসহ সব সমস্যার সমাধান হবে: মির্জা ফখরুল
আলোচনা ও ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপসহ সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ঐক্য সম্ভব হবে।’ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন বিএনপি এ নেতা। এ সময় বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বলে জানা গেছে। আগে এই সময়সূচি নির্ধারণ ছিল। সেখানে নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবির বিষয়টি বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা কাছে আবারও উস্থাপন করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবারের বৈশাখ অতীতের সব জঞ্জাল সরিয়ে এক নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবে।’ এর আগে, গত ৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারা সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় বিএনপির মহাসচিবের ঘাড়ের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়ে। মুক্তির পর সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা করান তিনি।