কেন বারবার মার খাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা?


April 2025/Boishommo.jpg

২০২৪ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে রাজপথে নেমে এসেছিল দেশের আপামর জনসাধারণ। সেই আন্দোলনের জেরেই দেশ দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনার স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পায়। যাদের ডাকে স্বৈরশাসকের গুলির সামনে দাঁড়িয়েছিল দেশের ছাত্র-জনতা, তারাই এখন মারধরের শিকার হচ্ছেন বলে বিভিন্ন সময় জানা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক মাসের মধ্যেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কেন মার খাচ্ছেন? 

গত এক মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর অন্তত ৭টি হামলা-মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

গত ১৬ মার্চ কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এনসিপি নেতাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫ জন আহত হন। ২৪ মার্চ হাতিয়ায় হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। সে সময় তিনি নিজের ফেসবুক পেজে দাবি করেন, হাতিয়ার জাহাজমারাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা এ হামলা করেছেন।
 
গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় নেতা ঢাকা কলেজ ছাত্র কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি দিপু রহমান বিজয়। জমিসংক্রান্ত বিষয়ে এই হামলা হয়েছিল বলে জানা যায়। 

দুই দিন পর ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের রাউজানে হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ইসতিয়াক হোসেন সিফাত। রাজনৈতিক কারণে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর থানা এলাকায় হামলার শিকার হন ছাত্ররা। রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস আই টুটুল ও তার সহযোগীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। 

পর দিন মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সাবেক নেতা খালিদ বিন সাঈদ ও সাঈদ স্বাধীন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে রামুর চেইন্দা বসুন্ধরা এলাকায় একটি বাণিজ্য মেলায় চলমান জুয়ার আসর বন্ধ করায় তাদের ওপর এই হামলা করা হয়েছে। 

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরের উত্তর কাট্টলীর আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে তিন দফা হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ওই কলেজের এক নারী শিক্ষিকাকে কলেজে আসতে নিষেধ করা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সেখানে গেলে কলেজের ভেতর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর দুই দফা হামলা করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে সেখানে আরেক দফা হামলা হয় বলে জানা যায়।

এসব ঘটনায় এখনো পর্যন্ত বড় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারাবাহিক হামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, সামাজিক অসহিষ্ণুতা ও দমননীতিরই বহিঃপ্রকাশ। ফলে ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়েই উদ্বেগ বাড়ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×