সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিএনপির

সংস্কারের বিপক্ষে নয় বিএনপি, তবে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা হলে ফের আন্দোলনের নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দেয়া রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব প্রকাশ করে একমাসের মধ্যেই জুলাই সনদ স্বাক্ষর করে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব। জুলাই বিপ্লবের পর ভেঙে পড়া রাষ্ট্র মেরামতে সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাড়া আশা জাগিয়েছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দেড়যুগের ভোটাধিকার ফিরে পাবার আকাঙ্ক্ষাও। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি, সংস্কারের পাশাপাশি শিগগিরই নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিজেদের অবস্থানে অনড়।এ নিয়ে বরাবরের মতোই কিছু মহলের সমালোচনার মুখে বিএনপি। প্রশ্ন উঠছে দলটি সংস্কার চায় নাকি ক্ষমতা চায়। তবে বিএনপির নেতাদের সাফ জবাব, স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় থাকতেই রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দিয়ে এসেছেন তারা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবেও সাড়া দিয়ে বিএনপি ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছে।ডিসম্বরের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ আদায়ে নিজেদের মতামতের সঙ্গে ঐকমত্যে শরিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বিএনপি সাত-আট বছর আগ থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। একবারেই কি সংস্কার হয়? এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে। যে সরকারই আসুক সংস্কার করতে হবে। যেগুলো হাতে থাকবে সেগুলো, আবার নতুন কোনো সংস্কার।’সংস্কার নিয়ে বিএনপির কোনো সমস্যা নেই জানিয়ে এই নেতা বলেন, ‘আমরা তো সংস্কার চাই। তবে নির্বাচন বিলম্ব করার কোনো কারণ দেখি না। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা, তারপর গরম। এরপর এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। কাজেই জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচনটা হওয়াই ভালো। এরপরে গেলেই জনগণ ও বিএনপি মানবে না।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগে কারও মুখ দিয়ে সংস্কারের শব্দ বের হয়নি। কিন্তু বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের কথা বলে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেয়া সব রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রস্তাব প্রকাশ করলে জনগণও জানল একমত কোথায় হয়েছে কোথায় হয়নি। যেখানে ঐকমত হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার একমাসের মধ্যে সমাধান করা যাবে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া সম্ভব। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে নির্বাচন হতে পারে।’দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, বাঁচিয়ে রাখা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করাসহ সমস্ত উদ্যোগ বিএনপির নেতৃত্বে হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে।’

মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত : আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। নির্বাচন হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনা। এটা একটা জনগণের মালিকানার বিষয়।’ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং জন অধিকার পার্টির সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি। আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে আমরা আজও বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছি। নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করবে, তারা তো এটাই মনে করবে, তাই না? ভোট হবে, ক্ষমতায় যাবে।নির্বাচিত সদস্যরাই নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবেন, ক্ষমতায় যাবেন। এটাই তো গণতন্ত্র। এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় তো কোনো কারণ দেখছি না।’ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টির সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট। প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল থেকে বিএনপি তার শরিক জোট ও মিত্রদের সঙ্গে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আলোচনা শুরু করে। এখন পর্যন্ত বিএনপি ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, সিপিবি, বাসদ, লেবার পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, এনডিএম ও গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনও সমস্যা দূর করা সম্ভব: ড. ইউনূস

কাতার ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সামাজিক ব্যবসার ওপরে বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকাতার ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সামাজিক ব্যবসার ওপরে বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ব্যবসার মাধ্যমে নিজের জন্য টাকা কামিয়ে নিজেকে ধনী করা যেতে পারে, অথবা ব্যবসা করে পৃথিবীর যত সমস্যা আছে, তা দূর করা যেতে পারে, এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছা। তিনি বলেন, ‘এটাকে বলে সামাজিক ব্যবসা। এর মূল উদ্দেশ্যই অর্থ আয়ের চেয়ে সমস্যার সমাধান করা।’ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দোহায় কাতার ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘চাকরি করা কারও জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না। এটি একটি ভুল দিকে যাওয়ার মতো অবস্থা। মানুষ কারও অধীনে কাজ করার জন্য জন্ম নেয়নি। কেন আমি চাকরি করে দাসত্বের জীবন বেছে নেবো। কারও কাছ থেকে নির্দেশ নেওয়া মানুষের সঙ্গে যায় না। তাহলে আমরা কী করবো। আমি বলি, ব্যবসার প্রচলিত পদ্ধতি একদম ভুল। এটি দাসত্ব তৈরি করে। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র মুনাফা কীভাবে বাড়ানো যায়— সেই পথ দেখানো হয়। শুধুমাত্র একটি পরিবর্তন সব প্রেক্ষাপট পাল্টে দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘সামাজিক ব্যবসার প্রচলন করার অভ্যাস সবার মধ্যে নেই। অর্থ আয় করায় হয়তো সুখ নিয়ে আসতে পারে, কিন্তু অন্যকে, পুরো পৃথিবীকে খুশি করার মধ্যে ব্যাপক সুখ আছে। সুতরাং, নিজেই বিচার করুন— কোন ধরনের সুখ আপনার প্রয়োজন। আমি মনে করি, সবার কাছে একটি স্বতন্ত্র আইডিয়া আছে, যা কিনা পুরো পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। কিন্তু কেউ সেই পথে হাঁটে না। কারণ সেই পথের প্রচলন নেই, প্রচলন আছে শুধু মুনাফা অর্জনের।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীকে বদলানোর শক্তি তোমাদের মধ্যে আছে। ভুল পথে সেই শক্তির অপচয় করা ঠিক হবে না। জীবন অনেক ছোট। তোমরা ইতোমধ্যে তারুণ্যের সীমা অতিক্রম করেছো। এখনই সময় পৃথিবীকে বদলানোর। নতুন পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হও পৃথিবীকে বদলাতে, অস্ত্র নিয়ে নয়।’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দারিদ্র্যতা গরিব মানুষের সৃষ্টি নয়। তাহলে কারা করেছে? আমরা যেই ব্যবস্থা পৃথিবীর জন্য প্রচলন করেছি সেটি। আমরা এর বিপরীত ব্যবস্থা যেটা দারিদ্র্যতা সৃষ্টি করবে না, সেটা তৈরি করছি না। আমাকে বিভিন্ন বিজনেস স্কুল থেকে আমন্ত্রণ জানান হয়। আমি শুধু গিয়ে বলি যে,. আমরা ভুল পথে হাঁটছি। আমি বলি যে, আপনারা ব্যবসা শেখাচ্ছেন মানুষকে গরিব করার জন্য। আমি আপনাদের থামতে বলছি না। শুধু বলছি আপনারা শুধু টাকা কামানোর কথা শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন। আপনারা নিশ্চিত করেন যে, আপনাদের শিক্ষার্থীরা যেসব কোম্পানিতে চাকরি করবে, সেসব কোম্পানি যেন অনেক সফল হয়, অনেক আয় করে। আমি শুধু বলছি, আপনারা কেন একটা আলাদা অনুষদ কিংবা বিভাগ তৈরি করছেন না, সামাজিক ব্যবসার জন্য। তরুণদের শেখান কীভাবে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে যেকোনও সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।’

ক্ষমা-অনুশোচনার প্রশ্নে এখনো আওয়ামী লীগের ‘না’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে আওয়ামী সরকারের। আওয়ামী লীগের আমলের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কয়েকজন আছেন কারাগারে। ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলন দমাতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা। সরকার পতনের ৯ মাস পার হলেও এর দায়ে ক্ষমা প্রার্থনা বা অনুশোচনা করেনি আওয়ামী লীগ। আন্দোলনে দমননীতি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমা চায় বা অনুশোচনা করে, তাহলে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারে, এমন একটা আলোচনা রয়েছে রাজনীতিতে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও কেউ কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তবে ক্ষমা চাওয়ার কোনো চিন্তা দলটিতে এখনো নেই। তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা আছে, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যায় না। বরং তারা এখনো ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ নিয়েই আছেন। ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক মাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এখন বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পতনের আগে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। কিন্তু অনুশোচনার প্রশ্নে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে। এ জন্য অন্য কোনো পক্ষের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার বিষয় নেই।’ বিদেশে অবস্থান করা দলটির আরেকজন নেতা জানান, পরিস্থিতি সামলাতে তাদের কিছু ভুল ছিল, এমন আলোচনাও তাদের মধ্যে আছে। দলগতভাবে অবশ্য তারা এখনো কিছু বলেননি। তিনি উল্লেখ করেন, তাদের দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ এখনো হয়নি। তারা এখন পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে চাইছেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরার বিষয় নিয়েও তারা আলোচনা করছেন। তবে শুরু থেকেই ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনার বিষয়টি দলীয় সংস্কৃতিতে নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে ভুলের জন্য দলীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনা করার সংস্কৃতি নেই। এর আগে কোনো দল তা করেনি। আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগও সে পথে হাঁটবে না। দলটি তাদের ন্যারেটিভ এবং অবস্থান নিয়েই রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’ সূত্র : বিবিসি বাংলা

অপরাধী আওয়ামী লীগ নেতাদের জামাই আদরে আদালতে হাজির করা হচ্ছে

ভয়াবহ অপরাধী আওয়ামী লীগের নেতাদের জামাই আদরে আদালতে হাজির করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, গণহত্যাকারী হাসিনার বাহিনীর নেতারা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ভয়াবহ অপশাসনের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূরে থাক, উল্টো আদালতে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। হাজারও শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আরও বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ মন্তব্য করেন তিনি। রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘ রক্তঝরা আন্দোলনের অব্যবহিত পর থেকে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির প্রত্যাশার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। হয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও গণতন্ত্রকে মজবুত কাঠামো তৈরির প্রস্তুতির অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। পতিত স্বৈরাচারের খুনের আসামিরা প্রকাশ্যে আদালতে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, খালেদা জিয়ার বিচার চেয়ে বক্তব্য রাখে।’ জুলাই-আগস্টের শাজাহান খান গংরা আদালতে এসে সরকারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আদালতকে ভেংচি কাটছে, পুলিশকে থোড়াই কেয়ার করছে। হাসিনার দোসররা আসামি হয়েও আদালতে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে তা মূলত অন্তর্বতী সরকারকে ‘অকার্যকর’ প্রমাণের এক গভীর চক্রান্ত।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ প্রশাসন নীরবতায় তারা এমন আচরণ করছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাসিনার অলিগার্করা ‘সর্ষের ভেতর ভূত’ হয়ে থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’ এছাড়াও পাড়া-মহল্লা, পথে-ঘাটে, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের কোনো কমতি নেই মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার একটি ভরসা হচ্ছে পাচার করা টাকা, সেই টাকার জোরে দেশে নানা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। একটি প্রবাদ আছে ‘টাকায় কথা কয়’- শেখ হাসিনা এই প্রবাদটি কাজে লাগাতে চাচ্ছেন।’ প্রশাসনের কিছু ব্যক্তির সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ঝটিকা মিছিল করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে বলে দাবি রিজভীর। তিনি আরও বলেন, ‘আঘাত করছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়িতে। ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের মানিকগঞ্জের বাড়ি আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করা হয়েছে। কোনো কোনো পক্ষ আছেন যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, তাদের নেপথ্য ইন্ধন না থাকলে ফ্যাসিস্ট অনুচররা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দুঃসাহস দেখায় না।’ আওয়ামী দুঃশাসনের ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে যুক্তরা আজও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে বলেও উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘সুতরাং হাট-বাজার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সেক্টরে ফ্যাসিস্টদের সিন্ডিকেট তৎপরতা বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম প্রমুখ।

আগে স্থানীয় নির্বাচন চান চরমোনাই পীর ও নুরুল হক নুর

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদ। বুধবার রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে দল দুটির বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন, গণহত্যায় জড়িতদের বিচার, আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতেও ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন দল দুটির নেতারা। ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ একমত হয়েছে। রেজাউল করীম বলেন, গত ৫৩ বছরে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচনের মাধ্যমে অযোগ্য লোকজন ক্ষমতায় বসে দেশকে অশান্ত করেছিল। সে জন্য আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনে একমত হয়েছি। ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, কিছু মৌলিক সংস্কার না হলে দেশে আবার স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট শাসন তৈরি হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নির্মম গণহত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইছি। তাদের রাজনীতির সুযোগ পাওয়া উচিত নয়। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ অনেক আগে থেকেই একমত বলে জানিয়েছেন নুর। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে স্থানীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে যারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও নির্বাচন বাতিল করা দরকার। গত আট মাসে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি না থাকায় সেবা পেতে মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কিছু মানুষ জোর করে আধিপত্য বিস্তার করছে। সে জন্য স্থানীয় নির্বাচন কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন। আবার জাতীয় ঐকমত্যেরও প্রয়োজন। অন্তত তার আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে। বাংলাদেশ এমন রাষ্ট্র হবে, যেখানে ইসলামী আদর্শবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা হবে না। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা ছিলেন। এছাড়া গণঅধিকারের মুখপাত্র ফারুক হাসান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি-জামায়াতসহ সকলকে দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমাদের দেশটা এখন খুব খারাপ অবস্থায় আছে। দেশের জনগণের, জাতির, দলের প্রত্যেকটা নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যদি বাংলাদেশের জনগণকে বিভক্ত করা যায়, এদেশকে আবারও ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাতে চলে যেতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু, যে দলই হোক, বিএনপি-জামায়াত, এনসিপিসহ অন্যান্য সব দলকে জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমানকে নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা আজকে থেকে বিশ বছর আগে তাকে যেরকম দেখেছি বিশ বছর পরে দেখছি অনেক তফাৎ। আজকে তারেক রহমান সত্যি সত্যি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন এবং সঠিকভাবে পালন করছেন। যারা একসময় তাকে পছন্দ করতেন না, তারাও আজকে বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে তারেক রহমানের মধ্যে ম্যাচিউরিটি এসেছে। এটা শুনতে ভালো লাগে আমাদের।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আজকে দেশে একটা বিষয় বেশ আলোচনায় এসেছে; নির্বাচন না সংস্কার। তবে আমি বলতে চাই নির্বাচনের বিকল্প কেবল নির্বাচনই হতে পারে। অন্য কোনো কিছু হতে পারে না। নির্বাচনের বিকল্প নির্বাচন। এখন কথা বললেই বলবে যে, মির্জা আব্বাস সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলে, সংস্কার চায় না। কিন্তু না, আমাদের জন্য, নির্বাচনের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য যে সংস্কারটুকুর প্রয়োজন আমরা সেই সংস্কারটুকু চাই-ই।’ তিনি বলেন, ‘আমি একবার বলেছিলাম যে, আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন সব সংস্কারতো মানা যাবে না। সেই কথাটিকে টুইস্ট করে আমাদের বিদেশে অবস্থানর তথাকথিত সাংবাদিক এমনভাবে বলল, বিএনপি সংস্কার চায় না, মির্জা আব্বাস সংস্কার চায় না। এমন কী সালমান এফ রহমানের টাকা খেয়ে যার স্বাস্থ্য-চেহারা মোটা হয়েছে তিনি প্রায়ই ফেসবুকে এসে বলেন, কেন মির্জা আব্বাস মানবেন না? আমি বলতে চাই, তোমার যেমন বিদেশে পালিয়ে থেকে কথা বলার অধিকার আছে, আমার কী দেশে থেকে কথা বলার অধিকার নাই?’ আমি এই দেশে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে জেলে থেকেছি সহকর্মীদের নিয়ে। পালিয়ে যাইনি। আপনারা তো পালিয়ে গিয়ে লম্বা লম্বা কথা বলতেছেন। আমি আপনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, যারা দেশের বাইরে আছেন, ইউটিউবার যারা আছেন; ভাই আমরা রাজনীতি ছেড়ে দেব, আপনারা দেশে আসেন। আপনাদের অনেক জ্ঞান, অনেক বুদ্ধি। আপনাদের জ্ঞান বুদ্ধি আমাদের অনেক প্রয়োজন। আপনারা দয়া করে দেশে আসেন। বুদ্ধি দেন, কথা বলেন, কাজ করেন, মেনে নেব।’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এনসিপির একজন বলে ফেললেন, এখন নির্বাচন করা সম্ভব না। কারণ প্রশাসনের সব জায়গায় বিএনপির লোক বসে আছেন। আরে ভাই, ১৭ বছর আওয়ামী লীগ দেশ শাসন করল, আপনি বিএনপির লোক কই পাইলেন? আমি বুঝলাম না। এই সমস্ত কথা নেহাতই বাচ্চাদের কথার মতো বলছেন।’ তিনি বলেন, ‘ইদানিং একটা গ্রুপ ফেসবুকে বলার চেষ্টা করছে যে, বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। আরে ভাই, ১৭ বছর এদের (আওয়ামী লীগ) যন্ত্রণায় পাগল হয়ে গেছি। পরিবার-পরিজনসহ অশান্তিতে ভুগেছি। বিএনপি অনেকের পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে। বরং আমি বলতে চাই আওয়ামী লীগকে যারা দেশে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এই দেশে আওয়ামী লীগের অবস্থান থাকতে পারে না। এবং শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীসহ প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, তাদের সবার বিচার হতে হবে।’ সোশ্যাল মিডিয়ার একটিভিস্টদেরকে উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এদের কাজ হলো দেশের মধ্যে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রাখা। এদের থেকে আমাদেরকে সাবধান থাকতে হবে। জাতির বিবেক এখনো অন্ধ হয়ে যায়নি। দুয়েকজন লোকের কথায় সব শেষ হয়ে যায়নি। শেষ হয়ে যাবে না।’ ড. ইউনূসকে উদ্দেশে করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কয়েক দিন আগে শফিউর রহমান নামে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ তো আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট। আরও আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট কিন্তু আপনার (ড. ইউনূস) ডানে-বাঁয়ে আছে। আপনি একটু ওদের কাছ থেকে সাবধানে থাইকেন। সচিবালয়ের চারজন সচিব, এর বাইরে আরেকজন সচিব মর্যাদায় রয়েছে, এই মোট পাঁচজন এবং আপনার উপদেষ্টা পরিষদের কিছু লোক আপনাকে সঠিক রাস্তায় চলতে দেবে না। আপনার সারা জীবনের অর্জন কিন্তু এরা শেষ করে দেবে। আপনি দয়া করে এদের কাছ থেকে সাবধানে থাকবেন। আমরা আপনার সম্মান রক্ষা করে দেশটাকে সুন্দর করতে চাই। আপনি সফল হলে দেশটা ভালো হবে। আপনার সফলতা আমরা চাই। আপনার সফলতার ওপর নির্ভর করছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।’ গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।

বিএনপিকে হিংসা করছেন কার কথায়, প্রধান উপদেষ্টাকে ফারুক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, বিএনপিকে কার কথায় হিংসা করছেন? আমরা হিংসা করি না, হিংসার রাজনীতি বিএনপি করে না। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, যে সরকার (আওয়ামী লীগ) আপনাকে মামলার আসামি বানিয়েছে, আদালতে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে, সেই সরকারকে এখন সহ্য করছেন। কিন্তু বিএনপির বিরুদ্ধে হিংসা করছেন কেন? তিনি বলেন, আমরা হিংসা করি না, হিংসার রাজনীতি বিএনপি করে না। অথচ এখনো আমাদের আন্দোলনকে হিংসাত্মক আখ্যা দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, নোবেলজয়ী গ্রামীণ ব্যাংককে সংসদে হেয় করেছেন শেখ হাসিনা। আপনাকে অপমান করেছে সরকার। আর আপনি সেই সরকারের হয়ে এখন কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের দোসররা আপনার চারপাশে সক্রিয়, এদের বিষয়ে সতর্ক থাকুন। এসময় শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ফারুক বলেন, আপনি (শেখ হাসিনা) হিংসা করে খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছেন। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকের কাছে পর্যন্ত যেতে দেননি। অমানবিকতা আর প্রতিহিংসার এক জ্বলন্ত উদাহরণ আপনার সরকার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, টিউলিপ যদি নিজেকে বাংলাদেশি না বলেন, তবে আপনি কীভাবে তাকে নাগরিকত্ব, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জমি দিলেন? এসব কীভাবে সম্ভব হয়? অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী নবীন দলের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদার। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও দলের নেতাকর্মীরা।

ফ্যাসিবাদবিরোধী সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ার পথে প্রিন্স

রাশিয়ার মস্কোতে অনুষ্ঠিতব্য ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে মস্কোর পথে রওনা হয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে আছেন সিপিবির সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল। সিপিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আগামী ২২ থেকে ২৫ এপ্রিল ২০২৫ রাশিয়ার মস্কোতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী এবং রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মহানায়ক কমরেড লেনিনের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাশিয়ান ফেডারেশনের কমিউনিস্ট পার্টি এই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে। এ সম্মেলনে সারা দুনিয়ার শতাধিক দেশের কমিউনিস্ট, বাম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগদান করবেন বলে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, এ সম্মেলনে সিপিবি নেতারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সিপিবির অংশগ্রহণ এবং এ সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বক্তব্য দেবেন।এ ছাড়া নেতারা ঐতিহাসিক রেড স্কয়ারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নিহতের প্রতি ও কমরেড লেনিনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ইশরাকের

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র পারভেজ হত্যা মামলার প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত, তাদের সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ইতোমধ্যে কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেও, যদি এখনো কেউ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে থাকে, তাকেও অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। ইশরাক হোসেন বলেন, যদি প্রশাসনকে কোনোভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমরা ঢাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলো ঘেরাও করব। গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে হামলায় নিহত হন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। এদিন বিকেল ৪টার পর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। এ সময় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ছুরিকাঘাতে পারভেজ নিহত হন। নিহত পারভেজ ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম।

জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জাতীয় পার্টির মানববন্ধন

জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে দলটির অপর অংশের (রওশন) নেতাকর্মীরা। রোববার (২০ এপ্রিল) সেগুনবাগিচাস্থ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জাতীয় পার্টির এ অংশের নেতারা বলেন, জিএম কাদের দলীয় চেয়ারম্যানের পদ দখল করে মনোনয়ন বাণিজ্যসহ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রদেয় চাঁদার টাকা আত্মসাৎ এবং বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। এছাড়াও তিনি পদ বাণিজ্য করার দ্বারাও দল ধ্বংস করেছেন। নেতারা বলেন, শনিবার দলের বর্ধিত সভায়ও তার গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়। দুদক ইতোমধ্যে তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তাই আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও দুদকের প্রতি অবিলম্বে জি এম কাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। অন্যথায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইদ্রিস আলীসহ ঢাকা মহানগর ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা।

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের দাবি সিপিবি ও বাসদের

সংস্কারের নামে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্ব করার সঠিক হবে না। এতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেবে। সংস্কার ও নির্বাচনকে প্রতিপক্ষ ভাবার সুযোগ নেই। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের আয়োজন করা দরকার। যা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর বা তার আগেই করা সম্ভব বলে মনে করেন বিভিন্ন বাম দলের নেতারা। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে হোটেল সারিনায় বিএনপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিপিবি ও বাসদের সিনিয়র নেতারা। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালের বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘১৫ বছরের ক্ষোভ ৫ আগস্টে মানুষ প্রকাশ করেছে। সেখানে মানুষের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল ভোট দিতে পারে নাই- ১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে। মানুষ চায় গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার। এখন যারা সংস্কারের নামে নির্বাচন দেরি করিয়ে গণপরিষদ নির্বাচন বা অন্য যেগুলো আনছে, তারা অ্যান্টি ডেমোক্রেটিক ফোর্স। হাসিনাও অ্যান্টি ডেমোক্রেটিক ফোর্স, এরাও সেই জায়গাটাতে গিয়ে দেশটাকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। এটা দেশের জন্য মঙ্গল হবে না। এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য মঙ্গল হবে না। এটা চলতে থাকলে যারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেবে।’ সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘রাজনীতিতে আমরা একটা নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই। রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া, অনেকদিন ধরেই বন্ধ ছিল। সেটা ভেঙে ফেলা দরকার। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক ধারায় কীভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই কাজটি করা দরকার।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জোটগতভাবে অনেক আগে থেকেই বলে এসেছি, বাংলাদেশে জরুরিভাবে একটি নির্বাচিত সরকার দরকার। কারণ অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি ডিসেম্বর কেন? ডিসেম্বরের অনেক আগেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য অবাধ নির্বাচনের জন্য যা যা সংস্কার করা দরকার, সেটা করে নির্বাচন করা সম্ভব। আমাদের দলগুলো এবং বামপন্থিরা এটা অনেকদিন ধরেই বলে আসছে। বিএনপি সাধারণভাবে বলেছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। বরঞ্চ আমরা মনে করি, ডিসেম্বরের আগেই বাংলাদেশের নির্বাচন হওয়া সম্ভব। সেটা করার জন্য জরুরিভাবে আগানো দরকার। আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে যাওয়াটা দরকার বলে মনে করি।’ কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘যারা নির্বাচনের পরে সংস্কার করতে চায়, তারাই হচ্ছে আসল সংস্কারের পক্ষে। আর যারা নির্বাচন না করে সংস্কার করতে চায়, একটা অধ্যাদেশ জারি করার মাধ্যমে, সেটা বালুতে গাথুনির মতো। শক্ত ভিত্তির ওপর সংস্কার করতে হলে জনগণের অংশগ্রহণ লাগবে। জনগণের সম্মতি নিতে হবে। সেটা করতে হলে একটি নির্বাচন অপরিহার্য। তবে যেকোনও নির্বাচনের নামে প্রহসন আমরা গ্রহণ করবো না। প্রকৃত অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার, অবশ্যই নির্বাচনের আগেই করতে হবে। নির্বাচন করার মাধ্যমে সংস্কারের ভিত্তিকে শক্ত করে অগ্রসর হওয়াই সঠিক পথ। যারা সংস্কারের নামে এটাকে অস্বীকার করছে, তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’ বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে বিএনপির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন সিপিবি ও বাসদের নেতারা। গণতন্ত্র ছাড়া সংস্কার হয় না, গণতন্ত্রের পথ ধরে সংস্কার আসতে হবে। আমাদের আলোচনা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।’ বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলেল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং বাংলাদেশ দলের সমাজতান্ত্রিক দলের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের একটি অনানুষ্ঠানিক সভা হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তারা কীভাবে দেখছে, আমরা কীভাবে দেখছি, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে আমাদের দল বাসদ, সিপিবিসহ সংস্কার আমরাও চাই। আমাদের চাইতে সংস্কার কারা চায়? আমরা এই ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে চাই। আমরা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এখনকার যে নিয়ম আছে সেটা ভাঙতে চাই। কিন্তু সংস্কার এবং নির্বাচনকে প্রতিপক্ষ ভাবার কোনও কারণ নাই। উন্নয়ন আর গণতন্ত্র ফ্যাসিস্ট হাসিনা বানিয়েছিল‌ এখন সংস্কার এবং নির্বাচনকে একে অপরের প্রতিপক্ষ যেনো না বানানো হয়। নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই সংস্কারের কার্যক্রমগুলো কার্যকর করতে হবে। অধ্যাদেশ জারি করেও যদি সংস্কার করা হয়, সেটা নির্বাচিত পার্লামেন্টে অনুমোদিত করতে হবে। তা না হলে সেটার কোনও কার্যকারিতা থাকবে না।’ বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বৈঠকে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদনেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সিপিবি ও বাসদের এই বৈঠক নতুন উৎসাহ সৃষ্টি করেছে রাজনীতিতে।’ বিশেষ করে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত বলেও মনে করেন কোনও কোনও নেতা।

যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন, তারা কী ঘরে বসে আঙুল চুষবে?

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘সরকার একটি দল গঠন করেছে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে সংস্কার চালাচ্ছে। যেনতেনভাবে তাদের নির্বাচনে পাস করাবে। সেই নির্বাচন কী হাসিনার নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে? শেখ হাসিনা সব কিছু হাতে নিয়েও থাকতে পারলেন না, আপনারা কত দিন থাকতে পারবেন? যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন, তারা কী ঘরে বসে আঙুল চুষবে?’ রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলের বর্ধিত সভার দ্বিতীয় দিনে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্কার কমিশনের নেতৃত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের ৫০ শতাংশ মানুষকে বাদ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব করেছে, এটা কখনও বাস্তবায়ন হবে না। নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তারাই প্রয়োজন মতো সংস্কার করবেন।’ দেশ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া এই দেশের মঙ্গল হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে, গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। গ্রহণযোগ্যতা না পেলে দেশে বিনিয়োগ হবে না, কর্মসংস্থান হবে না, বেকারত্ব বাড়বে।’ সভায় বক্তব্য দেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।

কিছু বিষয় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, সমাধানে দরকার রাজনৈতিক ঐক্য: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমানে দেশে একটি অস্থিরতা চলছে। কিছু নির্ধারিত বিষয় অনির্ধারিত ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তা সমাধানে দরকার রাজনৈতিক ঐক্য। এর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব পাবো।’ রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আবদুল্লাহ প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যারা মানুষকে শুধু দিয়ে যান, রাজনীতিকে দিয়ে যান- তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। আজ তিনি আমাদের মধ্যে নেই। তিনি চলে গেলেও আমাদের জন্য রেখে গেছেন তার কাজগুলো। তা স্মরণ করলে আমরা সবাই উপকৃত হবো।’ ফখরুল বলেন, ‘আজকেই মনে হয়, তাকে আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিলে। কারণ জাতি একটি সন্ধিক্ষণ অবস্থায় আছে। যখন আমরা একটি অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে আছি, ফ্যাসিবাদী হাসিনাবিরোধী একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরিবর্তনের সময়গুলোই হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি সময়। জনমতকে সঠিক পথে প্রবাহিত করা অত্যন্ত জরুরি কাজ। আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন সেই মাপের একজন মানুষ। যিনি সবচেয়ে প্রতিকূল পরিবেশেও আন্দোলন তৈরি করতে পারতেন। মানুষকে একত্রিত করার ক্ষমতা তার ছিলে। সেজন্য আজ বারবার তার কথা মনে পড়ছে। বিএনপি নিয়ে শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ও তারেক রহমান যে স্বপ্ন দেখছেন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অবশ্যই আব্দুল্লাহ আল নোমানের শূন্যতা অনুভব করি।’ ফখরুল বলেন, ‘প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের একজন ছাত্রনেতা জাহিদুল পারভেজকে হত্যা করা হয়েছে। এই সময়ে যারা তার মতো একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, আমি বিশ্বাস করি, তারা দেশের পরিবর্তনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা কখনই বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ নন।’ মির্জা ফখরুল আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, গণতন্ত্র বা নির্বাচন নিয়ে কোনও ষড়যন্ত্র হলে বিএনপি আবারও রাজপথে আন্দোলন করবে।’ ‘রাজনীতি এবং শ্রমিক আন্দোলন এক সঙ্গে করেছেন নোমান। তার সঙ্গে পরিচয়ের প্রথম দিন থেকে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। কারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল তার প্রবল। তিনি শ্রমজীবী মানুষকে খুবই ভালোবাসতেন। এ জন্য শ্রমিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন শ্রদ্ধার আসনে। চট্টগ্রামে তিনি বহু নেতা তৈরি করেছেন। মৃত্যুর দিনেও চট্টগ্রামে একটি জনসভায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার আদর্শের শ্রমিক দলকে গড়ে তুলতে পারলে তার প্রতি আরও শ্রদ্ধা জানানো হবে।’ ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন শহীদ জিয়া আবদুল্লাহ আল নোমান তা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন।’

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির প‌ক্ষে বিএন‌পি

ক্ষমতার ভারসাম্যের জন‌্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির প‌ক্ষে বিএনপি। এর জন‌্য সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদের পর আরেকটি অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হ‌বে পরবর্তী সময়ে সংস‌দে আলোচনার মাধ‌্যমে। রাষ্ট্রপতি সংস‌দের উভয়ক‌ক্ষের সদস‌্যদের ভো‌টেই নির্বাচিত হ‌বেন। সংস্কার ক‌মিশ‌নের সুপা‌রিশ অনুযায়ী ‘ইলেক্টোরাল কলেজে’র মাধ্যমে রাষ্ট্রপ‌তি নির্বাচ‌নে একমত নয় বিএন‌পি। রোববার (২০ এপ্রিল )বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য ক‌মিশ‌নের স‌ঙ্গে সংলা‌পের পর এসব কথা ব‌লেন বিএন‌পির স্থায়ী ক‌মি‌টির সদস‌্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। আগামী ২২ এপ্রিল আবার বিএন‌পির স‌ঙ্গে সংলাপ হ‌বে। এর আগে দুপু‌রে সংলা‌পের বির‌তি‌তে সালাহউদ্দিন আহমেদ ব‌লে‌ন, ‘টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর পদে দায়িত্বপালন করে একবার বিরতি দিয়ে আবারও দায়িত্বে আসতে পারবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এমন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।’ তিনি বলেন, ‘আমা‌দের প্রস্তাব ‘নট মোর টু কনজিকিউটিভ টার্ম’ অর্থাৎ পরপর দু’বারের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে যদি দু’বারের পর একবার বিরতি হয় তার পরবর্তী সময়ে যদি জনগণ নির্বাচন করে সেই পার্টিকে মেজরিটি পার্টি হিসেবে সেই পার্টি যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেই একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতেও পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে কেন ধরে নিচ্ছেন, একই লিডার বা একই ব্যক্তি বারবার হবেন। আমরা তো এখানে সুযোগটা রাখতে চাই।’ একই ব্যক্তি সরকার প্রধান, দলের প্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না- ঐকমত্য কমিশন এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত নয় বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি উন্মুক্ত রাখতে প্রস্তাব দিয়েছি।’ সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একই ব্যক্তি সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবে না- এমন চর্চা আমরা দেখি না। যুক্তরাজ্যেও আমরা দেখি, পার্টি প্রধানকে সরকারপ্রধান। এটি গণতান্ত্রিক চর্চা। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন হয় এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রচলন করা যায়, তাহলে সেই ভোটে যারা ক্ষমতায় আসবে, মনে করতে হবে জনগণ তাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছে।’ বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছে জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ বা বহুত্ববাদ কোনোটাই নেই। তবে, কমিশন তাদের প্রস্তাবে- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে থাকা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের কথা যুক্ত করতে বলেছেন। আমরা সেখানে একমত হয়েছি।’ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সংবিধান জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট প্রাপ্তির বিষয়ে একমত বিএনপি। তবে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হয় রাষ্ট্রকে। মৌলিক অধিকারের বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়টিও দেখতে হবে। তাই আমরা বলেছি, সংবিধানের অনেকগুলো বিষয় যুক্ত না করে, যা রাষ্ট্র বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে তাই করতে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি। কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছি। গণতন্ত্রে মত-দ্বিমত থাকাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না। যেখানে এমন কিছু করা হয়, যাতে সবাই একমত হতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সংগত ও উত্তম তেমন কিছুই হওয়া উচিত।’

দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ জরুরি, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে: নুরুল হক

দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ দাবি জানান। এ সময় তিনি ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবি করেন। নুরুল হক বলেন, ‘এই সরকারে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আছেন, তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি নেওয়া হবে।’ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’ এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের পর ইসিকে নির্বাচনী কাজ শুরুর আহ্বান এনসিপির

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ না আসা পর্যন্ত নির্বাচন বিষয়ে কোনো প্রস্তুতি বা কাজ কমিশনের (ইসি) শুরু করা উচিত নয় বলে জানিয়েছে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে নির্বাচন ভবনে সিইসির কক্ষে আয়োজিত সভা শেষে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ মন্তব্য করেন।তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট কাঠামো রূপান্তরে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। এ থেকে সরে আসতে আলোচনা হয়েছে। অতীতের নির্বাচনের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন সে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’‘ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ না আসা পর্যন্ত ইসির নির্বাচনী কোনো কাজ করা উচিত নয়।’বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে, প্রার্থীকে সরাসরি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার নিয়ম করার পাশাপাশি হলফনামায় ভুল তথ্য দিয়ে নির্বাচিত হলে ওই ব্যক্তির সংসদ সদস্যপদ বাতিলেরও দাবি জানায় এনসিপি। এছাড়া আচরণবিধি এবং নির্বাচনি ব্যয়ে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমরা কমিশনকে বলেছি নতুন বাংলাদেশে ভোটের মাঠে ইঞ্জিনিয়ারিং দেখতে চায় না এনসিপি।’বৈঠকে সরকারের সিদ্ধান্তের আগেই ইসি থেকে রোডম্যাপ ঘোষণা আসতে পারে, এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে দলটি।এছাড়া নির্বাচন কমিশনকে ভোটের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সার্টিফিকেশন দেয়ারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।বৈঠকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের জন্য এনসিপি যে তিন মাস সময় চেয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে দলের মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছে ইসি। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হবে।’ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ নানা বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন।

৩ মে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের ডাক

আগামী ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যা‌নে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) দলটির কার্যনির্বাহী পরিষদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাসমাবেশের কথা জানান দলটির মহাস‌চিব সা‌জেদুর রহমান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ্ মুহিদুল্লাহ বাবুনগরী। বৈঠকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ফ্যা‌সিবা‌দী আম‌লে হেফাজ‌তের বিরু‌দ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ২০১৩ সা‌লে শাপলা চত্বরে গণগত্যার বিচার করতে হবে। নারী সংষ্কার ক‌মিশ‌নের ধর্মীয় বিধান, ইসলামী উত্তরা‌ধিকার আইন ও পা‌রিবা‌রিক বৈষম্য প্রস্তাব ও ক‌মিশন বা‌তিল করতে হবে। তা না হলে ৩ মে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ এ ছাড়া ভারতীয় ওয়াকফ আইন ও ফি‌লিস্তান‌রে গণহত্যার প্র‌তিবাদে আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থে‌কে ১ সপ্তাহ গণসং‌যোগ ও আগামী ২৫ এপ্রিল বাদ জুমআ প্রতি জেলা উপ‌জেলায় বি‌ক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দেয় দলটি।

নারী অধিকার সংস্কার কমিশন বাতিল চায় হেফাজতে ইসলাম

নারী অধিকার সংস্কার কমিশন বাতিল চায় হেফাজতে ইসলাম। এছাড়া ৫ মে ঘটা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার দাবি দলটির। রোববার (২০ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তারা। এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এ সভা শুরু হয়। সভা শেষে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হল- ফ্যাসিবাদী আমলে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ বিভিন্ন সময় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং হেফাজত ইসলামের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় কিছু বিতর্কিত বিষয় স্থান পেয়েছে বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম। বিশেষ করে বহুত্ববাদের প্রস্তাবনাকে হেফাজত প্রত্যাখ্যান করছে। এই প্রস্তাবনা বাতিল করে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে; নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিল করতে হবে; সেই সঙ্গে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, বিশেষ করে দেশটির পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে ওয়াকফ আইন সংশোধনী পাস হয়েছে, সেটি বাতিল করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানোর জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম; এ ছাড়া ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদ এবং সেই গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান জানান, তাঁদের বিশেষ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ৩ মে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত এ সমাবেশ হবে। সেখানে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘মহাসমাবেশ সফল করতে আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী সপ্তাহের সোমবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশব্যাপী গণসংযোগ করা হবে।’

নারী ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল দাবি হেফাজতে ইসলামের

সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদ যুক্ত করার বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এর পরিবর্তে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থায় থাকা ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস’ এই মূলনীতির প্রত্যাবর্তন চেয়েছে দলটি। একই সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের অভিন্ন পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন প্রণয়নের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ইসলামী এই সংগঠনটি। দ্রুত এই প্রস্তাবগুলোর বাতিল চেয়েছে তারা । দাবি আদায়ে আগামী ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘৩ মে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ্ মুহিদুল্লাহ বাবুনগরী। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক তাদের দাবিগুলো তুলে ধরনে। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আমলে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের গণগত্যা এবং ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর বাংলাদেশ আগমনের বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনে হামলা ও হত্যার বিচার করতে হবে।সংবিদান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত বহুত্ববাদক প্রত্যাখান করছে হেফাজতে ইসলাম। এই প্রস্তাব বাতিল করে সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বা’- এই মূলনীতি পুনর্বহাল করতে হবে।’ মামুনুল হক আরও বলেন, ‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ধর্মী বিধানের বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামী পারিবারিক আইনকে বাংলাদেশে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম এই প্রস্তাবনাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছে। ‘ইসলাম কটাক্ষকারী’ এই প্রস্তাবনা, প্রস্তাবকারী কমিশন (নারী সংস্কার কমিশন) এবং প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রস্তাব বাস্তবায়নের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।’ ৩ মের মধ্যে সংস্কার কমিশনের বিতর্কিত প্রস্তাবগুলো বাতিল করা না হলে মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান যুগ্ম-মহাসচিব। তিনি আরও বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের আরও দাবির মধ্যে রয়েছে- ভারতীয় ওয়াকফ আইন সংশোধন ও এটিকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের ওপর হামলা বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গণহত্যা বন্ধ করে ফিলিস্তিন দখলদার মুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।’ মহাসমাবেশ সফল করতে আগামী মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) থেকে ১ সপ্তাহ গণসংযোগ ও আগামী ২৫ এপ্রিল বাদ জুমা প্রতি জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দলটি। উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব প্রতিবেদন আকারে জমা দেয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। বর্তমান সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে বলা হয়েছে- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এগুলোর পরিবর্তে নতুন মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র'র কথা সুপারিশ করা হয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। হেফজতের মতো বিএনপিও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে চায়। যেখানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নেই। ছিল ‘আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস’। এদিকে শনিবার (১৯ এপ্রিল) নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব জমা দেয়। এতে অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অধ্যাদেশ জারি করার সুপারিশ করা হয়েছে। যার বিরোধীতা করেঝে হেফাজতে ইসলাম।

নির্বাচন বিলম্বকারীদের রুখে দেওয়ার শক্তি আমাদের আছে : ফারুক

নির্বাচন বিলম্বকারীদের রুখের দেওয়ার শক্তি আমাদের আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক। রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্টার সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফারুক বলেন, মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন বিএনপিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। তারেক রহমানকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পারে নাই। শেখ হাসিনা আমাদের বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাগারে বন্দি করে কষ্ট দিয়েছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষের ৭৫ শতাংশ মানুষ কষ্ট সহ্য করেছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ভালো আছেন, তারেক রহমান ভালো আছেন। আমাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শক্তি সঞ্চয় করছে। যারা বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়, সেই নির্বাচন বিলম্বকারীদের রুখে দেওয়ার শক্তি আমাদের আছে। কিন্তু আমরা চাই না ডক্টর ইউনূসের বিরুদ্ধে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করে ফ্যাসিবাদের আরও সুযোগ করে দেই। সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য কিছু নাটেরগুরু এখনো বসে আছে। তাদের হাতকে আরো শক্তিশালী করার দরকার নেই। বিরোধী দলের সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, ফেব্রুয়ারি, জুলাই যে মাসেই নির্বাচন দেন একটা রোডম্যাপ দেন। তাহলে তো নির্বাচন নিয়ে আর আলোচনা হয় না।

ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধীর ছাত্ররা দখলদারিত্ব করে বেড়াচ্ছে : ছাত্রদল সভাপতি

রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের পাশাপাশি, নতুন নামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পুরাতন ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে তীব্র নিন্দা জানান ছাত্রদল সভাপতি। আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। রাকিব বলেন, বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ছাত্রদলের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছে।তারা রক্ষিবাহিনীর মতো দখলদারি করে বেড়াচ্ছে। জাহিদুল ইসলাম পারভেজের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে বনানী থানা কমিটির সুবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজীর উপস্থিতি প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি নিরপরাধ পারভেজ হত্যার বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি ছাত্রদের নিরাপত্তা, একপাক্ষিক আচরণ ছেড়ে ন্যায্যতার দাবি করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিএনপি ‘সিরিয়াসলি’ সংস্কারে সহযোগিতা করছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগে বিএনপি ‘সিরিয়াসলি’ সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ। আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে, আন্তরিকতা সঙ্গে এবং সিরিয়াসলি সংস্কার কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতায় আছি।’ গত বৃহস্পতিবারে মুলতবি হওয়া বৈঠক আজ রোববার সকাল ১১টায় আবার শুরু হয়। বৃহস্পতিবারে দিনব্যাপী বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও বিএনপি সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে। সেদিন সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় আজ আবার বৈঠক চলছে। আজকের বৈঠকে নির্বাচন, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনসহ সব বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আজকে পাঁচ কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা সমাপ্ত করা যাবে। এখন আমরা সংবিধানের যে পর্যায় থেকে আলোচনা শেষ করেছিলাম, ওই পর্যায় থেকে আলোচনা শুরু করব। এরপর বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ বাকি দুটি কমিশনের ওপর আলোচনা শেষ করে, আশা করছি বিকেলের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ এর আগে বৃহস্পতিবার সংলাপের বিষয়ে বিএনপির দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়গুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জানানো হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিটে জবাব চেয়ে বিভ্রান্ত-মিসলিড করা হয়েছে: বিএনপিসংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিটে জবাব চেয়ে বিভ্রান্ত-মিসলিড করা হয়েছে: বিএনপি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে দলটির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও আছেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা: জিএম কাদের

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সংস্কারের ‘প্রয়োজন নেই’ মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কারই করতে চাক, তা নির্বাচিত সংসদে পাস করতে হবে। “দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে এই সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনদিনই কার্যকর হবে না। সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কতবড় গর্তে পড়বে তা তারা বুঝতে পারছে না।” শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় কথা বলছিলেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, “একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে সকল সমস্যা সমাধানের প্রথম স্টেপ। যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।” নির্বাচনের সময় সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, সেই নিশ্চয়তা চেয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও আমাদের আপত্তি নেই। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপিরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন।” বর্তমান সরকার কী ভূমিকা নেবে তাও স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, “একতরফা নির্বাচন করে কারোরই লাভ হবে না। একতরফা নির্বাচন হলে আবারো গণ্ডগোল হবে, এর একটা স্থায়ী সমাধান দরকার।” কোনো কোনো দল আগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি করলেও, এ বিষয়ে একমত নন আওয়ামী লীগের এক সময়ের জোটসঙ্গী জাপার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাঁধা দিচ্ছে না। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। “এই সরকার বৈধ না, আবার অবৈধও না। কারণ, আমরা মেনে নিয়েছি তাই মাঝামাঝি হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকারকেই বৈধ সরকার বলা হয়। এই সরকার নির্বাচিত নয়, কিন্তু হাই কোর্ট এই সরকারকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা মেনে নিয়েছি। এই সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে।” অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়র করে সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, “সামনের দিকে মহাসংকট আসবে, পয়সা থাকবে না, বিদেশ থেকে মালামাল কিনতে হবে, আমাদের চাল পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।” অন্যদের মধ্যে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যৌথসভায় বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। এ সময় দলের শীর্ষ নেতারারাসহ বিভাগ, জেলা, মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।