ঐকমত্য কমিশনের কাছে পক্ষপাতমূলক আচরণ আশা করি না: সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘আমরা (ঐকমত্য কমিশনের কাছে) পক্ষপাতমূলক আচরণ আশা করি না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তাদের আচরণ যেন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয় এবং দেশের মানুষ তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে আশ্বস্ত হতে পারে। আমরা ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের কিছু পদক্ষেপের সঙ্গে হতাশা প্রকাশ করছি।’’

বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল’ শীর্ষক সেমিনারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘এতদিন আমরা ভাবতাম, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু গতকাল তারা যে সুপারিশ সরকারকে দিয়েছে, সেখানে একজন স্বাক্ষরকারী প্রধান উপদেষ্টা এবং কমিশনের সভাপতি রয়েছেন। এটি একপক্ষে সরকারের এন্ডর্সমেন্ট হিসেবেও ধরা যায়। কিন্তু রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সময় মনে হয়েছে, তারা সরকার এবং আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে একপক্ষের মতো কাজ করছে, আর আমি বিপক্ষে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা জাতির পক্ষে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। তবে কিছু দলের প্রস্তাব এবং কমিশনের নিজস্ব চিন্তাভাবনা যেন জাতির ওপর জোর করে চাপানো হচ্ছে; এটা অস্বস্তিকর।’’

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘‘ঐকমত্য কমিশনে যেভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে এবং গত ১৭ অক্টোবর পার্লামেন্টের সাউথ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত দলিলটি সেখানে নেই। সেখানে শুধু কমিশনের প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ আছে। ঐকমত্য কেমনভাবে হয়েছে, নোট অব ডিসেন্ট কোথায় কোথায় আছে; এসবের কোনও উল্লেখ নেই।’’

গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জুলাইতে জাতীয় সনদ যেভাবে প্রণীত হয়েছে, সেই একটি প্রশ্নে গণভোট হতে পারে, এবং এটি একই দিনে করা সম্ভব। আমরা এই প্রস্তাব দিয়েছিলাম যাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে। প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে আসবে এবং একই দিনে একই খরচে ভোট আয়োজন করা যাবে ছোট্ট ব্যালটের মাধ্যমে। তখন এই প্রস্তাবের সঙ্গে দুই-একটি দল ছাড়া বাকিরা একমত হয়েছিল।’’

সালাহউদ্দিন উল্লেখ করেন, ‘‘গতকাল যে সুপারিশ করা হয়েছে, তাতে শুধু ঐকমত্য কমিশন এবং কয়েকটি দলের আগের প্রস্তাবগুলোই প্রতিফলিত হয়েছে।’’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রস্তাবগুলো জাতিকে বিভক্ত করবে, কোনো ঐকমত্য তৈরি করবে না। এর ভিত্তিতে তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না। নির্বাচন কমিশন থেকে আসা কিছু অধ্যায়ও লক্ষ্য করেছি, যেখানে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত একটি অপ্রকাশিত প্রভিশন অন্তর্ভুক্ত করে অর্ডিন্যান্স পাস হয়েছে।’’

সেমিনারে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।