তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে চূড়ান্ত শুনানি মঙ্গলবার
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:২১ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চের কার্যতালিকায় এদিন মামলাটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
এটি এমন এক সময়ে আসছে যখন দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো পুনরায় আলোচনায় এসেছে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেয় আদালত। এরপর পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক: সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান আপিল করেন। একইভাবে পৃথকভাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও আপিল করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এরপর ১৯৯৮ সালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দিয়ে সংশোধনীটিকে বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করেন।
এই রায়ের পর আপিলের অনুমতি মিললে ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারী আপিল করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন।
এই রায়ের পর, একই বছরের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়। গেজেট প্রকাশ হয় ৩ জুলাই।
পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে কার্যকর হওয়া ওই রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য ২০১১ সালের ৫ আগস্ট একটি আবেদন করেন ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ নাগরিক। পরবর্তীকালে ২০২3 সালের ১৬ অক্টোবর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং একই বছরের ২৩ অক্টোবর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
সবশেষে, নওগাঁর রানীনগরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন গত বছর।
সব মিলিয়ে বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রশ্নে বিচারিক প্রক্রিয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার, যা রাজনীতিসহ দেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।