এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা, ভাতা বাড়ানোর দাবি এনসিপির
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:১৯ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে দলটি।
এনসিপির ভাষায়, সরকারের দায়িত্বহীনতা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদাসীন আচরণ শিক্ষকদের ক্লাসরুম ছেড়ে আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য করেছে—যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক সংকেত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অবস্থান জানায় দলটি।
দলটির দাবি, দীর্ঘদিন ধরে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে আসছে। এনসিপি জানায়, সরকারের কালক্ষেপণ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই শিক্ষকরা বারবার রাজপথে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাতে গিয়ে তাদের ওপর পুলিশের হামলা হয়েছে—যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
এনসিপির ভাষায়, “একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি উত্থাপন করবে, আর সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সমাধান দেবে—এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকার শিক্ষকদের কণ্ঠরোধে প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করছে।”
দলটি আরও জানায়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি শুধু অর্থনৈতিক নয়; এটি শিক্ষক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও শিক্ষা ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়নের প্রশ্ন। সরকার যদি এই বাস্তবতা উপেক্ষা করে, তবে তা শিক্ষা খাতের প্রতি গভীর অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে।
এনসিপির শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, “সরকার শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করছে, অথচ রাষ্ট্রের সব উন্নয়নের মূলভিত্তি গড়ে দেন এই শিক্ষকরা। তাদের প্রতি অবহেলা মানে জাতির ভবিষ্যৎকে অবমাননা করা।”
গত ১২ অক্টোবর এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখে। দলটির ঘোষণা—শিক্ষকদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে।
এনসিপির মতে, স্বাধীনতার পর থেকেই শিক্ষা খাতকে অবহেলার শিকার হতে হয়েছে, আর শিক্ষকদের মর্যাদা ক্রমাগত খর্ব হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠনের যে প্রত্যাশা ছিল, সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বরং পুরোনো আমলাতান্ত্রিক চিন্তাধারাই এখনো বহাল রয়েছে।
দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, নতুন বাংলাদেশের ইশতেহারে ২৪ দফা অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা কাঠামোর পুনর্গঠন এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র ও মর্যাদাপূর্ণ বেতন কাঠামো প্রণয়ন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “জাতীয় নাগরিক পার্টি শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবে, কারণ শিক্ষা ও শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষা করাই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি।”