চাপ দিয়ে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে: নুর
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:৪৩ এম, ২৬ আগস্ট ২০২৫
.png)
মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী ও তার ছেলে জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেফতারকে একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
সোমবার গভীর রাতে নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে নুর অভিযোগ করেন, কিছু ব্যক্তি যোগসাজশের মাধ্যমে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের গ্রেফতার করিয়েছে।
নুর বলেন, জনকণ্ঠ’ দখলের ন্যায় ‘মাই টিভি’ দখলেও সুপরিকল্পিতভাবে কিছু ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেফতার করিয়েছে। এতদিন তারা নগদ ৫ কোটি কিংবা শেয়ার লিখে নেয়ার দেনদরবার করেছে, সমঝোতায় মিলেনি, তাই ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল মবের মাধ্যমে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে গ্রেফতার করিয়েছে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর প্রশ্ন তোলেন, হঠাৎ এক বছর পর কীভাবে যাত্রাবাড়ী থানার ছাত্র হত্যা মামলায় আফ্রিদি ও তার বাবাকে আসামি করে গ্রেফতার করা হলো। তিনি বলেন, তৌহিদ আফ্রিদি কিংবা তার বাবা ‘ছাত্র হত্যা’ করেছে এই মামলা প্রমাণ করতে পারবে? তাহলে কেন এই নাটক?
তার দাবি, আফ্রিদি যদি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করে থাকে তবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মামলা করা যেত। কিন্তু ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেফতার প্রমাণ করে যে প্রশাসন ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল মব-এর চাপে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
নুর আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এতে সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ বাড়বে, আর শেষ পর্যন্ত প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিছিয়ে যাবে। তার মতে, এভাবে প্রশাসন ফ্যাসিবাদী ধারা ফেরার পথ সুগম করছে।
তিনি আরও বলেন, জনকণ্ঠ দখলের ন্যায় মাই টিভি’ দখলেও যারা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এগুলো করাচ্ছে তাদের মুখোস উন্মোচন করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
রিমান্ড ও মামলার অগ্রগতি
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় সোমবার বিকেলে আদালত তৌহিদ আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আফ্রিদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাই টিভির পরিচালক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কার্যক্রম চালান।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, তার কর্মকাণ্ডে প্রভাবিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে বাবু নিহত হন। মামলার রহস্য উদঘাটন ও অজ্ঞাত আসামিদের পরিচয় শনাক্তে সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান।
গত ২৪ আগস্ট রাতে বরিশাল থেকে আফ্রিদিকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে জুলাই আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মো. আসাদুল হক বাবু। তার বাবা জয়নাল আবেদীন ওই বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এতে মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।