শাপলা পেতে আইনগত সমস্যা দেখি না: নাহিদ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:২৩ পিএম, ২২ জুন ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শাপলা পেতে আইনে কোনো ধরনের সমস্যা নাই আমরা দেখেছি। তাই আমরা আবেদন করেছি। কোনো ধরনের আইনগত জটিলতা আমরা দেখি না।
রোববার (২২ জুন) নিবন্ধন আবেদনের সকল কাগজপত্র জমা দেওয়া শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিনসহ একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আজকে ইসিতে দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য সকল শর্ত পূরণ করে কাগজপত্র দাখিল করেছি। গঠনতন্ত্রসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। আমরা তিনটি মার্কার জন্য আবেদন করেছি শাপলা, কলম ও মোবাইল। আমরা আশাবাদী শাপলা মার্কা পাব এবং তা নিয়ে জনগণের মাঝে কাজ করব।
জাতীয় প্রতীক আপনারা মার্কা হিসেবে চাইলেন; এটা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের যেসব আইন রয়েছে; সেই আইনগুলো আমরা পর্যালোচনা করেছি। আইনে কোনো ধরনের সমস্যা নাই। জাতীয় ফল কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে আছে। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখিনি বলে আমরা এই প্রতীকে আবেদন করেছি। জাতীয় প্রতীক কিন্তু কেবল শাপলা নয়, শাপলা, ধানের শীষ, তারকা এগুলো মিলে জাতীয় প্রতীক। সেক্ষেত্রে তারকা ও ধানের শীষ দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা আমরা দেখি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা শাপলাকে মার্কা হিসেবে নিয়েছি। আমাদের গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ, আমাদের খেটে খাওয়া মানুষ সকলের কাছে শাপলা পরিচিত। সেই জায়গা থেকে এনসিপি মনে করেছে যে আমাদের দল যেহেতু সাধারণ মানুষের দল এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে এবং রাজনীতি করবে সেই জায়গা থেকে শাপলাকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে আমরা আবেদন করেছি।
সিইসি’র সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সকল শর্ত পূরণ করে আবেদন করেছি। আইন অনুযায়ী আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে কথা হয়েছে। এনসিপি এর আগে প্রবাসীদের জন্য যে প্রস্তাব দিয়েছে তার ওপর জোরালো দাবি জানিয়েছি। যাতে প্রবাসীদের ভোটাধিকার যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে প্রথম প্রায়োরিটি সংস্কার আর সংস্কারের ওপর নির্ভর করে আমরা নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
এর আগে বিকেলে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন,পার্লামেন্ট এখন খালি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন অনুযায়ী জাতীয় সংসদের ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসন পেয়ে এনসিপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে ব্যালট বিপ্লব সম্পন্ন করবে এনসিপি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সারাদেশে কথা বলেছি। অনেক জায়গায় অফিস নিতে গিয়েছি বাধা দেওয়া হয়েছে। কমিটি গঠন করতে গিয়েছি ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এই হলো দেশের রাজনৈতিক কালচার। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আজ এই অবস্থায় এসেছি। ৫ তারিখের গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে মানুষের জয় হয়েছিল, সেভাবে আগামী নির্বাচনে ভোট ব্যাংকে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো দেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে। এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন করা হবে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা দ্বিতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি কলম, তৃতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি মোবাইল। তবে আমরা প্রত্যাশা করব, আমাদের যাতে শাপলাই দেওয়া হয়। আমরা পাঁচ লাখ মানুষের ডাটা এনেছি। অধিকাংশ মানুষ এনসিপিকে চায় শাপলা প্রতীকে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ১০০টি উপজেলা, ২৫টি জেলা কমিটির শর্ত পূরণ করেছি। ট্রাকে করে আমরা ডকুমেন্ট এনেছি। দিনরাত পরিশ্রম করে সকল শর্ত পূরণ করেছি। আশাকরি অতিদ্রুত নিবন্ধন পাব এবং আগামী সরকার গঠন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
ইসি পুনর্গঠন না হলে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ চায় পুনর্গঠন। পুনর্গঠন না হওয়ার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এটা জনগণের দাবি, ইসি পুনর্গঠন হতেই হবে। পুনর্গঠন হবে। আমরা বিকল্প বি অপশনে যাচ্ছি না।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ইসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ১৫ বছরে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। ইসির যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, তেমনি নিয়মনীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই। আমরা এখনও বলছি ইসি পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।