
স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার পাশাপাশি নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছেন—সংবাদ সম্মেলনে এসে এমনটাই জানালেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে দায়িত্ব পালনে তিনি সবসময়ই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চেষ্টা করেছেন। তার ভাষায়, “কতটা পেরেছি, সেটা দেশবাসী বলবে।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি নিশ্চিত করেন যে তিনি মাঠে নামবেন। তবে কোন দল বা কোন আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—এটা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, “কোনও দলে যোগ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ধরে নেয়া ঠিক নয় যে, এনসিপিতেই যোগ দেবো। কয়েক দিনের মধ্যেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আইনগত বাধা না থাকলেও নৈতিকতার বিষয় রয়েছে। বলেন, “যা নিজে বলেছি, সেটির চর্চা করবো।” পদত্যাগ ইস্যুতে তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে, তাই অপেক্ষা করতে হবে।
আগামীকালের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেবেন কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, তাকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে, আর বাকি তথ্য প্রেস উইং জানাবে।
ধানমণ্ডি থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামার গুঞ্জন নিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের অনুমান ছড়িয়েছে। উল্লেখ করেন, ধানমণ্ডি আসনে বিএনপি ইতোমধ্যে প্রার্থী দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কিছু আচরণ নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, “আমার ক্ষেত্রে কেউ কেউ বাক স্বাধীনতার অপপ্রয়োগ করেছে। বাক স্বাধীনতা থাকবে, তবে সেটির সঠিক ব্যবহার সবাই নিশ্চিত করবে।”
তার ব্যক্তিগত এপিএস মোয়াজ্জেমকে ঘিরে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়েও তিনি কথা বলেন। জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ করেছেন এবং বর্তমানে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে দুদকের আওতায় রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত আসিফ মাহমুদ প্রথমে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরে শ্রম মন্ত্রণালয় তার দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ে এবং তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে মনোনীত হন।
এ মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়া পরিষদে মোট উপদেষ্টা রয়েছেন ২২ জন। তিনি পদত্যাগ করলে সংখ্যা দাঁড়াবে ২১ এ। প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বে আছেন, আর ১০ জন ছাড়া বাকি উপদেষ্টারা একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পরিচালনা করছেন।