
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব শওকত মাহমুদকে রমনা মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এই রিমান্ড শুনানি আজ, বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর), ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অনুষ্ঠিত হবে। রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জিন্নাত আলী জানিয়েছেন, শওকত মাহমুদ আদালতে উপস্থিত থাকবেন।
শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয় গত রোববার। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশ করে অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছেন এমন অভিযোগে আটক হন। গ্রেপ্তারকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মালিবাগ থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পরদিন, সোমবার, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক আখতার মোর্শেদ তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন। তবে সেইদিন মূলনথি অনুপস্থিত থাকায় শুনানি হয়নি। এরপর বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য হয় এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শওকত মাহমুদ ও অজ্ঞাত আরও আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশ করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন। তারা বর্তমান সরকার উৎখাতের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন সভা এবং পরামর্শ করেছেন।
আবেদনটিতে আরও বলা হয়, শওকত মাহমুদ প্রভাবশালী একটি দেশের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গের চেষ্টা করছেন। কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে তিনি গোপন বৈঠক করেছেন এবং বিষয়টি উদঘাটনের জন্য তার জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়েছিল ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকার মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়া এলাকায়। তিনি প্রাডো গাড়িতে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় এবং তার কাছ থেকে দুটি ‘আইনফোন’ জব্দ করা হয়। প্রাথমিক ফোন বিশ্লেষণে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এনায়েত করিম জানান, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক এজেন্ট এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতেন।
রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক আজিজুল হাকিম। মামলার সঙ্গে যুক্ত সহযোগীরা হলো এসএম গোলাম মোস্তফা আজাদ, জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক মো. আজহার আলী সরকার এবং যুব সংহতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রিফাতুল ইসলাম পাভেল। তারা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।