
জাতীয় রাজনীতির দৃষ্টি আজ কেন্দ্রীভূত আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে, যেখানে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ ঘোষণা দেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। ভাষণটি আগের দিন বিকেলে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার রেকর্ড করেছে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কমিশনের জরুরি বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী দুপুরে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে তফসিল এবং সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন সিইসি ও কমিশনাররা। আখতার আহমেদের ভাষ্যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজনকে সুষ্ঠু ও অর্থবহ করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ জানিয়েছেন, ঘোষিত তফসিলে ভোটের দিনসহ সব বিস্তারিত সময়সূচি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাঁর মতে, ভোটগ্রহণ ৮ বা ১২ ফেব্রুয়ারি আয়োজন করা হতে পারে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকেই সিইসির ভাষণ রেকর্ড ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎকে ঘিরে নির্বাচন ভবন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সকাল ১১টায় সিইসি নাসির উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার বৈঠকে বসেন। সেখান থেকে বেরিয়ে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তারা বঙ্গভবনে পৌঁছান। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে অংশ নেন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ। রাষ্ট্রপতির পাশে ছিলেন তাঁর দপ্তরের সচিব খান মো. নূরুল আমীন এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী।
দুপুর ২টার দিকে বৈঠক শেষে কমিশন সদস্যরা বঙ্গভবন ত্যাগ করেন, যদিও বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সঙ্গে তারা কথা বলেননি। সকাল থেকে বঙ্গভবনের গেটের সামনে বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী অবস্থান করছিলেন সাক্ষাতের খবর সংগ্রহের জন্য।
বঙ্গভবন থেকে ফিরে কমিশন আবার বৈঠকে বসে তফসিল ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করে। বিকেল ৪টায় সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়। পরে কয়েকজন কমিশনার সাংবাদিকদের তফসিল ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানান। আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। তাঁর ভাষ্যে, রাষ্ট্রপতি ইসির কাজের অগ্রগতি প্রশংসা করে বলেছেন, “সুষ্ঠু, সুন্দর ও অর্থবহ নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ সহায়তা দেবেন।”
আখতার আহমেদ আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ও সদস্যসংখ্যা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের পরিকল্পনা, ব্যালট পেপারের রং ও নকশা, পোস্টাল ব্যালট পৌঁছানোর পদ্ধতিসহ বিভিন্ন বিষয় রাষ্ট্রপতিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর অনুমোদনহীন সমাবেশ বন্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার ডিএমপির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে কোনো অবৈধ কর্মসূচির বিরুদ্ধে দৃঢ় ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্দেশনা উপেক্ষা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয় এবং ডিএমপি সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে।